হার্শাল, ডি ভিলিয়ার্সের শেষের ঝলকে মুম্বাইকে 'প্রথা' ভাঙতে দিল না ব্যাঙ্গালোর
গ্রুপপর্ব, চেন্নাই (টস- ব্যাঙ্গালোর/ফিল্ডিং)
মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ১৫৯/৯, ২০ ওভার (লিন ৪৯, সূর্যকুমার ৩১, কিষান ২৮, হার্শাল ৫/২৭, সুন্দর ১/৭, জেমিসন ১/২৭)
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ১৬০/৮, ২০ ওভার (ডি ভিলিয়ার্স ৪৮, ম্যাক্সওয়েল ৩৯, কোহলি ৩৩, বুমরাহ ২/২৬, ইয়ানসেন ২/২৮)
ব্যাঙ্গালোর ২ উইকেটে জয়ী
ডেথ ওভারে হার্শাল প্যাটেলের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর এবি ডি ভিলিয়ার্সের দুর্দান্ত হিটিংয়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মুম্বাইকে মৌসুম শুরুর ম্যাচে আটকে দিয়েছে ব্যাঙ্গালোর। চিপকের ধীরগতির নিচু বাউন্সের উইকেটে শেষ ৪ ওভারে মাত্র ২৫ রান গুণেছিল ব্যাঙ্গালোর, হার্শাল নিজের শেষ ২ ওভারে ৫ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এরপর রানতাড়ায় গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ছাড়া মাঝের ওভারগুলিতে বাকিরা ভুগেছেন, সব এসে ভর করেছিল ব্যাটিং অর্ডারে পরে আসা ডি ভিলিয়ার্সের ওপর। মুম্বাইয়ের ডেথ বোলিংকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছেন তিনি, তার ২৭ বলে ৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে মুম্বাইকে মৌসুম শুরুর ম্যাচে হারের প্রথা ভাঙতে দেয়নি ব্যাঙ্গালোর। শেষদিকে গিয়ে ডি ভিলিয়ার্স ফিরেছিলেন, তবে শেষ বলের আগে টাই থাকা ম্যাচ হার্শাল জিতিয়েছেন আইপিএল অভিষিক্ত মার্কো ইয়ানসের বলে সিঙ্গেল নিয়ে। এ নিয়ে টানা নয় মৌসুম টুর্নামেন্টের শুরুর ম্যাচে হারলো মুম্বাই।
রানতাড়ায় ওপেনিংয়ে কোহলির সঙ্গে এসেছিলেন ওয়াশিংটন সুন্দর, তবে সে টোটকা কাজে আসেনি তাদের। এরপর রজত পাতিদারও ফিরেছেন দ্রুত। স্কোরিংয়ে ভুগেছেন কোহলিও, যদিও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে জুটি সেভাবে বুঝতে দেয়নি সেটি। বীভৎস এক মৌসুম পেছনে ফেলে আসা ম্যাক্সওয়েল আইপিএলে ছয় মেরেছেন ১৭১ বল পর, তৃতীয় উইকেটে কোহলির সঙ্গে যোগ করেছেন ৫২ রান। সে সময় বেশ স্বস্তির জায়গায় ছিল ব্যাঙ্গালোর, তবে ১৩ থেকে ১৫ ওভারের মাঝে হুট করেই বদলে গেছে গল্পটা। প্রথমে বুমরাহকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন কোহলি, পরের ওভারে ম্যাক্সওয়েলের পর শাহবাজ আহমেদকেও ফিরিয়েছেন প্রথম দুই ওভার তেমন সুবিধার না যাওয়া ইয়ানসেন। ম্যাক্সওয়েল স্লোয়ারে ফাইন লেগে ধরা পড়ার আগে করেছেন ২৪ বলে ৩৯।
মুম্বাইয়ের বিপক্ষে আইপিএলে প্রথমবার ৫ উইকেট নিলেন কোনো বোলার, হার্শাল নিজের শেষ ২ ওভারেই নিয়েছেন ৪ উইকেট/ আইপিএল
শেষ ৪ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ৩৯ রান, তবে মুম্বাই ও জয়ের মাঝে বাধা হয়ে ছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। ১৬তম ওভারে প্রথম দুই বলে রাহুল চাহারকে চার-ছয়ে শেষের মোমেন্টাম নিজেদের দিকে এনেছেন ডি ভিলিয়ার্স, এরপর মানেননি বোল্ট-বুমরাহকেও। ড্যান ক্রিশ্চিয়ান ফিরলেও খুব একটা সমস্যা হয়নি, অবশ্য শেষ ওভারে ডাবলস নিতে গিয়ে তার রান-আউট একটু আশা জুগিয়েছিল মুম্বাইকে। তবে ইয়ানসেনের বলে মোহাম্মদ সিরাজের পর হার্শাল স্নায়ু ধরে রেখে দুই সিঙ্গেলে শেষ করেছেন ম্যাচ। এর আগে ব্যাঙ্গালোরের বোলিংয়ে শেষের নায়ক ছিলেন হার্শালই।
শুরুতে ক্রিস লিনের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে ফিরেছিলেন রোহিত শর্মা, তৃতীয় ওভারে গিয়ে ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি মেরেছিলেন যিনি। তবে লিনের ৩৫ বলে ৪৯ রানের পর সূর্যকুমার যাদবের ২৩ বলে ৩১, কিষাণের ১৯ বলে ২৮ রানে ভরে মুম্বাই মাঝের ওভারগুলিতে করেছে বেশ ভাল ব্যাটিং, পাওয়ারপ্লের পর শেষের ৪ ওভারের আগে ১০ ওভারে তারা তুলেছিল ৯৩ রান। সে ভিতে দাঁড়িতে তাদেরকে উড়ান দিতে দেননি হার্শাল।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকে ডেথ ওভারের বোলিংয়ের পাশে বড় একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন ছিল কখনোই শিরোপা না জেতা ব্যাঙ্গালোরের, সেই তারা শেষ ৪ ওভারে মুম্বাইকে চেপে ধরেছিল মূলত হার্শালের দুর্দান্ত বোলিংয়েই। স্লোয়ার, ইয়র্কারে হার্শাল শেষ দুই ওভারে ফিরিয়েছেন মুম্বাইয়ের পাওয়ার-হাউসকে-- ইশান কিষাণ, কাইরন পোলার্ড, হারদিক পান্ডিয়ার পর ক্রুনাল পান্ডিয়ার উইকেট পেয়েছেন তিনি ৯ বলের ব্যবধানে। এরপর ইয়ানসেনের উইকেট দিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ পূর্ণ হয়েছে তার, আইপিএলে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে এর আগে কোনো বোলারেরই ছিল না যে কীর্তি।