করুনারত্নে-থিরিমান্নের জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের খাটুনির দিন
দ্বিতীয় টেস্ট, পাল্লেকেলে (টস-শ্রীলঙ্কা/ব্যাটিং)
প্রথম দিন, স্টাম্পস
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ২৯১/১, ৯০ ওভার (করুনারত্নে ১১৮, থিরিমান্নে ১৩১*, ফার্নান্ডো ৪০*, শরিফুল ১/৫১)
দিমুথ করুনারত্নের ১১৮, লাহিরু থিরিমান্নের ১৩১*, দুজনের ২০৯ রানের ওপেনিং জুটিতে ভর করে পাল্লেকেলের ব্যাটিং-সহায়ক উইকেটে দাপুটে দিন কাটিয়েছে শ্রীলঙ্কা। শুরুতে একটা জীবন পেয়েছিলেন করুনারত্নে, ২৮ রানে। এরপর প্রথম দুই সেশন উইকেটশূন্য কাটানোর পর শুধু তার উইকেটই নিতে পেরেছে বাংলাদেশ। ওশাদা ফার্নান্ডোর সঙ্গে ৮২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেছেন থিরিমান্নে, ফার্নান্ডো অপরাজিত আছেন ৪০ রানে।
শেষ সেশনে এসে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেকথ্রু দিয়েছেন অভিষিক্ত শরিফুল ইসলাম, চা-বিরতির আগেই টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করা করুনারত্নে কাট করতে গিয়ে হয়েছিলেন বটম-এজড। সে সিদ্ধান্ত অবশ্য গিয়েছিল টিভি আম্পায়ারের কাছে, তবে লিটন ক্যাচ নিয়েছিলেন ঠিকঠাকই।
এছাড়া তৃতীয় সেশনেও শ্রীলঙ্কানরা দাপট দেখিয়েছে, আবু জায়েদ রাহি একটু রিভার্স সুইংয়ের আভাস পেয়েছিলেন বলে দ্বিতীয় নতুন বল বাংলাদেশ নিয়েছে ৮৬তম ওভারে গিয়ে। শেষ পর্যন্ত এ সেশনে মাঝেরটির থেকে একটু কম রান উঠেছে- ৩২ ওভারে ১০৩।
পাল্লেকেলের উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য এবারও দারুণ, টসে জিতে অনুমিতভাবেই ব্যাটিং নিয়েছিলেন করুনারত্নে, মুমিনুল জানিয়েছিলেন, তিনিও করতেন একইরকম। প্রথম ঘন্টায় বেশ আঁটসাঁট বোলিং করেছিল বাংলাদেশ, প্রথম ৯ ওভারের মাঝেই ৪ জন বোলার এনেছিলেন মুমিনুল। ৯ম ওভারে এসেছিলেন অভিষিক্ত শরিফুল ইসলাম, এবাদত হোসেনের জায়গায় খেলছেন যিনি। এমন কন্ডিশনে অভিষেকটা এই তরুণের এখন পর্যন্ত হয়ে থেকেছে বেশ আশাজাগানিয়া হয়েই।
শুরুতে আবু জায়েদের বলে করুনারত্নের বিপক্ষে একটা রিভিউও নিয়েছিল বাংলাদেশ, অফস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়েছিলেন তিনি। তবে আল্ট্রা-এজে দেখায়নি কিছুই। রাহি প্যাড বরাবরও করেছেন, তবে ইনসাইড-এজ বিট করতে পারেননি, সেটি করলেও বল পড়েছে লাইনের বাইরে। শরিফুল অফস্টাম্পের বাইরের চ্যানেল ধরে ছিলেন বেশ ধারাবাহিক। তাসকিন শুরুতে সুযোগ তৈরির চেষ্টা করে গেছেন। সব মিলিয়ে প্রথম ঘন্টায় ২২ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা, সে সময়ে এসেছিল মাত্র একটি বাউন্ডারি।
তবে ড্রিংকসের পরই শরিফুলের ওপর চড়াও হয়েছেন করুনারত্নে, সে ওভারে এসেছে দুটি চার। এরপর রাহি বা তাসকিনও দিয়েছেন বাউন্ডারি। তবে ২০তম ওভারেই এসেছিল সবচেয়ে বড় সুযোগটি। ওভার দ্য উইকেট থেকে বেশ অ্যাঙ্গেল করে বেড়িয়ে যাওয়া তাসকিনের বলে এজড হয়েছিলেন করুনারত্নে, ওয়াইড স্লিপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত নিতে পারেননি সেটি। পরের ওভারে থিরিমান্নের এজ ড্র করেছিলেন তাসকিন, তবে এবার সেটি গেছে গালিতে থাকা মিরাজের নাগালের বাইরে দিয়েই।
প্রথম সেশনে বাংলাদেশ বোলাররা যে একটু উজ্জীবিত ছিলেন, ক্রমান্বয়ে কমছে সেসব। দুই বাঁহাতির বিপক্ষে তাইজুল ইসলামকে আক্রমণে আনতে ৩৮তম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন মুমিনুল হক। জীবন পাওয়া করুনারত্নে পেয়েছেন টানা দ্বিতীয় ও ক্যারিয়ারে ১২তম সেঞ্চুরি। ১১১ বলে ফিফটি করেছিলেন, সেঞ্চুরিতে গেছেন ১৬৫ বলেই। শেষ পর্যন্ত মেরেছেন ১৫টি চার।
থিরিমান্নে অবশ্য করুনারত্নের মতো গিয়ার বদলাননি, ১০২ বলে ফিফটি পর সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন ২১২ বলে। ৯৯ রানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ৯ বল, তাসকিনের সামনে একটু নার্ভাসও দেখাচ্ছিল তাকে। তবে নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছেন ঠিকই। দিনের শেষ ওভারে থিরিমান্নেকেও আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা, শরিফুলের বলেই। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেছেন থিরিমান্নে, ইমপ্যাক্ট আম্পায়ারস কল হলেও উইকেট মিস করে যেত বলে দেখিয়েছে বল ট্র্যাকিং।