জয়ের সেঞ্চুরির পর ইমার্জিংয়ের ৪-০
৫ম আন-অফিশিয়াল ওয়ানডে, মিরপুর
বাংলাদেশ ইমার্জিং টিম ২৬০ অল-আউট, ৪৯.৪ ওভার (জয় ১২৩, ইমন ৪১, অঙ্কন ৩৩, এডেয়ার ৩/২৭, টেকটর ২/৩৭, প্রিটোরিয়াস ২/৫১
আয়ারল্যান্ড উলভস ২৫৫/৯, ৫০ ওভার (ডোহেনি ৮১, এডেয়ার ৪৫, রক ৩৫, সাইফ ৩/৩১, তানভির ২/৩৯, শফিকুল ২/৫৭)
বাংলাদেশ ইমার্জিং টিম ৫ রানে জয়ী ও সিরিজ ৪-০তে জয়ী
বেন হোয়াইটের হতাশাটা স্পষ্ট, প্যাডের ওপর ব্যাট দিয়ে আঘাত করলেন একবার। রেজাউর রহমান রাজার লেগস্টাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলটা লেগেছিল তার প্যাডেই। শেষ বলে অন্তত টাইয়ের জন্য ৬ রান প্রয়োজন ছিল আয়ারল্যান্ড উলভসের, হোয়াইট শুধু নিতে পারলেন ওই লেগবাইটাই। সিরিজের শেষ ম্যাচে ভাল একটা লড়াইয়ের পরও আটকে গেল সফরকারিরা। মিরপুরে মাহমুদুল হাসান জয়ের দারুণ সেঞ্চুরিতে ২৬০ রান তোলার পর গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পাওয়া ব্রেকথ্রুতে পঞ্চম ম্যাচে ৫ রানের জয়ে ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ইমার্জিং টিম।
টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল আয়ারল্যান্ড উলভস, সকালের কন্ডিশন কাজে লাগাতে। প্রথম ব্রেকথ্রুও এসেছিল ৪র্থ ওভারে, এডেয়ারের বল লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছিলেন অধিনায়ক সাইফ হাসান। আনিসুল ইসলাম ইমন একপাশে আক্রমণাত্মক ছিলেন, দ্বিতীয় ওভারে দুই চারের পর ৭ম ওভারে পিটার চেজকে মেরেছিলেন আরও দুটি। আউটও হয়েছেন আক্রমণাত্মক শট খেলেই, গ্যারেথ ডিলানির অফস্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে এজড হওয়ার আগে ৩১ বলে ৮ চারে করেছেন ৪১ রান।
এরপর তৌহিদ হৃদয়, শাহাদাত হোসেন দিপু, শামিম হোসেন, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন-- প্রত্যেকেই শুরু করেও ইনিংস সেভাবে বড় করতে পারেননি, তবে একপাশে জয় ছিলেন ঠিকই। শুরুর দিকে একটু ধীরগতির থাকলেও পরে ইনিংসের পেস বাড়িয়েছেন দারুণভাবে, ৭১ বলে পূর্ণ করেছিলেন ফিফটি। ফিফটির পর চার মেরেছেন চারটি, তবে এ সময়েই মেরেছেন ইনিংসের ৩ ছয়ের সবকটি। ১২৫ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন, পরের ১০ বলে করেছেন ২৩ রান। ৪৯তম ওভারে ডাবলস নেওয়ার চেষ্টায় রান-আউট হয়ে ফেরার আগে ১৩৫ বলে ৯ চার ও ৩ ছয়ে ১২৩ রান করেছেন তিনি, সিরিজে ৭১.২৫ গড়ে যিনি করলেন ২৮৫ রান। অবশ্য শেষদিকে জয় ছাড়া অন্য কারও কাছ থেকে তেমন ক্যামিও ধরনের কোনো ইনিংস পায়নি ইমার্জিং টিম, উলটো ২ বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে গেছে তারা।
রানতাড়ায় দ্বিতীয় ওভারেই জেরেমি ললারকে ফিরিয়েছিলেন শফিকুল ইসলাম, অবশ্য এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন স্টিফেন ডোহেনি ও মার্ক এডেয়ার। দুজন মিলে যোগ করেছেন ৯৭ রান, সে ব্রেকথ্রু দিয়েছেন সাইফ। তাকে তুলে মারতে গিয়ে লং-অনে ধরা পড়েছেন এডেয়ার, ৬৩ বলে ৭ চারে ৪৫ রান করে। এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে তারা। শেন গেটট্যাকে ও লরকান টাকার এলবিডব্লিউ হয়েছেন সাইফের বলে, হ্যারি টেকটর ক্যাচ দিয়েছেন তানভির ইসলামের বলে।
এসবের মাঝে বড় উইকেটটা পেয়েছেন শামিম হোসেন পাটোয়ারি- একপাশে বাধা হয়ে থাকা ডোহেনির। আগের বলে শর্ট লেংথ থেকে ছয় মেরেছিলেন ডোহেনি, পরের বলে আবারও তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন লং-অনে। এর আগে ৯৯ বলে ৯ চার ও ১ ছয়ে করেছেন ৮১ রান।
নেইল রকের ৩৮ বলে ৩৫ রানের ইনিংস আরেকটু আশা জুগিয়েছিল আইরিশদের, তবে শেষ পর্যন্ত কাজে আসেনি সেটা। শেষ ৫ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৪৩, কিন্তু আয়ারল্যান্ড উলভসকে পার করাতে পারেননি কেউ।
৩১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দিনের সেরা বোলার সাইফ, এ সিরিজে বেশ একটা চমকই দেখিয়েছেন তিনি বোলিংয়ে। শফিকুল একটু খরচে থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ ব্রেকথ্রু দিয়েছেন, তানভির, শামিম, রেজাউরও পেয়েছেন উইকেটের দেখা। সিরিজে প্রথমবার খেলতে নামা আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ছিলেন ৭ ওভারে ৩৭ রানে উইকেটশূন্য, তবে তার বলে মিস হয়েছে ক্যাচ।