কিক অফের আগে: লিভারপুলের সামনে রামোসবিহীন রিয়াল, হালান্ডের সিটি-পরীক্ষা
চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল, প্রথম লেগ
রিয়াল মাদ্রিদ- লিভারপুল
৭ এপ্রিল, সান্তিয়াগো বার্নাব্যু, রাত ১টা
তিন বছর আগে সেই দুঃস্বপ্নটা ভুলতে সময় লেগেছিল ইয়ুর্গেন ক্লপের। কিয়েভে সেই ম্যাচে রিয়ালের কাছে ৩-১ গোলে হেরেছিল লিভারপুল। তবে যেভাবে হেরেছিল, সেটাই হজম করতে কষ্ট হওয়ার কথা ক্লপের। এরপর তিন বছর হয়ে গেছে, আরও একবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মুখোমুখি দুই দল। সেই ম্যাচের পর দুই দলের মূল কাঠামোতে খুব বদলায়নি, আছেন নয় জনই। তবে নেই তিন মূল চরিত্র। যার আঘাতে সেই ম্যাচে মো সালাহ ছিটকে দিয়েছিলেন সেই রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোস, সেই ম্যাচে দুর্দান্ত গোল করা গ্যারেথ বেল আর লিভারপুলের দুঃস্বপ্নের ভিলেন ক্যারিয়াস।
রামোসের না থাকাটাই আজ বেশি করে উঠে আসছে। সালাহর সঙ্গে সেই ম্যাচের পর আর দেখা হয়নি। এবার দুজনের জন্য মঞ্চটা সাজানো ছিল। সংবাদমাধ্যমও চেষ্টায় ছিল দুজনকে উসকে দেওয়ার, কিন্তু কেউ সেই ফাঁদে পা দেয়নি। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিরতিতে রামোস ছিটকে গেলে ভেস্তে যায় লড়াইয়ের মধ্যে এই লড়াইয়ের আয়োজন। রিয়ালের জন্য তাই রামোসকে না পাওয়াটা বড় একটা ধাক্কাই। সালাহ-মানেরা জানেন, চ্যাম্পিয়নস লিগে রামস ছাড়া রিয়ালের পারফরম্যান্স। গত মৌসুমের সেই ভুলের সুযোগ নিতে চাইবেন তারা।
আরেকড়া লড়াই হবে অন্য জায়গায়। করিম বেনজেমা এই মুহূর্তে অবশ্য জিদানের তুরুপের সবচেয়ে বড় তাস। এই মৌসুমে ফর্মে থাকা স্ট্রাইকার নিজের মাঠে গোল করতেই চাইবেন। আর লিভারপুলের সেন্টারব্যাক জুটি এই মৌসুমেই ১৮টি হয়ে গেছে, রক্ষণ তাই ক্লপের বড় দুশ্চিন্তা। একটাই ভরসা, ফাবিনিয়ো সেই রক্ষণকে রক্ষা করতে পারতে পারেন, যেমন করেছেন আর্সেনালের সঙ্গে ম্যাচে। আজকের ম্যাচে বেনজেমাকে বোতলবন্দি করার কাজটা তার ওপরেই আসতে পারে।
সম্ভাব্য একাদশ
চোটের জন্য আজ হ্যাজার্ডকে স্কোয়াডে রাখেননি জিদান। ভালভের্দে থাকলেও হয়তো মূল একাদশে থাকবেন না। লিভারপুলে নতুন করে কোনো চোট নেই, আগের মতোই হেন্ডারসন, ভ্যান ডাইকদের পাচ্ছে না লিভারপুল।
রিয়াল মাদ্রিদ
কোর্তোয়া, ভারান, নাচো, ভাজকেজ, মেন্ডি, ক্রুস, মদ্রিচ, কাসেমিরো, আসেন্সিও, ভিনিসিয়াস, বেনজেমা
লিভারপুল
এলিসন, ফিলিপ্স, কাবাক, আলেকজান্ডার আরনল্ড, রবার্টসন, ফাবিনিও, থিয়াগো, ভিনালদাম, মানে, সালাহ, ফিরমিনো।
সংখ্যায় সংখ্যায়
-দুই লেগের ম্যাচে সর্বশেষ দেখায় লিভারপুলকে হারিয়েছি রিয়াল মাদ্রিদ, ২০১৪-১৫ মৌসুমে জিতেছিল ৪-০ গোলে
-নিজেদের মাঠে সর্বশেষ ১০টি চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচের চারটি জিতেছে রিয়াল
-গত মৌসুমের অ্যাটলেটিকোর কাছে ছাড়া স্প্যানিশ দলের বিপক্ষে চারটি দুই লেগের লড়াইয়ে টানা জিতেছিল লিভারপুল।
*****
ম্যান সিটি-ডর্টমুন্ড
৭ এপ্রিল, ইতিহাদ স্টেডিয়াম, রাত ১টা
ফর্মের দিক দিয়ে ম্যান সিটি এই মৌসুমে দুর্দান্ত। ইংলিশ লিগের ট্রফিতে এক হাত দিয়ে রেখেছে তারা, চ্যাম্পিয়নস লিগেও তারা দাপট দেখিয়ে উঠেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। অন্যদিকে ডর্টমুন্ড জার্মান লিগে সেরা চারেই থাকতে পারছে না। আজকের ম্যাচে সিটি জয় না পেলেই সেটা হবে আপসেট।
তবে আজকের ম্যাচের আলো সব এরলিং ব্রাউট হালান্ডের ওপর। কাল ডর্টমুন্ড একটা ভিডিও পোস্ট করেছে, যাতে প্রথমবারের মতো ইতিহাদে নামছেন হালান্ড। কদিন ধরেই তার বাবা ও এজেন্ট চষে বেড়াচ্ছেন ইউরোপ, কথা বলছেন রিয়াল-বার্সার সাথে। আগুয়েরোর বিদায়ের পর ম্যান সিটিরও দরকার একজন স্ট্রাইকার। হালান্ড যে প্রথম পছন্দ হতে পারেন, তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বোচ্চ ১০ গোল তার। মঞ্চ যত বড়, হালান্ড যেন আরও বেশি উজ্জ্বল। সিটির মাঠে নিজের প্রতিভাটা দেখানোর সুযোগ কি হাতছাড়া করবেন? আজকের ম্যাচের ফল অনেকটা নির্ভর করছে তার ওপরেই।
সম্ভাব্য একাদশ
মোটামুটি ফিট একাদশই পাচ্ছেন গার্দিওলা, তবে তার রোটেশনের খেলায় এবার কে কাটা পড়বেন সেটাই দেখার বিষয়। অন্যদিকে জেডন সাঞ্চোকে না পাওয়া বড় আঘাত ডর্টমুন্ডের জন্য।
সিটি
এডারসন, ওয়াকার, স্টোনস, দিয়াজ, ক্যান্সেলো, গুন্ডয়ান, রদ্রি, ফোডেন, ডি ব্রুইন, বার্নাদো সিলভা, স্টার্লিং
ডর্টমুন্ড
হিটজ, কান, আকাঞ্জি, হামেক,অস, গেরেরো, ডেলানি, বেলিংহাম, দাহুদ, থরগান হ্যাজার্ড, রিউস, হালান্ড।