মিলানের ৬ সেকেন্ডের গোল ও ফুটবলের দ্রুততম গোলের গল্প
মাত্র বাঁশি বাজিয়েছেন রেফারি, হাত থেকে স্টপওয়াচটা তখনও পকেটে যাব যাব করছে। কিক অফের পরেই বল পেয়ে ছুট লাগালেন মিলানের হাকান শালানুলু। ওদিকে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড রাফায়েল লিয়াও ওপরে উঠে আসছেন। শালানুলুর পাস পেয়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে জড়িয়ে দিলেন জালে। ম্যাচের আয়ু তখন মাত্র ৬.২ সেকেন্ড।
সিরি আ তো বটেই, ইউরোপিয়ান ফুটবলের ইতিহাসেই কাল সাসসুওলোর বিপক্ষে দ্রুততম গোলটা করলেন মিলানের লিয়াও। শীর্ষ পর্যায়ের ইউরোপিয়ান ফুটবলে এত দ্রুত গোল কখনো হয়নি। এর আগে ৮.৯ সেকেন্ডে সিরি আ তে গোল করেছিলেন পিয়াসেঞ্জার পাওলো পজ্জি, ২০০১ সালে ফিওরেন্টিনার বিপক্ষে। কিন্তু আপনার প্রশ্ন হতে পারে, ফুটবল ইতিহাসেরই সবচেয়ে দ্রুততম গোল কোনটা।
সৌখিন ফুটবলে এর চেয়ে অনেক কম সময়ে গোল করার রেকর্ড আছে। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দ্রুততম যে গোলটির ভিডিও আছে, সেটি করেছিলেন স্কটল্যান্ডের ফুটবলে জুনিয়র নন লিগ ফুটবল ম্যাচে। কিক অফ থেকে বল পেয়েই গোলরক্ষককে এগিয়ে আসতে থেকে যে কিকটা করেছিলেন গেভিন স্টোকস, সেটাই জড়িয়ে গেছে জালে। রেকর্ডবুকে সেই গোলের আয়ু ২.১ সেকেন্ডস।
এর পর যে দ্রুততম গোলের রেকর্ড পাওয়া যায়, তার বেশির ভাগই এমন আধা পেশাদার বা অপেশাদার ফুটবলে। এর মধ্যে ব্রাজিলের আধা পেশাদার লিগে রিকার্দো অলিভিয়েরার ২.৮ সেকেন্ডের গোল ২০০৪ সাল পর্যন্ত গিনেজ বুকে রেকর্ড ছিল। দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যে গোলটির খবর পাওয়া যায় সেটি ফেদেরিকো শাভেসের, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে ভিলা নোভার হয়ে গোল করেছিলেন ৩.১৭ সেকেন্ডে। আর আর্জেন্টাইন ফুটবলে ঠিক ৫ সেকেন্ডে গোল আছে কার্লোস ডান্টনের।
ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ফুটবলে সবচেয়ে দ্রুততম যে গোলের খোঁজ পাওয়া যায়, সেটা ১৯৭২ সালে। নিউক্যাসলের ম্যালকম ম্যাকডোনাল্ড গোল করেছিলেন সেইন্ট জন্সটনের বিপক্ষে, ঠিক ৫ সেকেন্ডে। তবে সেটা ছিল প্রাক মৌসুম প্রস্তুতি ম্যাচে।
শীর্ষ পর্যায়ে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ইউরোপের এখন পর্যন্ত দ্রুততম গোলটা লিয়াওয়েরই। প্রশ্ন উঠতে পারে, অন্য লিগগুলোতে কীর্তিটা কার। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এখন পর্যন্ত জানা রেকর্ডটা সাউদাম্পটনের শেন লংয়ের। ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে গত মৌসুমে গোল করেছিলেন ৭.৬৯ সেকেন্ডে। সিরি আর রেকর্ডটা তো বলা হয়েছে আগেই। লা লিগায় কীর্তিটা জোসেবা লরেন্তের। এসপানিওলের হয়ে রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে গোল করেছিলেন ৭.২২ সেকেন্ডে। বুন্দেসলিগায় লেভারকুসেনের করিম বেল্লারাবি ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে গোল করেছিলেন ঠিক ৯ সেকেন্ডে। আর আন্তর্জাতিক ফুটবলেও এই কীর্তি একজন জার্মানের। লুকাস পোডলস্কি ২০১৩ সালে যখন ইকুয়েডরের বিপক্ষে গোল করেছিলেন, তখন হয়েছে মাত্র ৭ সেকেন্ড। আর বিশ্বকাপে রেকর্ডটা অনেকেরই মনে থাকার কথা। ২০০২ বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে তুরস্কের হাকান সুকুর দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে গোল পেয়েছিলেন ১০.৮ সেকেন্ডে। আর চ্যাম্পিয়নস লিগে ইতিহাসটা বায়ার্নের রয় ম্যাকাই রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে গোল করেছিলেন ১০.১ সেকেন্ড।