• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    ডু প্লেসিদের ঝড়ের পর রাসেল-কামিন্সও বাঁচাতে পারলেন না সাকিবহীন কলকাতাকে

    ডু প্লেসিদের ঝড়ের পর রাসেল-কামিন্সও বাঁচাতে পারলেন না সাকিবহীন কলকাতাকে    

    গ্রুপপর্ব, মুম্বাই (টস-কলকাতা /ব্যাটিং)

    চেন্নাই সুপারকিংস- ২২০/৩, ২০ ওভার ( ডু প্লেসি ৯৫*, রুতুরাজ ৬৪, মইন ২৫, চক্রবর্তী ১/২৭, নারাইন ১/৩৪) 

    কলকাতা নাইটরাইডারস- ১৯০/৩, ২০ ওভার ( কামিন্স ৬৬*, রাসেল ৫৪, কার্তিক ৪০,  চাহার ৪/২৯,  এনগিডি ৩/২৮ )

    চেন্নাই ১৮ রানে জয়ী


    দুর্দান্তভাবে ম্যাচে ফিরে আসলেও তীরে এসে তরী ডুবল কলকাতা নাইটরাইডারসের। ফাফ ডু প্লেসির অসাধারণ ৯৫* রানের পর দীপক চাহারের ৪ উইকেটে কলকাতার জন্য হার যখন সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিলো তখনই আন্দ্রে রাসেলের ৫৪ রানের পরে প্যাট্রিক কামিন্সের আগ্রাসী ৬৬* রানে জয়ের কাছাকাছিই নিয়ে গিয়েছিলেন দলকে, সঙ্গীর অভাবে ম্যাচ শেষ করে আসতে পারলেন না। সাকিবকে ছাড়াই মাঠে নেমে ভাগ্য তাই আর খোলেনি কলকাতার। 

    শুরুটা একদম যাচ্ছেতাই হয়েছিল কলকাতার। প্রথম ওভারেই দীপক চাহারের হালকা বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে থার্ড ম্যানে লুঙ্গি এনগিডির কাছে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানেই ফিরে গেছেন সুভমান গিল। পাওয়ারপ্লেতে ভয়ঙ্কর চাহার এদিনও ভেঙে দিয়েছেন টপ অর্ডার, একে একে নিতিশ রানা, অইন মরগান আর সুনীল নারাইনের উইকেট। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে এনগিডির বলে রাহুল ত্রিপাঠিও ফিরে গেলে পাওয়ারপ্লেতে ৪৫/৫ এ গিয়ে দাঁড়ায় কলকাতা! চাহারের বোলিং ফিগার হয়ে দাঁড়ায় ৪-০-২৯-৪!

    তবে সেখান থেকেই দীনেশ কার্তিককে সাথে নিয়ে আন্দ্রে রাসেল শুরু করেন প্রতিআক্রমণ, ২১ বলেই ফিফটি তুলে নেন ড্রে রাস। ৩ চার আর ৪ ছয়ে স্যাম কারানের বলে বোল্ড হওয়ার আগে মাত্র ২২ বলে রাসেল করেন ৫৪।  ১৫তম ওভারে ২৪ বলে ৪০ করে এনগিডির বলে কার্তিকও ফিরে গেলে ম্যাচে জয় কেবলই আনুষ্ঠানিকতা মনে হচ্ছিলো চেন্নাইয়ের জন্য। তবে নাটক যে তখনো বাকি ছিল!  কারানের করা ১৬ তম ওভারে ৪ ছয়ে কামিন্স তোলেন ৩০ রান! কামিন্সের এই আগ্রাসী রুপেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করে কলকাতা, মাত্র ২৩ বলেই ফিফটি তুলে নেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত আর সেটা হয়নি। দুই রান আউটের পর কামিন্স অপরাজিত থেকে গেছেন ৬৬ রানে, ট্র্যাজিক নায়ক হিসাবেই।

