প্রিটোরিয়াসকে ছাপিয়ে কোভিড জটিলতা কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে নায়ক শামিম
২য় আন-অফিশিয়াল ওয়ানডে, চট্টগ্রাম
আয়ারল্যান্ড উলভস ২৬৩/৭, ৫০ ওভার (প্রিটোরিয়াস ৯০, ম্যাককোলাম ৪১, ডোহেনি ৩৭, টেকটর ৩১, রাকিবুল ২/৩৮, সুমন ২/৫১, শফিকুল ১/৫৬, মুকিদুল ১/৬২)
বাংলাদেশ ইমার্জিং ২৬৪/৬, ৪৯.৪ ওভার (জয় ৬৬, শামিম ৫৩*, সাইফ ৩৬, ইয়াসির ৩১, হৃদয় ৩১, হোয়াইট ২/৪৫, প্রিটোরিয়াস ১/৪০, লিটল ১/৫৬, গেটক্যাট ১/১৫)
বাংলাদেশ ইমার্জিং ৪ উইকেটে জয়ী
আগের ম্যাচটা ৩০ ওভারের পর পরিত্যক্ত হয়েছিল রুহান প্রিটোরিয়াসের কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ায়। একদিন পর আবারও সবার নেগেটিভ আসার পর হলো দ্বিতীয় ম্যাচ, সেখানে আয়ারল্যান্ড উলভসের সেরা পারফরমার ওই প্রিটোরিয়াস। নায়ক হতে পারতেন তিনিই, তবে শেষ পর্যন্ত তাকে ছাপিয়ে আলো কেড়েছেন শামিম হোসেন পাটোয়ারি। শেষ ৫ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৪৯ রান, শামিমের ৩৯ বলে ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস, সুমন খানের সঙ্গে তার দুর্দান্ত রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে ২ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেটে জিতে গেছে বাংলাদেশ ইমার্জিং। শামিম ছাড়া ফিফটি পেয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়ও।
২৬৪ রানতাড়ায় শুরুটা ঝড়ো করেছিলেন সাইফ হাসান ও তানজিদ হাসান তামিম। প্রথম ৭ ওভারে উঠেছিল ৪৩ রান, ৮ম ওভারে গিয়ে প্রথম ব্রেকথ্রু দিয়েছিলেন প্রিটোরিয়াসই। তার স্লোয়ারে কাভারে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তামিম, ১৮ বলে ১৭ রান করে। জয়কে নিয়ে এরপর আরও কিছুক্ষণ ছিলেন সাইফ, বাংলাদেশ ইমার্জিং অধিনায়ককে ফিরতে হয়েছে ডাউন দ্য লেগের বলে এজড হয়ে, ৫৩ বলে তিনি করেছিলেন ৩৬ রান।
জয়ের সঙ্গে ইয়াসির আলি রাব্বির জুটি এরপর বাংলাদেশকে রেখেছিল ঠিক পথেই, দুজন মিলে ৮৪ বলে যোগ করেছিলেন আরও ৭৭ রান। লেগস্পিনার বেন হোয়াইটের ঝুলিয়ে দেওয়া বলে বড় শট খেলতে গিয়ে টাইমিং ঠিকঠাক না করতে পেরে ক্যাচ তুলেছেন রাব্বি, ৩৪ বলে ৩১ রান করে। হোয়াইটের শিকার জয়ও, তার লং-হপে ক্যাচ তুলেছেন ৯৫ বলে ৫ চারে ৬৬ করার পর। ১৬ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট একটু আশা জুগিয়েছিল আইরিশদের।
পরের ধাপে তৌহিদ হৃদয়ের একটু ধীরগতির ব্যাটিং চাপ বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ ইমার্জিংয়ের, জশ লিটলের অফস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন হৃদয়, ৪৭ বলে ৩১ রান করে। আকবর আলি নেমে ৪ বলে রান করতে পারেননি, শামিমের কলে দ্রুতগতির ডাবলস নিতে গিয়ে তিনি হয়েছেন রান-আউট। এরপর এসেছিলেন সুমন খান, শামিমের রানিং বিটুইন দ্য উইকেটকে যিনি সমর্থন করতে পেরেছেন দারুণভাবে।
শেষ ৫ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৪৯ রান, শামিমের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের চাপেই কিনা শেষদিকে বেশ এলোমেলো ছিল আইরিশদের বোলিং। ৪৯তম ওভারে লিটল এসে দিয়েছেন ১৪ রান, একটি করে চার-ছয় মেরেছেন শামিম। শেষ ওভারের প্রথম বলে মার্ক এডেয়ারকে চার মেরে আইরিশদের শেষ আশা শেষ করেছেন সুমন, যিনি অপরাজিত ছিলেন ৯ বলে ১১ রানে।
এর আগে টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল বাংলাদেশ ইমার্জিং, প্রথম ব্রেকথ্রু পেতে যাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ২১তম ওভার পর্যন্ত। সুমনের লাইন ধরে রাখা বলে এজড হওয়ার আগে ম্যাককোলাম করেছিলেন ৬২ বলে ৪১, প্রিটোরিয়াসের সঙ্গে তার ওপেনিং জুটিতেই উঠেছিল ৮৮ রান। অবশ্য ম্যাককোলামের উইকেটের পরও উলভসকে স্টিফেন ডোহেনির সঙ্গে এগিয়ে নিয়েছেন প্রিটোরিয়াস, ২য় উইকেট জুটিতে এসেছে আরও ৮৫ রান।
তবে রাকিবুলের করা ৩৮তম ওভারে বদলে গেছে চিত্রটা, সে ওভারেই তিনি ফিরিয়েছেন ডোহেনির পর প্রিটোরিয়াসকেও। ডোহেনি তুলেছেন ক্যাচ, রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন প্রিটোরিয়াস। শেষ ১০ ওভারে উলভস তুলেছিল ৮০ রান, শেন গেটক্যাটের ২৫ বলে ২৯ ও গ্যারেথ ডিলানির ৮ বলে ১৮ রানের ক্যামিওতে।
বাংলাদেশ ইমার্জিংয়ের তিন পেসার-- মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, সুমন ও শফিকুল ইসলাম ভালই খরুচে ছিলেন, তিনজনই গুণেছেন ওভারপ্রতি ৫.৬০-এর ওপর করে রান। সে তুলনায় রাকিবুল এবং পার্টটাইমার সাইফ ছিলেন আঁটসাঁট-- প্রথমজন ১০ ওভারে দিয়েছেন ৩৮, পরের জন ৯ ওভারে ৪০।
সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ ৯ মার্চ, একই ভেন্যুতে।