• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    শাহবাজের ৩ উইকেট ওভারের পর খেই হারিয়ে ফেলল হায়দরাবাদ, টানা দুই জয় বেঙ্গালুরুর

    শাহবাজের ৩ উইকেট ওভারের পর খেই হারিয়ে ফেলল হায়দরাবাদ, টানা দুই জয় বেঙ্গালুরুর    

    গ্রুপপর্ব, চেন্নাই (টস-হায়দরাবাদ/ফিল্ডিং) 
    রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ১৪৯/৮, ২০ ওভার (ম্যাক্সওয়েল ৫৯, কোহলি ৩৩, শাহবাজ ১৪, হোল্ডার ৩/৩০, রশিদ ২/১৮, ভুবনেশ্বর ১/৩০) 
    সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৪৩/৯, ২০ ওভার (ওয়ার্নার ৫৪, পান্ডে ৩৮, শাহবাজ ৩/৭, সিরাজ ২/২৫, হার্শাল ২/২৫)
    ব্যাঙ্গালোর ৬ রানে জয়ী 


    চিপকের ধীরগতির উইকেটে রান করা যতোটা কঠিন হয়ে উঠছে, রানতাড়ায় নাটক যেন জমছে ততোটাই। আগেরদিন রানতাড়ায় হুট করেই খেই হারিয়ে ফেলেছিল কলকাতা, এবার হারিয়ে ফেললো হায়দরাবাদ। ৮ উইকেট নিয়ে ২৪ বলে ৩৫ রান দরকার ছিল তাদের, দ্বিতীয় স্ট্র্যাটেজিক টাইম-আউটের পর শাহবাজ আহমেদের করা এক ওভারেই যেন ম্যাচ থেকে ছিটকে গেল তারা। সে উইকেটে ১ রান দিয়ে শাহবাজ ফেরালেন জনি বেইরস্টো, মনীষ পান্ডের পর আব্দুল সামাদকে। এরপর ১৯তম ওভারে প্রথম বলে মোহাম্মদ সিরাজকে মারা রশিদ খানের ছয়, শেষ ওভারে হার্শাল প্যাটেলের করা নো-বলে একটু আশা পেলেও পার হতে পারেনি হায়দরাবাদ। শাহবাজের ওই ওভার বাদ দিলে ম্যাচের পার্থক্য তাই গড়ে দিয়েছে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ৪১ বলে ৫৯ রানের ইনিংসই। যাতে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে ব্যাঙ্গালোর, টানা দ্বিতীয় ম্যাচ হারলো হায়দরাবাদ। 

    এ উইকেটে পরে ব্যাটিং করা কঠিন, কঠিন নেমে শট খেলাও। পরের ইনিংসে শুরুতেই ভুগেছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা, ৯ বলে ১ রান করে সিরাজকে স্ল্যাশ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। তবে অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে মনীষ পান্ডের জুটি হায়দরাবাদকে ধাতস্থ করেছিলেন, পাওয়ারপ্লেতেও তারা তুলেছিল ৫০ রান। দুজনের জুটিতে শেষ পর্যন্ত উঠেছে ৬৯ বলে ৮৩। কাইল জেমিসনের পেস কমিয়ে আনা ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ তুলে ওয়ার্নার ফিরলে ভেঙেছে সে জুটি, ৩৭ বলে ৫৪ রানের ইনিংসে ৭টি চারের সঙ্গে একটি ছয় মেরেছেন ওয়ার্নার।
     


    ওয়ার্নারের উইকেটে যে শুধু জুটি ভেঙেছে তা নয়, আরেকবার পরীক্ষার মুখে পড়েছে হায়দরাবাদের মিডল অর্ডার। সমানসংখ্যক বলে ১২ রান করার পর বেইরস্টো এরপর তুলে মারতে গিয়েছিলেন শাহবাজকে, হায়দরাবাদের জন্য বিভীষিকাময় সে ওভারে। এরপর মনীষ পান্ডে পড়ে গেছেন সেই চাপের ভেতর, হ্যাটট্রিকটা না হলেও শেষ বলে সামাদকে ফিরিয়ে স্বপ্নের ওভার পূর্ণ হয়েছে শাহবাজের। আগের ৩ ওভারে ১৪ রান দেওয়া সিরাজ ১৯তম ওভারে ১১ রান দিলেও শেষ ওভারে হার্শালের জন্য রেখেছিলেন ১৬ রান। ফুলটসে নো-এর সঙ্গে চার খাওয়ার পর ফ্রি-হিটে স্লো বাউন্সারে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন হার্শাল, রশিদ এরপর ডাবলস চুরি করতে গিয়ে রান-আউট হলে অলৌকিকের আশাও শেষ হয়ে গেছে হায়দরাবাদের। 

    এর আগে টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল হায়দরাবাদ, পাওয়ারপ্লেতে ব্যাঙ্গালোরও ১ উইকেট হারিয়েছিল, তুলেছিল ৪৭ রান। শুরুতে ভুবনেশ্বর কুমারের বলে দেভদূত পাডিক্কাল ফেরার পর শাহবাজ ফিরেছিলেন পাওয়ারপ্লের পরপরই। এ উইকেটে রান করতে এদিন ভুগেছেন বিরাট কোহলি, শুরুতেই ফিরে গেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। তবে ব্যাঙ্গালোরের জন্য যেন মুখ কামড়ে পড়ে ছিলেন ম্যাক্সওয়েল, ৬.২ ওভারে নামার পর তিনি আউট হয়েছেন একেবারে শেষ বলে গিয়ে। ২০১৬ সালের ৪ মে আইপিএলে এর আগে শেষ ফিফটি করেছিলেন ম্যাক্সওয়েল। 

    কোহলি মাঝে একটু গিয়ার বদলানোর চেষ্টা করলেও ফিরেছিলেন ২৯ বলে ৩৩ রান করেই, এরপর ম্যাক্সওয়েল ছাড়া শেষদিকে কাইল জেমিসনের ৯ বলে ১২ ছাড়া দুই অঙ্কের ইনিংসও নেই আর তাদের ইনিংসে। আগেরদিনের মতো এবারও দুর্দান্ত ছিলেন রশিদ খান, ৪ ওভারে তিনি দিয়েছেন মাত্র ১৮ রান, নিয়েছেন ২ উইকেট। 

    তবে ক্রিজে পড়ে থাকা ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে জেমিসন, আর শেষ ওভারে হোল্ডারের পিচ্ছিল ওভারে ভর করে শেষ ৩ ওভারে ৩৯ রান তুলেছিল ব্যাঙ্গালোর। শাহবাজের ওই ওভার, শেষের নাটকের আগে ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে সেসবই।