শর ৪১ বলে ৮২, কলকাতাকে পাত্তাই দিল না দিল্লি
গ্রুপ পর্ব, আহেমাদাবাদ ( দিল্লি/ ফিল্ডিং)
কলকাতা নাইটরাইডারস ১৫৪/৬, ২০ ওভার ( রাসেল ৪৫*, গিল ৪৩, ত্রিপাঠি ১৯, ললিত ২/১৩, অক্ষর ২/৩২, আভেশ ১/৩১)
দিল্লি ক্যাপিটালস ১৫৬/৩, ১৬.৩ ওভার (শ ৮২, ধাওয়ান ৪৬, কামিন্স ৩/২৪ )
দিল্লি ৭ উইকেটে জয়ী
পৃথ্বী শয়ের ৪১ বলে ৮২ রানের আগ্রাসী-অথচ-কতো-ক্ল্যাসিক ধরনের ইনিংস, শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে তার ১৩২ রানের ওপেনিং জুটিতে কলকাতা নাইট রাইডারসকে নিয়ে ছেলেখেলা করে জিতল দিল্লি ক্যাপিটালস। জন্মদিনে আন্দ্রে রাসেলের শেষদিকের আগ্রাসনে কলকাতা লড়াই করার মত সংগ্রহ পেয়েছিল, কিন্তু শয়ের আগ্রাসনে ম্লান হয়ে গেছে সেসব। সাকিব আল হাসান খেলেননি এদিনও, তবে তার জায়গায় খেলা সুনীল নারাইন এদিন ছিলেন বিবর্ণ- চারে নেমে গোল্ডেন ডাকের পর ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে তিনি থেকেছেন উইকেটশূন্য। কলকাতার ১৫৫ রানের লক্ষ্য দিল্লি পেরিয়ে গেছে ৭ উইকেট ও ২১ বল বাকি রেখেই।
আহমেদাবাদে ১৫৫ রানের লক্ষ্য বড় না হলেও হিসাব করেই হয়ত খেলতে হত দিল্লিকে। তবে শ এসব হিসাবের বালাই না করে নেমেই রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছেন। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সাবেক সতীর্থ শিভাম মাভির করা প্রথম ওভারেই অসাধারণ সব শট খেলে ছয় বলে ছয় চারে শুরু করেছেন শ, প্রথম বল ওয়াইড মিলিয়ে সে ওভারে উঠেছে ২৫ রান। এরপর কাউকেই ছেড়ে কথা বলেননি শ, অন্য প্রান্তে ধাওয়ান দর্শক হিসাবে উপভোগ করাটাই বেছে নিয়েছিলেন। শয়ের আগ্রাসনে পাওয়ারপ্লেতে ৬৭ রান তুলেছিল দিল্লি, তবে তিনি থামেননি শীঘ্রই।
মাত্র ১৮ বলে পূর্ণ করেছেন ফিফটি, যা এই আসরের দ্রুততম, দিল্লির হয়ে যৌথভাবে দ্রুততম। ধাওয়ানও বাজে ডেলিভারিতে শট খেলেছেন, তবে শয়ের আক্রমণেই কিনা উদ্বুদ্ধ হয়ে চড়াও হতে গিয়ে ফিরে গেছেন তিনি, অফ স্টাম্পের উপর সরে এসে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে প্যাট কামিন্সের সোজা বল মিস করে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরার আগে ৪৭ বলে করেছেন ৪৬ রান। দ্রুত ম্যাচ শেষ করতে গিয়ে এরপরে ফিরে গেছেন শও, কামিন্সকে মাঠছাড়া করতে গিয়ে নিতিশ রানার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। কামিন্সকে কলকাতা অধিনায়ক অইন মরগান আক্রমণে এনেছিলেন সবার শেষে, ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে সে সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধই করেছেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে একটু রয়েসয়েই খেলেছেন দুই কলকাতা ওপেনার। চতুর্থ ওভারে স্পিনার আসার পরই শুরু হয়েছে কলকাতার বিপর্যয়। অক্ষর প্যাটেলকে ছয় মারার পরের বলে ক্রিস ছেড়ে বেরিয়ে এসে মারতে গেলে স্লাইডারে পরাস্ত হয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়েছেন রানা, পাওয়ারপ্লেতে আর কোনো উইকেট না হারালেও রাহুল ত্রিপাঠিকে সাথে নিয়ে শুবমান গিল স্কোরকে নিয়ে গিয়েছিলেন ৪৫ পর্যন্ত।
গিল এদিন অবশ্য শুরুতে একটু সাবধানী ছিলেন, পরে স্ট্রোকপ্লে বেড়েছে তার। তবে দ্রুত রান তোলার তাড়ায় মার্কাস স্টোইনিসকে এক চারের পর আবারও উড়িয়ে মারতে গিয়ে ত্রিপাঠি ফিরেছেন ১৯ রানে। সে ক্যাচ নেওয়া ললিত যাদবের এক ওভারেই মোমেন্টাম আরও ঝুঁকে যায় দিল্লির দিকে, তিন বলের ব্যধানে ফেরান মরগান-নারাইনকে। সে চাপ সামলাতে না পেরে আভেশ খানের কাটার আকাশে তুলে ৩৮ বলে ৪৩ রান করে ফেরেন গিলও। দীনেশ কার্তিকের উইকেট কলকাতার চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে আরও। মাঝের ওভারগুলোতে ললিত-অক্ষরের স্পিনজুটির কোন জবাবই এদিন দিতে পারেনি কলকাতা।
বেশ কিছুক্ষণ উইকেটে থাকা বার্থডে বয় রাসেল অবশ্য শেষ দুই ওভারে নিজের পেশীশক্তির প্রদর্শনী দেখান, কাগিসো রাবাদার করা ১৯তম ওভারে নেন ১৯ রান। শেষ দুই ওভারে ৩১ রানে ভর করে কলকাতা গিয়েছিল ১৫৪ রান পর্যন্ত, রাসেল অপরাজিত ছিলেন ২৭ বলে ৪৫ রানে। তবে শ সে স্কোরকেও পরে বানিয়েছেন ছেলেখেলাই।