ডি কক, মুম্বাইকে আটকাতে পারলেন না মোস্তাফিজরা
গ্রুপপর্ব, দিল্লি (টস- মুম্বাই/ ফিল্ডিং)
রাজস্থান রয়্যালস ১৭১/৪, ২০ ওভার ( স্যামসন ৪২, বাটলার ৪১, দুবে ৩৫, চাহার ২/৩৩, বুমরাহ ১/১৫, বোল্ট ১/৩৭)
মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ১৭২/৩, ১৮.৩ ওভার ( ডি কক ৭০*, ক্রুনাল ৩৯, পোলার্ড ১৬*, মরিস ২/৩৩ , মোস্তাফিজ ১/৩৭)
মুম্বাই ৭ উইকেটে জয়ী
কুইন্টন ডি ককের ফর্মে ফেরার দিনে বড় জয়ে দুই ম্যাচ হারার পর আবারও জয়ের ধারায় ফিরেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই। জস বাটলার ও ইয়াশাসভি জাইসওয়ালের দারুণ ওপেনিং জুটির পরে সাঞ্জু স্যামসন ও শিভাম দুবে বড় স্কোরের ইঙ্গিত দিলেও মুম্বাইয়ের দারুণ ডেথ বোলিংয়ে শেষে গিয়ে একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি রাজস্থান, থেমেছে ১৭১ রানে। জবাবে ডি ককের ৫০ বলে ৭০* রানের ইনিংসে অনায়াস জয় পেয়েছে মুম্বাই। প্রথম স্পেলে বেশ খরুচে হলেও ফিরে এসে বেশ ভাল করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান, দুর্দান্ত ইয়র্কারে নিয়েছেন ক্রুনাল পান্ডিয়ার উইকেট। তবে তার শেষদিকের প্রচেষ্টা ম্লান করে ২০২০ মৌসুম থেকে রানতাড়ায় মুম্বাইয়ের জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেই ফিরেছেন ডি কক।
১৭২ রানের লক্ষ্য যে দিল্লিতে খুব একটা বড় হওয়ার কথা না সেটা গতকালকের ম্যাচ থেকেই কিছুটা আঁচ করা গিয়েছিলো। মুম্বাইয়ের রানতাড়ার সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করে দারুণ শুরু করে কুইন্টন ডি কক ও রোহিত শর্মা জুটি। রোহিত কিছুটা সাবধানী থাকলেও ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে দারুণ সব শট খেলতে থাকেন ডি কক, মোস্তাফিজের করা প্রথম ওভারে স্কুপ করে মারা ছয় তারই একটি। ডি ককের ঝড়ো শুরুতে তাই প্রথম স্পেলে একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি মোস্তাফিজ। তবে পাওয়ারপ্লের শেষ বলেই রোহিতকে ফিরিয়েছেন ক্রিস মরিস, ১৪ রান করে চেতন সাকারিয়ার হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান মুম্বাই অধিনায়ক। পাওয়ারপ্লেতে উঠেছিল ৪৯ রান।
মোস্তাফিজ তার দ্বিতীয় ওভারে অবশ্য ডি ককের বিপক্ষে এলবিডব্লিউয়ের জন্য জোরালো আবেদন জানিয়েছিলেন। তবে রাজস্থানের রিভিউ ব্যর্থ হয়েছে ডি ককের ইনসাইড-এজ হওয়াতে। একটু পরেই অবশ্য সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে গেছেন সূর্যকুমার যাদব, মরিসের বলেই। দ্রুত দুই উইকেটের পতনের পরেও ডি ককের আক্রমণ একেবারেই থামেনি। এদিন চারে নেমে ক্রুনাল পান্ডিয়া তাকে দিয়েছেন যোগ্য সঙ্গ, নিজেও বাজে বল পেলে একেবারেই ছেড়ে কথা বলেননি। শট খেলার স্বাধীনতা পেয়ে ৩৫ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন ডি কক। দারুণ খেলতে থাকা এই জুটি অবশ্য ভেঙেছে মোস্তাফিজের হাত ধরেই। এর আগে অবশ্য ২৬ বলে ৩৯ রান করে তাকে চারে নামানোর সিদ্ধান্ত যথাযথ প্রমাণ করেছেন ক্রুনাল। এরপরে অবশ্য কোন বিপদ ঘটতে দেননি ডি কক। পোলার্ডের ১৬ রানের অপরাজিত ক্যামিওর পাশাপাশি ৭০ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের বন্দরে ফিরিয়ে তবেই ফিরেছেন ডি কক।
এর আগে বাটলার ও জাইসওয়াল দারুণ শুরুতে রাজস্থানের পাওয়ারপ্লেতে তুলেছিলেন ৪৭ রান। জয়ন্ত যাদবের ওপর চড়াও হলেও আরেক স্পিনার রাহুল চাহারের বিপক্ষে বিপত্তি ঘটেছে বাটলারের, তার ভাসিয়ে দেওয়া বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে অবশ্য ৩২ বলে ৪১ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন। জাইসওয়ালও থেমেছেন ২০ বলে ৩২ রান করে, চাহারের বলেই।
দুজন থিতু ব্যাটসম্যানের বিদায়ের প্রভাব অবশ্য পড়েনি অধিনায়ক স্যামসনের কল্যাণে, শিভাম দুবেকে নিয়ে দারুণ জুটি গড়ে দলকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তবে সেই শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি দুজনের কেউই, বরং করতে দেননি মুম্বাইয়ের বোলাররা। বোল্টের দারুণ ইয়র্কারের কোন জবাব ছিল না স্যামসনের, ২৭ বলে ৪২ করে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। পুরো ম্যাচ জুড়ে অসাধারণ বল করা জাসপ্রিত বুমরাহ তার শেষ ওভারে পেয়েছেন দুবের উইকেট, লো ফুল টসে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে দুবে করেছেন ৩১ বলে ৩৫ রান। উইকেটে নতুন এসে একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি ডেভিড মিলার ও রিয়ান পরাগ। শেষ পাঁচ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে মুম্বাই বোলাররা রাজস্থানকে তাই আটকে দিতে পেরেছিল এ মাঠে ‘পার’ স্কোরের বেশ আগেই।