টানা ব্যর্থতা থেকে বেরিয়ে আসতে শ্রীলঙ্কা-চ্যালেঞ্জ নিতে হবে: মুমিনুল
চার বছর আগে শ্রীলঙ্কা সফরে দুই টেস্টের সিরিজ ড্র করেছিল বাংলাদেশ, চার বছর পর বিদেশের মাটিতে প্রথম কোনো টেস্ট জিতেছিল তারা। এবারও দুই টেস্টের সিরিজের জন্য বাংলাদেশ সেখানে যাচ্ছে, তবে এর আগে অন্তত যাই হোক, দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারের পর নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে-টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ হওয়া বাংলাদেশ মাঠের পারফরম্যান্সে উজ্জীবিত নয় মোটেও। অধিনায়ক মুমিনুল হক বলছেন, শ্রীলঙ্কা সফরটা চ্যালেঞ্জিং হলেও এখনকার অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে সেটি পেরিয়ে যেতে হবে, টানা ব্যর্থতার পর নিজেদের পক্ষে একটা ফল দরকার তাদের।
মুমিনুল বলছেন, এখনকার পরিস্থিতিটাও শ্রীলঙ্কার কন্ডিশনের মতো চ্যালেঞ্জিং তাদের কাছে, “আপনারা সব সময়ই জানেন শ্রীলঙ্কা কিন্তু দেশের মাটিতে খুবই ভালো দল। জিনিসটা আমাদের জন্য সহজ হবে না অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে। আমরা এখন যে অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছি এখান থেকে বের হতে ওই চ্যালেঞ্জটাকে নিতে হবে। আর এই চ্যালেঞ্জটা পার করে টেস্ট দলের একটা ভালো ফল করতে হবে।”
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অধীনে বাংলাদেশের এ সফর গত বছর হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে স্থগিত হয়েছিল সেটি। এবার এ সফরে সাকিব আল হাসান খেলবেন না, বোর্ডের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে যিনি আছেন আইপিএলে। এ সফরে বিবেচনা করা হবে না বলে বোর্ড ছুটি দিয়েছে মোস্তাফিজুর রহমানকেও। আপাতত ২১ সদস্যের স্কোয়াড নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, সেখানে দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচের পর দেওয়া হবে চূড়ান্ত স্কোয়াড।
দলের এমন অবস্থায় একাদশে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ কম বলেও মনে করেন তিনি, “সেরা একাদশ সাজানো তখন কঠিন হয় যখন আপনার দল খুব বেশি ভালো ফলাফল করবে। এক জায়গায় দুই-তিনজন খেলোয়াড় থাকবে। সে সময় ভালো খেললে আমার কাছে মনে হয় দল সাজানো আরও বেশি কঠিন হয়। খারাপ খেললে আপনি কাউকে না কাউকে চেষ্টা করিয়ে বা সুযোগ দিতে পারেন। এটা যারাই খারাপ করে তারাই সুযোগ করে দেয়। এই জায়গায় যে খারাপ খেলবে তাকে হয়তো একটু সুযোগ দিয়ে দেখা যাবে। এক্সপিরিমেন্ট না, এই জায়গায় এমন কোনো সফর নেই যে-- বিদেশে আপনি এটা করতে পারবেন না।”
“এখন যেহেতু খেলছি আমাদের একটা ফলাফল দরকার, আমরা অন্তত ৫-৬টা টেস্ট ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছি। আমাদের একটু ফলাফল দরকার (নিজেদের পক্ষে), তা না হলে আপনি এক্সপেরিমেন্ট করতে পারবেন না। এখন আপনি এটা করবেন বুঝেশুনে- কোন দলের সঙ্গে খেলছি, বিদেশে গিয়ে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে এক্সপিরিমেন্ট করার কিছু নেই।”
আপাতত ব্যাটিংটা প্রত্যাশামতো হচ্ছে না তাদের, “আপনি যদি সর্বশেষ ৪-৫টা সিরিজ দেখেন আমার কাছে মনে হয় আপনিও আমার সঙ্গে একমত হবেন- পেস বোলাররা খুবই ভালো করছে এমনকি স্পিনাররাও। ওই হিসেবে চিন্তা করলে আমি বোলারদের নিয়ে খুব খুশি। এটা একটু আগে বললাম আমি, যে এইখানে ব্যাটিংটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। খালি বোলিং নয়। শেষ ২-৩ সিরিজে ব্যাটিংটা তেমন আশানুরূপ হয়নি। যেটা আমাদের এক্সপেকটেশন ছিল। আমার কাছে ব্যাটিংটাও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সাকিব বা মোস্তাফিজের না থাকায় দলে প্রভাব পড়বে না বলেও মত তার, “না আমার কাছে মনে হয় না সাকিব ভাই বা মোস্তাফিজ না থাকলে দলের ফল হবে না। দেখেন খেলোয়াড় তো আরও আছে। ওনাদের তো ১০-১২টা হাত না। বাকিদেরও ১০-১২টা হাত না। আমার কাছে মনে হয় না এর কোনো প্রভাব পড়ে। আমরা হয়তো দলগত ভাবে খেলতে পারছি না এই কারণে ইতিবাচক ফলাফল হচ্ছে না। আর কোনো কিছু না।”
অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর ভারত-পাকিস্তানের পর এটি তৃতীয় বিদেশ সফর হচ্ছে মুমিনুলের। তবে সব মিলিয়ে ৬ টেস্টের মাঝে শুধু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতেছে বাংলাদেশ তার নেতৃত্বে। তবে অধিনায়ক হিসেবে প্রত্যাশার চাপ নেওয়ার সামর্থ্য তার আছে বলেই মনে করেন তিনি, “চাপ বলতে এই যে এতগুলো মানুষ আছে, এতোজন লোক আছে... পুরা দেশ আছে, আপনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন- আপনার এতটুকু চাপ তো থাকবেই, এতটুকু চাপ তো আপানকে নিতে হবেই, যখন ফলাফল হবে না। আমার সাধ্যের মধ্যে বা আমি যদি মনে করি যে অনেক বেশি চাপ তাহলে কিন্তু আসলেই আমার ওপর চাপ হয়ে যায় আমি যে জিনিসটা হজম করে নিয়েছি যে আমি দলের অধিনায়ক, আমার হয়তো এতটুকু চাপ নিতে হবে। এতটুকু চাপ নেওয়ার ক্ষমতা আছে আমার।”
“আপনি যদি মনে করেন অনেক বেশি তাহলে আসলেই বেশি। আর আপনি যদি মনে করেন ‘মিডিয়াম প্রেশার’- এটা নিতে হবে, এটা নিলে আপনি ওপরে উঠবেন- আমার কাছে এটা ইতিবাচক চাপ মনে হয়।”