করুনারত্নের ২৩৪*, ডি সিলভার ১৫৪*-তে বাংলাদেশের কিছুই না পাওয়ার দিন
১ম টেস্ট, পাল্লেকেলে (টস- বাংলাদেশ/ব্যাটিং)
৪র্থ দিন, স্টাম্পস
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস ৫৪১/৭ ডিক্লে., ১৭৩ ওভার (শান্ত ১৬৩, মুমিনুল ১২৭, তামিম ৯০, মুশফিক ৬৮*, লিটন ৫০, ভিশ্ব ফার্নান্ডো ৪/৯৬, কুমারা ১/৮৮, লাকমাল ১/৮১, ধনঞ্জয়া ১/১৩০)
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ৫১২/৩, ১৪৯ ওভার (করুনারত্নে ২৩৪*, ডি সিলভা ১৫৪*, থিরিমান্নে ৫৮, তাসকিন ১/৯১, তাইজুল ১/১৩৬, মিরাজ ১/১২৩)
শ্রীলঙ্কা ২৯ রানে পিছিয়ে
দিমুথ করুনারত্নের ২৩৪*, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার ১৫৪*, দুজনের ৩২২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে পাল্লেকেলেতে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সঙ্গে স্কোরের ব্যবধান ২৯ রানে নামিয়ে এনেছে শ্রীলঙ্কা। শেষ সেশনে আলোকস্বল্পতায় খেলা হয়েছে ১৫ ওভার, তবে এর আগে প্রায় পুরো দিনই দাপট দেখিয়েছেন করুনারত্নে-ডি সিলভা। চতুর্থ দিন বাংলাদেশ উইকেটের দেখা পায়নি কোনও, শ্রীলঙ্কা এদিন তুলেছে ওভারপ্রতি ৩.৭২ রান। প্রথম ছয় সেশনের একটু বেশি সময় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা যে দাপট দেখিয়েছিলেন, পরের ছয় সেশনে সেটিরই জবাব দিচ্ছেন শ্রীলঙ্কানরা, একটু বেশি করেই।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪র্থ উইকেট জুটিতে শ্রীলঙ্কার রেকর্ড ভেঙে গেছে আরও আগেই, যে কোনো প্রতিপক্ষের সঙ্গেই ৪র্থ উইকেটে এটি এখন শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি। ২০১৮ সালের পর এই প্রথম কোনো উইকেটে শ্রীলঙ্কার জুটি পেরুলো ৩০০। আগেরদিন ৮৫ রানে অপরাজিত ছিলেন করুনারত্নে, ডি সিলভা অপরাজিত ছিলেন ২৬ রানে। প্রথম সেশনেই ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন করুনারত্নে, ফিফটি করেছিলেন ডি সিলভা। পরের সেশনে দেড়শ পেরিয়ে গেছেন প্রথমজন, পরেরজন সেঞ্চুরি। আর শেষ সেশনে এসে চতুর্থ শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন করুনারত্নে- মারভান আতাপাত্তু, মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারার পর, ডি সিলভার পূর্ণ হয়েছে দেড়শ।
দিনের শুরুতে আঁটসাঁট বোলিং করেছিল বাংলাদেশ, তবে সেটি ধরে রাখতে পারেননি তারা। আর এ উইকেটের প্রকৃতি অনুযায়ী সাফল্য পেতে শুধু সেসব যথেষ্ট নয়, ব্যাটসম্যানদের ভুল বা একটু আলগা শটও প্রয়োজন-- করুনারত্নে বা ডি সিলভা সেসব খুব একটা করেননি, তাদের কৃতিত্বটাও তাই সেখানে বেড়ে যাচ্ছে আরও। এবাদত-তাইজুলকে দিয়ে শুরু করিয়েছিলেন এদিন মুমিনুল, করুনারত্নেকে এবাদট বিট করেছেন, স্লিপের দিকে এজ ড্র করেছেন- তবে কোনোটিই যথেষ্ট হয়নি উইকেট পাওয়ার জন্য। ৮২তম ওভারে দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েছিল বাংলাদেশ, তাসকিনের বলে প্রায় ইনসাইড-এজে বোল্ড হতে ধরেছিলেন ডি সিলভা। এরপরের ওভারে আবু জায়েদ রাহির বলে করুনারত্নের বিপক্ষে একটা রিভিউও করেছিলেন মুমিনুল। তবে কাজে আসেনি সেটি, ইমপ্যাক্ট ছিল বাইরে।
করুনারত্নে ৯৯ রানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ৮ বল, এরপর ডাবলস নিয়ে পূর্ণ করেছেন সেঞ্চুরি। মাইলফলকে যাওয়ার পর থেকে বেশ দ্রুতগতিতে রান তুলেছেন তিনিও, ১০০-এর পরের ১৭২ বলে তিনি করেছেন ১৩৩ রান।দিনের প্রথম বাউন্ডারির জন্য ৮৭তম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন করুনারত্নে-ডি সিলভারা, তবে এরপর থেকেই চড়াও হয়েছেন তারা, যার শুরুটা হয়েছিল করুনারত্নের তাসকিনকে মারা তিন চার দিয়ে।
দ্বিতীয় সেশনের শুরু থেকে করুনারত্নে-ডি সিলভা ছিলেন বেশ আক্রমণাত্মক, লাঞ্চের পর প্রথম ঘন্টায় ১৩ ওভারেই তারা তুলেছিলেন ৬৭ রান। হুটহাট বাউন্স, রাফে পড়ে বড় টার্নের দেখা মিলেছে স্পিনারদের জন্য, তবে সেসব যথেষ্ট হয়নি করুনারত্নে-ডি সিলভার জুটি ভাঙার জন্য। ৭৪ রান নিয়ে সেশন শুরু করা ডি সিলভা সেঞ্চুরি করতে বেশি সময় নেননি, ইনিংসের দ্বিতীয় ফিফটি তিনি পূরণ করেছেন মাত্র ৫৮ বলে। তাসকিন আহমেদকে পুল করে চার মেরে পূর্ণ করেছেন ক্যারিয়ারের ৭ম সেঞ্চুরি।
চা-বিরতির পর ৫ ওভার খেলা হয়েছিল, এরপরই আলোকস্বল্পতায় বন্ধ ছিল সেটি প্রায় আধাঘন্টা। ডাবল সেঞ্চুরি থেকে ৮ রান দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তখন করুনারত্নে, আবার খেলা শুরু হওয়ার পর দ্বিতীয় ওভারেই তাসকিনকে দুই চারে পৌঁছে গেছেন ডাবল সেঞ্চুরিতে। চার মেরে দেড়শ পূর্ণ করেছেন ডি সিলভাও। এরপর আর ১০ ওভার হয়েছে খেলা, মিরাজের সঙ্গে রাহির বদলে এক ওভারে তাসকিনকে আনতে চেয়েছিলেন মুমিনুল, তবে আম্পায়াররা আলোকে পর্যাপ্ত মনে করেননি আর। এক দিন বাকি থাকতে টেস্টে এখনও দুই ইনিংসই সম্পন্ন হয়নি, ড্র ছাড়া অন্য কোনো ফল আসাটা তাই হবে অভাবনীয় কিছুর মতোই।