সাইফের সেঞ্চুরি, কোভিড-বিঘ্নিত ম্যাচে জিতে ২-০তে এগিয়ে গেল ইমার্জিং টিম
৩য় আন-অফিশিয়াল ওয়ানডে, চট্টগ্রাম
আয়ারল্যান্ড উলভস ২৬০/৭, ৫০ ওভার (টাকার ৮২, ক্যামফার ৪৩, ম্যাককলাম ৪০, টেকটর ৩৬, মুগ্ধ ৩/৪৩, সুমন ১/৫১, হৃদয় ১/১৮)
বাংলাদেশ ইমার্জিং ২৬৪/৬, ৪৯.৪ ওভার (সাইফ ১২০, হৃদয় ৪৩*, শামিম ৪৪*)
বাংলাদেশ ইমার্জিং ৪ উইকেটে জয়ী
অধিনায়ক সাইফ হাসানের সেঞ্চুরির পর আগের ম্যাচে জয়ের নায়ক শামিম হোসেন পাটোয়ারির ২৫ বলে ৪৪ ও তৌহিদ হৃদয়ের ৪৪ বলে ৪৩ রানে আয়ারল্যান্ড উলভসের ২৬০ রান ২৭ বল বাকি থাকতেই পার করে তৃতীয় আন-অফিশিয়াল ওয়ানডেতে ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ইমার্জিং টিম। আয়ারল্যান্ড দলের একজন স্থানীয় সাপোর্ট স্টাফ কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার পর দুই ঘন্টা দেরি করে শুরু হয়েছিল খেলা। পরের ইনিংসের কিছু অংশ তাই হয়েছে ফ্লাডলাইটের নিচে। মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর ৩ উইকেট, ২ রান-আউটের পরও আয়ারল্যান্ড ২৬০ পর্যন্ত গিয়েছিল মূলত লরকান টাকারের ৫২ বলে ৮২ রানের অপরাজিত ইনিংসে।
টসে জিতে এদিনও ফিল্ডিং নিয়েছিল বাংলাদেশ ইমার্জিং, অবশ্য আগেরদিনের চেয়ে তাড়াতাড়িই ব্রেকথ্রু এসেছিল। ১০ম ওভারে আগেরদিনের সর্বোচ্চ স্কোরার রুহান প্রিটোরিয়াস হয়েছিলেন রান-আউট। একপাশে জেমস ম্যাককলাম ভাল খেলছিলেন, তবে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে ১৬তম ওভারে রিটায়ার্ড-হার্ট হতে হয়েছে তাকে। জেরেমি ললোর ও পরে কুরটিস ক্যামফারের সঙ্গে অধিনায়ক হ্যারি টেকটর এরপর যোগ করেছিলেন যথাক্রমে ৩২ ও ৪৫ রান। ললোর টপ-এজে ক্যাচ তুলেছিলেন মুগ্ধর বলে, টেকটর নিজে ৩৬ রান করে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে খেলতে গিয়ে হৃদয়ের বলে হয়েছেন স্টাম্পড।
এরপর শুরু হয়েছে টাকারের ঝড়। প্রথমে ক্যামফারের সঙ্গে ৪র্থ উইকেটে ৫১ বলে তুলেছিলেন ৬০ রান, সুমনের বলে লং-অফে ক্যাচ দেওয়ার আগে ক্যামফার করেছেন ৫২ বলে ৪৩। একপাশে গ্যারেথ ডিলানি, শেন গেটট্যাকে ও গ্রাহাম হিউমের প্রত্যেকেই এক অঙ্কে ফিরলেও টাকার ছিলেন অপরাজিত। শেষ ৮ ওভারে উঠেছে ৫৮ রান, এর মাঝে তিনি একাই করেছেন ৪১ রান। ৩৪ বলে করেছেন ফিফটি, পরের ১৮ বলে করেছেন ৩২ রান। খালেদ আহমেদের করা ৪০তম ওভারে মেরেছিলেন ৫টি চার। অপরাজিত ৮২ রানের ইনিংসে টাকার ৯টি চার, সঙ্গে শেষ ওভারে সুমনকে মেরেছেন দুটি ছয়।
রানতাড়ায় সাইফ প্রথম ওভারে দিয়েছিলেন মেইডেন, প্রথম ৭ বলে রান করতে পারেননি। হিউমকে এক্সট্রা কাভার দিয়ে চার মেরে স্কোরিং শুরু করেছেন, এরপর পেছন ফিরে তাকাননি আর। ৯ম ওভারে প্রিটোরিয়াসের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছিলেন ২৮ বলে ১৭ রান করা তানজিদ হাসান তামিম, তবে প্রথম পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ ইমার্জিং তুলেছিল ৬২ রান, পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে এক ছয় ও তিন চারে সাইফের ১৮ রানের শিকার হয়েছিলেন জোনাথন গার্থ।
সাইফ ফিফটি পূর্ণ করেছিলেন ৪৩ ওভারে, তামিম ফেরার পর মাহমুদুল হাসান জয়, ইয়াসির আলি রাব্বি ও তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে জুটিতে যোগ করেছিলেন যথাক্রমে ৫২, ৩১ ও ৬৮ রান। ২৯ বলে ১৬ করে গ্যারেথ ডিলানির বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন জয়, রাব্বি পিটার চেজের বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেছেন ২৩ বলে ১৩। গার্থকে চারের পর ছয় মেরে ১০৯ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন সাইফ, ডিলানিকে কাট করতে গিয়ে কট-বিহাইন্ড হওয়ার আগে ১২০ রান করেছেন ১২৫ বলে, ১১টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৫টি ছয়।
সাইফের উইকেটের পর ৬৫ বলে সমানসংখ্যক রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশ ইমার্জিংয়ের, শামিম নেমে শুরু করেছিলেন আগেরদিন যেখান থেকে শেষ করেছিলেন ঠিক সেখান থেকেই-- ডিলানির এক ওভারে দুই চারে। এরপর নিয়মিত বাউন্ডারি পেয়েছেন তিনি ও হৃদয়, ৪৬তম ওভারে চেজের বলে শামিমের টানা দুই চারে লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ ইমার্জিং।
এ ম্যাচ দিয়েই শেষ হলো আয়ারল্যান্ড উলভসের এ সফরের চট্টগ্রাম-লেগ, ১২ মার্চ মিরপুরে হবে চতুর্থ ওয়ানডে। একই ভেন্যুতে সিরিজের শেষ ওয়ানডের পর দুটি টি-টোয়েন্টি খেলার কথা আছে দুই দলের।