বার্সা-রিয়ালসহ ১২ ক্লাবের বিদ্রোহী লিগের ঘোষণা, ইউয়েফার বহিষ্কারের হুমকি
ইউরোপিয়ান ফুটবলে বড় একটা বিপ্লব এখন সময়ের ব্যাপার। রোববার রাতে সেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এসে গেছে, ১২টি ক্লাব জানিয়েছে তারা ইউরোপিয়ান সুপার লিগে যোগ দিতে যাচ্ছে। এক বিবৃতিতে ক্লাবগুলো আলাদা আলাদাভাবে জানিয়েছে, তারা ফিফা ও ইউয়েফার সঙ্গে কাজ করবে এ নিয়ে। তবে এর মধ্যে ইউয়েফাসহ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, লা লিগা, সিরি আ কর্তৃপক্ষ বলেছে এমন কিছু হলে এই দলগুলোকে ঘরোয়া লিগ ও ইউয়েফার সব ধরনের প্রতিযোগিতা থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে। এমনকি এই লিগে অংশ নেওয়া কোনো ফুটবলার জাতীয় দলের হয়েও খেলতে পারবে না।
যে ১২টি ক্লাব যোগ দিয়েছে তারা হলো- রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, অ্যাটলেটিকো, ম্যান সিটি, ম্যান ইউনাইটেড, লিভারপুল, চেলসি, আর্সেনাল, টটেনহাম, জুভেন্টাস, ইন্টার মিলান, এসি মিলান। আরও তিনটি ক্লাব শিগগিরই যোগ দেবে বলে জানা যাচ্ছে। এক বিবৃতিতে ক্লাবগুলো জানিয়েছে, এই ১২টি ক্লাবের সঙ্গে আরও ৮টি ক্লাব মিলে ২০ ক্লাবকে নিয়ে আগস্ট থেকে শুরু হবে লিগ। দশটি দল দল দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলবে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ তিন দল খেলবে কোয়ার্টার ফাইনালে। শেষ আটের বাকি দুইটি দল আসবে গ্রুপের চতুর্থ ও পঞ্চম হওয়া দলগুলোর প্লে অফ থেকে। দুই লেগের নকআউট শেষে মে তে হবে ফাইনাল, যেটা হবে এক লেগের খেলা। ক্লাবগুলো জানিয়েছে, মধ্য সপ্তাহে এই লিগের পাশাপাশি ক্লাবগুলো ঘরোয়া লিগে খেলা চালিয়ে যাবে। নতুন এই সুপার লিগের প্রেসিডেন্ট রিয়াল সভাপতি পেরেজ, ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিবৃতি দিয়েছেন জুভেন্টাস চেয়ারম্যান আন্দ্রেয়া আগ্নেলি, ম্যান ইউনাইটেডের জোয়েল গ্লেজার।
উদ্যোগটা অবশ্য আজকের নয়, অনেক আগে থেকে। ইউরোপের বেশ কিছু শীর্ষ ক্লাব- যার মধ্যে রয়েছে রিয়াল, বার্সা, জুভেন্টাস, ম্যান ইউনাইটেডসহ ইংলিশ লিগ, লা লিগা বা সিরি আর শীর্ষ ক্লাবগুলো-তারা চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো আলাদা একটা লিগ গঠনের উদ্যোগ নিচ্ছিল। এর মধ্যে তাদের সেই প্রস্তাবিত সুপার লিগে ৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগও হচ্ছে বলে জানা গেছে। এই বিশেষ লিগে কেবল খেলতে পারবে ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোই। ১৫টি ক্লাব সেখানে স্থায়ীভাবে থাকবে, আর পাঁচটি বদল হবে। মূলত বর্তমান চ্যাম্পিয়নস লিগ ফরম্যাটের বাইরে এসে আরও বেশি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্যই অনেকটা এই উদ্যোগ। জানা যাচ্ছে, মূলত জুভেন্টাস মালিকের প্রস্তাবিত এই লিগে মূল উদ্যোগ নিয়েছেন রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। ইউরোপিয়ান বড় দলের মধ্যে বায়ার্ন, পিএসজি এখনো এই লিগে যোগ দেয়নি।
কিন্তু তার আগেই ইউয়েফা এই নীতির নিন্দা জানিয়েছে। কঠোর হুঁশিয়ারি জারি করে জানিয়েছে, এই লিগের সঙ্গে জড়িত সব ক্লাবকে সব ধরনের প্রতিযোগিতা থেকে বরখাস্ত করা হবে। ফুটবল যে সবার জন্য- এই লিগ তার পরিপন্থী। সেজন্য এই লিগে খেলা সব খেলোয়াড় সব ধরনের জাতীয় ও ঘরোয়া ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হবেন।