আত্মবিশ্বাসী মুম্বাইয়ে টানা তৃতীয় হার হায়দরাবাদের
গ্রুপপর্ব, চেন্নাই (টস-মুম্বাই/ব্যাটিং)
মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ১৫০/৫, ২০ ওভার (ডি কক ৪০, পোলার্ড ৩৫, রোহিত ৩২, বিজয় ২/১৯, মুজিব ২/২৯, খলিল ১/২৪)
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৩৭ অল-আউট, ১৯.৪ ওভার(বেইরস্টো ৪৩, ওয়ার্নার ৩৬, চাহার ৩/১৯, বোল্ট ৩/১৯)
মুম্বাই ১৩ রানে জয়ী
এ মৌসুমে টসে জিতে প্রথমবার ব্যাটিং নিলেন কোনো অধিনায়ক, রোহিত শর্মার সে সিদ্ধান্ত বুমেরাং হতে ধরেছিল প্রায়। প্রথম ইনিংসের অনেকটা সময় ধরেই মুম্বাইকে আটকে রেখেছিল হায়দরাবাদ, একটি জয়ের খোঁজে যারা নেমেছিল আগের ম্যাচ থেকে চার পরিবর্তন নিয়ে। শেষদিকে কাইরন পোলার্ডের ২২ বলে ৩৫ রানের ইনিংস মুম্বাইকে নিয়ে গেল ১৫০ পর্যন্ত, চিপকের উইকেটে যা লড়াই করার মতো অবশ্যই। রানতাড়ায় এরপর ৩ ওভারের ঝড়ে জনি বেইরস্টো হায়দরাবাদের প্রতি-আক্রমণের নেতৃত্ব দিলেন, তবে তিনি ফিরলেন হিট-উইকেটে। এরপর ডেভিড ওয়ার্নার হলেন রান-আউট। শেষদিকে বিজয় শঙ্কর একটু আশা জোগালেও মুম্বাইয়ের ডেথ বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতে পারেননি আর, ২ বল থাকতে অল-আউট হয়ে মৌসুমে টানা তৃতীয় ম্যাচ হারতে হয়েছে হায়দরাবাদকে। আর প্রথম ম্যাচ হারের পর টানা দুই ম্যাচ পিছিয়ে থেকেও জিতল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই, পয়েন্ট টেবিলে উঠে গেল শীর্ষে।
রানতাড়ায় হায়দরাবাদের শুরুটা ছিল একটু অদ্ভুত, প্রথম ২ ওভারে ৫ রান তোলার পর যেন হুট করেই খ্যাপাটে হয়ে উঠলেন বেইরস্টো। ট্রেন বোল্টের ওপর চড়াও হলেন, মারলেন চার-চার-ছয়-চার। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহ দিলেন মাত্র ২, মানে মাঝের ৩ ওভারে হায়দরাবাদ তুললো ৫০ রান। মুম্বাইকে প্রায় ছিটকে দেওয়ার মতো বেইরস্টোর ইনিংসটি শেষ হলো হিট-উইকেটে, ক্রিজের একটু বেশি ডিপে গিয়ে ক্রুনাল পান্ডিয়াকে স্লগের চেষ্টা করা বেইরস্টোর পা ভাঙল স্টাম্প। চাপ আবারও ফিরে এলো তাদের ওপর।
নতুন ব্যাটসম্যানের জন্য শট খেলা মোটেও সহজ নয় এ উইকেটে, মনিষ পান্ডের ৭ বলে ২ রানের ইনিংস দেখাল সেটি আরেকবার। ৯ম ওভারে প্রথমবার বোলিং করতে আসা রাহুল চাহারের শিকার তিনি। ওয়ার্নার আশা হয়ে ছিলেন হায়দরাবাদের, হারদিক পান্ডিয়ার ডিরেক্ট থ্রোয়ে থামতে হলো তাকে। আরেকদফা মোমেন্টাম পেয়ে গেল তাতে মুম্বাই, পান্ডের পর ভিরাট সিং ও অভিষেক শর্মাকে ফিরিয়ে চাহার ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রানে নিলেন ৩ উইকেট, টানা দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণ কার্যকর বোলিং করলেন তিনি।
১৬তম ওভারে ক্রুনাল পান্ডিয়াকে দুই ছয়ে বিজয় শঙ্কর শেষ আশা দিয়েছিলেন হায়দরাবাদকে, তবে ওপাশে পান্ডিয়ার আরেকটি ডিরেক্ট থ্রোয়ে আব্দুল সামাদের রান-আউট, বোল্টের স্কেলমাপা ইয়র্কারে রশিদ খানের এলবিডব্লিউ হওয়া চাপ বাড়িয়ে দিয়েছিল তার ওপর। বুমরাহকে টেনে মারতে গিয়ে এরপর বল আকাশে তুলেছেন তিনিও, হায়দরাবাদ কার্যত শেষ হয়ে গেছে সেখানেই।
প্রথমে ব্যাটিং করা মুম্বাই এর আগে বিনা উইকেটে পাওয়ারপ্লেতে তুলেছিল ৫৩ রান। তবে রোহিত শর্মা বা কুইন্টন ডি কক ক্রিজে বেশ কিছুক্ষণ কাটালেও বড় শটের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছেন। বিজয় শঙ্করকে টেনে মারতে গিয়ে ফিরেছেন রোহিত, ২৫ বলে ৩২ করে। ফিরতি ক্যাচ দিয়ে শঙ্করের দ্বিতীয় শিকার সূর্যকুমার যাদব। আর ডি কক ধরা পড়েছেন মুজিব-উর-রেহমানের বলে, ৩৯ বলে ৪০ করে।
আবারও ভার গিয়ে পড়েছে মুম্বাইয়ের পাওয়ার-হাউসের ওপর, তবে ইশান কিষান বা হারদিক পান্ডিয়া ডানা মেলতে পারেননি। কিষান তো ভুগছিলেন রীতিমতো, ২০ বলে করেছিলেন ১২ রান। মুজিবের ক্যারম বলে উইকেটের পেছনে বেইরস্টোর দারুণ ক্যাচের শিকার হয়ে যেন মুক্তি মিলেছে তার।
তবে পোলার্ডকে আটকাতে পারেনি হায়দরাবাদ। প্রথম ১৮ বলে ২০ রান করার পরের ৪ বলে তিনি করেছেন ১৫, ভুবনেশ্বর কুমারের করা শেষ ওভারে তুলেছেন ১৬। এ উইকেটে বড় শট নেমেই খেলা সহজ না হলেও তিনি দেখিয়েছেন, সময়মতো বুঝে উঠতে পারলে আর বিগ-হিটিংয়ের স্কিল থাকলে এখানেও কার্যকর কিছু করা যায়। পরে সেই বেইরস্টোও করেছিলেন, তবে অসময়ে ফিরে গিয়ে পোলার্ডকে ছাপিয়ে যাওয়া হয়নি তার।