চাহারের সিম বোলিং, জাদেজার তীক্ষ্ণ ফিল্ডিং কম্বোতে উড়ে গেল পাঞ্জাব
গ্রুপপর্ব, মুম্বাই (টস-চেন্নাই/ফিল্ডিং)
পাঞ্জাব কিংস ১০৬/৮, ২০ ওভার (শাহরুখ ৪৭, রিচার্ডসন ১৫, চাহার ৪/১৩, ব্রাভো ১/১০, কারান ১/১২, মইন ১/১৭)
চেন্নাই সুপার কিংস ১০৭/৪, ১৫.৪ ওভার (মইন ৪৬, ডু প্লেসি ৩৬*, শামি ২/২১, আরশদিপ ১/৭)
চেন্নাই ৬ উইকেটে জয়ী
শুরুটা হয়েছিল দীপক চাহারের দারুণ এক অ্যাওয়ে সুইংয়ে। ফুললেংথের একটু পরে মিডল স্টাম্পে পড়ে নিপ করা ডেলিভারিটা স্কয়ারড আপ করেছিল মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে, তার ডিফেন্স ফাঁকি দিয়ে ভেঙেছিল স্টাম্প। অন্তত ভারতের মাটিতে এ ফরম্যাটে এমন স্কিলের দেখা তো পায়া যায় না নিয়মিত!
পরের দৃশ্যটা অবশ্য নিয়মিত দেখা যায়। চাহারের পরের ওভারে পয়েন্টের দিকে খেলে রান-নেব-কি-নেব-না করছিলেন ক্রিস গেইল ও লোকেশ রাহুল, বল গিয়েছিল রবীন্দ্র জাদেজার কাছে। অন্তত ফিল্ডার কে, সেটি মনে রেখে সিঙ্গেল না নেওয়ার পক্ষে একমত হওয়া উচিৎ ছিল তাদের, যেটি করেননি তারা। এক স্টাম্প দৃষ্টিসীমায় থাকলেও ডিরেক্ট থ্রোয়ে জাদেজা ফিরিয়েছেন রাহুলকে। এরপর ক্রিস গেইল পুশ করেছিলেন চাহারের বাইরের বল, একটু আগে যিনি পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছিলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের হাতে। তবে এবার সেখানে ছিলেন জাদেজা, যিনি ডাইভ দিলেন পাখির মতো, ধরলেন টুর্নামেন্টের শেষদিকে সেরা ক্যাচের হাইলাইটস রিলে প্রায় অবধারিতভাবেই জায়গা করে নেওয়ার মতো এক ক্যাচ। রাহুলের পর গেইলও তাই বলতে গেলে জাদেজারই শিকার।
ওয়াঙ্খেড়েতে চাহার-জাদেজা কম্বোতে সেই যে পা হড়কালো পাঞ্জাব, আর দাঁড়াতে পারল না তারা। চাহারের ১৩ রানে ৪ উইকেট, ওয়াঙ্খেড়ের উইকেট থেকে আদায় করা সিম মুভমেন্টের সঙ্গে জাদেজার অতিমানবীয়-কিন্তু-তার-কাছে-ব্যাপার-না ফিল্ডিংয়ে পাঞ্জাবকে উড়িয়েই দিয়েছে চেন্নাই।
এই মুহুর্তের নায়ক ছবিতে না থাকা রবীন্দ্র জাদেজাই
টসে জিতে এদিন ফিল্ডিং নিতে ভুল করেননি চেন্নাইয়ের হয়ে ২০০তম ম্যাচ খেলতে নামা এমএস ধোনি, এ নিয়ে ৮ ম্যাচেই টসে জিতে ফিল্ডিং নিলেন সবাই। চাহারের স্বপ্নালু বোলিং-ও থামেনি শীঘ্রই। তাকে দিয়ে টানা ৪ ওভার করিয়েছেন ধোনি। চাহারের বোলিং যতক্ষণে শেষ হয়েছে, পাঞ্জাব ততক্ষণে পরিণত হয়েছে ২৬ রানে ৫ উইকেটে, ৭ ওভারের মাঝেই। আগারওয়াল-গেইলের পর চাহারের শিকার নিকোলাস পুরান ও দিপক হুডা।
ঝাই রিচার্ডসনের সঙ্গে অকূল পাথারে একটু দিক খুঁজে ফিরেছেনে এরপর ঘরেরে ছেলে হয়েও চেন্নাইয়ের বিপক্ষেই খেলা শাহরুখ খান। মইন আলিকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে রিচার্ডসন ক্যাচ দিয়ে ফিরলেও শাহরুখ ছিলেন কিছুক্ষণ। ৩৬ বলে ৪৭ রানের ইনিংসে ভাল কিছুর ইঙ্গিতই দিয়েছেন তিনি, শেষ ওভারের প্রথম বলে গিয়ে কারানের বলে তুলেছেন ক্যাচ (সেটিও জাদেজার কাছেই)। পাঞ্জাবের ইনিংসে ছিল মাত্র ১০টি চার, সঙ্গে ২টি ছয়, যে দুটিই মেরেছিলেন শাহরুখ।
১০৯ রানের লক্ষ্যে ঠিক উড়ন্ত সূচনা করেনি চেন্নাই, রুতুরাজ গায়কোরাড় তো অতি সতর্ক থেকেও ১৬ বলে ৫ রান করে দিয়েছেন ক্যাচ। পাওয়ারপ্লেতে চেন্নাই তুলেছে ৩২ রান। অবশ্য ফাফ ডু প্লেসির সঙ্গে মইন আলির জুটি চেন্নাইকে পা হড়কাতে দেয়নি, মইন করেছেন ৩১ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে ৪৬ রান। হুট করেই যেন রান-রেটের কথা এরপর মাথায় এসেছে চেন্নাইয়ের, মোহাম্মদ শামির পরপর দুই বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ফিরেছেন সুরেশ রায়না ও আম্বাতি রাইডু। তাতে জয়টা একটু বিলম্বিতই হয়েছে শুধু চেন্নাইয়ের।
এ ম্যাচ দিয়ে প্রতি দলই খেললো দুটি করে ম্যাচ, হায়দরাবাদ ছাড়াই সবাই জিতলো একটি করে। আর দুটিই জিতেছে শুধু ব্যাঙ্গালোর। চেন্নাই এখন টেবিলে আছে ব্যাঙ্গালোরের পরই।