• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    সাকিবের ফেরার ম্যাচে রানা-ত্রিপাঠির পর কলকাতা বোলারদের শুরুর চাপে পিষ্ট হায়দরাবাদ

    সাকিবের ফেরার ম্যাচে রানা-ত্রিপাঠির পর কলকাতা বোলারদের শুরুর চাপে পিষ্ট হায়দরাবাদ    

    গ্রুপপর্ব, চেন্নাই (টস- হায়দরাবাদ/ফিল্ডিং) 
    কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৮৭/৬, ২০ ওভার (রানা ৮০, ত্রিপাঠি ৫৩, কার্তিক ২২*, রশিদ ২/২৪, নবি ২/৩২, নাটারাজান ১/৩৭)
    সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৭৭/৫, ২০ ওভার (বেইরস্টো ৫৫, পান্ডে ৬১*, নবি ১৪, কৃষ্ণা ২/৩৫, কামিন্স ১/৩০, রাসেল ১/৩২, সাকিব ১/৩৪) 
    কলকাতা ১০ রানে জয়ী 


    নিতিশ রানার ৫৬ বলে ৮০, রাহুল ত্রিপাঠির ২৯ বলে ৫৩ রানের বিপরীতে জনি বেইরস্টো করলেন ৪০ বলে ৫৫, মনীষ পান্ডে অপরাজিত থাকলেন ৪৪ বলে ৬১ রানে। তবে কলকাতা শুরু থেকেই ছিল আক্রমণাত্মক, তাদের বড় দুই ইনিংস এসেছে এক ও তিন নম্বর ব্যাটসম্যানের থেকে, ওপেনিং জুটিতেই এসেছে ৫৩। হায়দরাবাদ সেখানে অপেক্ষা করেছে তিন ও চার নম্বর ব্যাটসম্যানের জন্য। পাওয়ারপ্লেতে বিনা উইকেটে ৫০ রান তুলেছিল কলকাতা ১০ বাউন্ডারিতে, হায়দরাবাদ সেখানে ৩৫ রান তুলতে হারিয়ে ফেলছে দুই উইকেট, বাউন্ডারি এসেছে মাত্র তিনটি। হায়দরাবাদের প্রথম দুই উইকেটের একটি নিয়েছেন সাকিব, আইপিএলে ফেরার প্রথম বলেই সফল হয়েছেন তিনি। ম্যাচেরও দুই ইনিংসের প্রথম ধাপেই তাই কলকাতার কাছে হেরে গেছে হায়দরাবাদ, শুরুর চাপ কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরে আর। 

    টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল হায়দরাবাদ, তবে শুরু থেকে ১৬ ওভার পর্যন্ত তাদের পেসাররা ছিলেন এলোমেলো। দুই আফগান স্পিনার রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবি মিলে তাদের ৮ ওভারে ৫৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট, বাকিরা ১২ ওভারে ১৩১ রান গুণে পেয়েছেন ২ উইকেট। রানা-ত্রিপাঠির গড়ে দেওয়া ভিতে অইন মরগান-আন্দ্রে রাসেলরা কিছু করতে না পারলেও শেষদিকে দীনেশ কার্তিকের ৯ বলে ২২ রানের ক্যামিওতে চিপকের উইকেটে গড় স্কোরের চেয়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছে কলকাতা। 

    এর আগে শুবমান গিলের সঙ্গে রানার ওপেনিং জুটি ছিল ৫৩ রানের, রশিদের গুগলি পড়তে না পেরে গিল বোল্ড হওয়াতে ভেঙেছে সে জুটি। রানা শীঘ্রই থামেননি, শুরুতে রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লিউর হাত থেকে বাঁচার পর ৩৭ বলে পূর্ণ করেছেন ফিফটি, ২০০৮ সালের পর কলকাতার দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আইপিএল সেঞ্চুরিও একসময় সম্ভব মনে হচ্ছিল তার। তবে নবির বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে আগেভাগেই, ইনিংসে মেরেছেন ৯ চারের সঙ্গে ৪টি ছয়। ত্রিপাঠির সঙ্গে তার জুটি ছিল ৫০ বলে ৯৩ রানের। ত্রিপাঠি নিজে ফিফটি করেছিলেন ২৮ বলে, তবে ঠিক পরের বলেই টি নাটারাজানের শিকার তিনি। 
     


    রানা (বাঁয়ে)-ত্রিপাঠির (ডানে) জুটি কলকাতাকে এনে দিয়েছিল বড় স্কোরের ভিত/আইপিএল


    ডেথ ওভারের আগে ২ উইকেটে ১৫২ রান ছিল কলকাতার, ২০০ কার্ডে ছিল ভালভাবেই। তবে রশিদের বলে রাসেল, নবির পরপর দুই বলে রানা-মরগান ফেরার পর ঘুরে দাঁড়িয়েছিল হায়দরাবাদ। ১৭ থেকে ১৯-- এ তিন ওভারে উঠেছিল মাত্র ১৯ রান। ভুবনেশ্বর কুমারের শেষ ওভারে ১৬ রান তুলে সেসব মোটামুটি পুষিয়ে দিয়েছেন কার্তিক। ১৭.৪ ওভারে ক্রিজে এসেছিলেন সাকিব, শেষ বলে আউট হওয়ার আগে তিনি করেছেন ৫ বলে ৩। 

    এরপর ইনিংসের প্রথম ওভারে হারভাজান সিংকে এনেছিলেন মরগান, একটা উইকেটও পেতে পারতেন তিনি। ওয়ার্নারের ক্যাচটা অবশ্য সামনে ডাইভ দিয়ে নাগালে পেলেও রাখতে পারেননি কামিন্স, হারভাজান ইনিংসে আর বোলিং-ই করেননি। দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে প্রসিধ কৃষ্ণার ঠিক চ্যানেলের ডেলিভারিতে এজড হয়ে ফিরেছেন ওয়ার্নার, এরপরের ওভারে প্রথম বলেই সাকিবের শিকার ইনসাইড-এজে বোল্ড হওয়া ঋদ্ধিমান সাহা। প্রথম ওভারে ১ রান দেওয়া সাকিব অবশ্য শেষ পর্যন্ত দিয়েছেন ৩৪ রান। 

    হায়দরাবাদকে শুরুর চাপ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন বেইরস্টো ও পান্ডে, দুজন তৃতীয় উইকেটে তুলেছিলেন ৬৭ বলে ৯২। বেইরস্টো ফিফটি করেছিলেন ৩২ বলে, তবে এরপরই ধীরগতির হয়ে গেছেন একটু, কামিন্সের টানা তিন বল ডটের চাপ আলগা করতে গিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। নবি এরপর কৃষ্ণার বলে মাথার নিচের অংশে আঘাত পেয়েছিলেন, বিরতির পর প্রথম বলেই মেরেছিলেন চার। সে পর্যন্তই, এক বল পরই ক্যাচ তুলেছেন তিনি। এরপর বিজয় শঙ্কর, আব্দুল সামাদ মিলে তিনটি ছয় মেরেছেন, পান্ডে শেষ বলে গিয়ে মেরেছেন আরেকটি। শেষ ৪ ওভারে হায়দরাবাদ তুলেছে ৪৭ রান, কলকাতার চেয়ে ১২ রান বেশি। তবে এদিন তো পার্থক্যটা গড়েছে ম্যাচের প্রথম অংশই।