মিউনিখে এসে পিএসজির হয়ে 'প্রতিশোধ' নিয়ে গেলেন এমবাপে-নেইমার
আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় তুষার ঝরছে তো ঝরছেই। সেই তুষারে মাঠও সাদা, মুখের ওপরও এসে পড়ছে তুষার। সেটাই বোধ হয় দিকভ্রান্ত করে দিল বায়ার্নকে, নইলে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা নিজেদের মাঠে এমন খেই হারিয়ে ফেলবে কেন? পিএসজির বিপক্ষে প্রথমার্ধটাই ডুবিয়ে দিয়েছে তাদের। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা হেরেছে ৩-২ গোলে। গত মৌসুমের ফাইনালের পর দেখায় বায়ার্নকে তাদের মাঠে হারিয়ে সেমির পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে পিএসজি।
নেইমারের জন্য সপ্তাহটা রোলার কোস্টারের মতোই হয়েছে। লিলের সঙ্গে দলের হারে শেষ মুহূর্তে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন, সমালোচনাও কম হয়নি তাকে নিয়ে। তবে তার খেলোয়াড়ি সামর্থ্য যে প্রশ্নাতীত সেটা প্রমাণ করেছেন আরও একবার। ম্যাচের শুরু থেকেই বায়ার্ন আক্রমণের যে বার্তা দিচ্ছিল, সেটা ৪ মিনিটের ভেতর বুমেরাং করে ফিরিয়েছে পিএসজি। নেইমারের দুর্দান্ত এক দৌড়ের পর বায়ার্ন রক্ষণ হয়ে গেছে এলোমেলো, ফাঁকায় দাঁড়ানো এমবাপেকে বলটা বাড়িয়েছিলেন নেইমার। এমবাপের শট হয়তো আরও দশবারের মধ্যে নয়বারই ঠেকিয়ে দিতেন নয়্যার, কিন্তু পারলেন না আজ। সোজাসুজি আসা শট তার হাত গলে ঢুকে গেল জালে। নেইমার-এমবাপ্পে যুগলবন্দির এটি চ্যাম্পিয়নস লিগে দশম গোল, দু'জনের ২০১৭ সাল থেকে একসঙ্গে খেলার পর এত বেশি গোল জুটি বেঁধে আর কেউ করতে বা করাতে পারেননি।
সেই গোলের পর বায়ার্ন চেপে বসেছিল ভালোই। কেইলর নাভাস বাধা হয়ে না দাঁড়ালে অনায়াসেই সমতা ফেরাতে পারত। লিওন গোরেতজকার হেড পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন নাভাস। পরে পাভাডের দূর থেকে নেওয়া শটও ঠেকিয়ে দিয়েছেন। মধ্যে চুপা মটিং একবার মিসও করেছেন। শেষ পর্যন্ত লেভানডফস্কির বিকল্প এই চুপা মটিংই ব্যবধান কমিয়েছেন। পাভাডের ক্রস থেকে হেড করে গোল করেছেন সাবেক এই পিএসজি স্ট্রাইকার। তার আগে অবশ্য প্রথমার্ধের সবচেয়ে মনে রাখা মুহূর্তের জন্ম দিয়েছেন নেইমার। এবার কর্নার থেকে বলটা ফিরেই এসেছিল, মুহূর্তের চিন্তায় বাঁ পায়ে দারুণ একটা বল বাড়িয়েছেন নেইমার। মার্কিনিয়স অনসাইডেই ছিলেন, তাকে ফাঁদে ফেলতে পারেনি বায়ার্ন। ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে দিয়েছেন এই ব্রাজিলিয়ান।
তবে তার পরেই বড় একটা ধাক্কা খেয়েছে পিএসজি। চোট পেয়ে উঠে গেছেন মার্কিনিয়স। এরপর চোট বা কৌশলগত কারণে বদল এনেছে দুই দলই।
দ্বিতীয়ার্ধে গোল করার আরেকটা সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন নেইমার, কিন্তু এবার বক্সের ভেতরে ক্লোজ রেঞ্জ থেকে ভালো একটা সেভ করেছেন নয়্যার। ওদিকে নাভাসও সেভ করে গেছেন একের পর এক। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পারেননি ঠেকাতে। একটা ফ্রিকিক থেকে কিমিখের সেট পিসে দারুণ এক হেড করে গোল করেন মুলার।
কিন্তু ৬৮ মিনিটে আবার এগিয়ে যায় পিএসজি। এবার বোয়াটেংয়ের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন এমবাপে। এরপর চেষ্টা করেও আর গোল শোধ করতে পারেনি বায়ার্ন, ৩-২ গোলে এগিয়ে থেকে তাই নিজেদের মাঠে পরের লেগে নামবে পিএসজি। তিনটি শটের তিনটিতেই গোল দিয়েছে পিএসজি, অন্যদিকে ২৫টি শটের মাত্র দুইটি পেরেছে বায়ার্ন। ১৯ ম্যাচ পর চ্যাম্পিয়নস লিগে হেরেছে বায়ার্ন, তাও নিজেদের মাঠে।
আরেক ম্যাচে পোর্তোকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেমিতে ওঠার পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে চেলসি। ম্যাসন মাউন্টের পর গোল পেয়েছেন বেন চিলওয়েল।