    তার আগে দুই ওপেনারে চেন্নাইয়ের শুরুটা হয়েছিলো দারুণ। আগের ম্যাচেই পাওয়ারপ্লেতে পেসারদের উপর চড়াও হয় ফর্মে ফেয়ার আভাস দিয়েছিলেন ফাফ ডু প্লেসি। কলকাতা অবশ্য বরুণ চক্রবর্তীকে দিয়ে শুরু করলেও খুব একটা লাভ হয়নি, ফাফ ধরে রেখেছিলেন তার স্ট্রোকপ্লে। অপর প্রান্তে থাকা রুতুরাজকে ঘিরে যা কিছু সংশয় ছিল তার জবাব এদিন তিনি দিয়েছেন ব্যাটেই। প্যাট কামিন্স আর প্রসিদ্ধ কৃষ্ণরা বাউন্সারে নাকাল করতে চেয়েছিলেন, সপাটে ব্যাট চালিয়ে তার বেশিরভাগই করেছেন মাঠছাড়া। বাউন্সারে যে তার কিছুটা দুর্বলতা ছিল তা এদিনের সাবলীল হুক-পুলে বোঝাই যায়নি।  পাওয়ারপ্লেতে দুজনের পিঞ্চ হিটিংয়ে আসে ৫৪ রান।

    রানে ফেরার দিনে বড় ইনিংস খেলার প্রতিজ্ঞাটা রুতুরাজের ব্যাটে ছিল স্পষ্ট। কয়েক ফুট এদিকে সেদিক হলেই বাউন্ডারিতে ক্যাচের শিকার হতেন হয়ত বেশ কয়েকবারই, তবে সেসবে এদিন আর নিজকে শট খেলা থেকে বিরত রাখেননি। নিজদের শক্তিমত্তার উপর ভরসা রাখাটা কাজে দিয়েছে দারুনভাবে, ৩৩বলেই রুতুরাজ তুলে নিয়েছেন ফিফটি। মাঠের বড় দিকটায় ছয় মারতে গিয়েই অবশ্য হয়েছে কাল, কামিন্সের তালুবন্দি হয়ে ফিরেছেন। তার আগে ৪২ বলে করেছেন ৬৪ রান।

    অপর প্রান্তে থাকা ডু প্লেসিও নিজের ফিফটি তুলে নিয়েছিলেন ৩৫ বলেই। তবে ফিফটির পরে খেলছিলেন একটু রয়ে শয়েই। দারুণ ফর্মে থাকা মইন আলি নেমেই আক্রমণের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন। কৃষ্ণর করা মাত্র ১০৮কিমি গতির বল যতটা স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে লং অন দিয়ে মাঠছাড়া করলেন তাতে মনে হচ্ছিলো আজ মইন ঝড়ের  দেখা মিলবে। পরের ওভারেই েই মৌসুমে প্রথম মাঠে নামা নারাইনের উপর চড়াও হয়ে মেরেছিলেন দারুণ দটি চার-ছয়। তবে তাকে পড়ে ফেলেই পরের বলটার লেংথ একটু পিছে টেনে আনলে আর ব্যাটে বলে সংযোগ হয়নি মইনের। মাত্র ১২ বলে ২৫ রানের ক্যামিও খেলে নিজের ভুমিকাটা অবশ্য পালন করে তবেই ফিরেছেন।

    নিজেকে চারে নামানো অধিনায়ক ধোনি ব্যাট চালাচ্ছিলেন প্রায় প্রতি বলেই। কৃষ্ণর করা ১৮তম ওভারে দারুণ এক ছয়ে যেন পুরনো দিনের কথাই মনে করিয়ে দেন ‘থালা’। অপর প্রান্তে থাকা ডু প্লেসি এতক্ষণ দর্শক হিসাবে থেকে ৫০ বলে ৬৯ রানে ব্যাট করছিলেন, শেষ দুই ওভারেই রুপ পরিবর্তন করে রুদ্রমূর্তি ধারন করেন তিনি। উইকেটের অন্য দিক থেকে এসে ওয়াইড ইয়র্কারের যেই পরিকল্পনা রাসেলের ছিল তা ভেস্তে দিয়ে বলে লাইনে শরীর নিয়ে গিয়ে দারুণভাবে মেরেছেন সব চার। তবে আসল ঝড়টা গেছে কামিন্সের ওপর, তার করা শেষ ওভারে দারুণ কয়েকটা ছয়ে ডু প্লেসি করেছেন ২০ রান, নিজে অপরাজিত থেকে গেছেন ৯৫ রানে।