• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    হারপ্রিতের স্বপ্নের রাতে পাঞ্জাবে বড় হার ব্যাঙ্গালোরের

    হারপ্রিতের স্বপ্নের রাতে পাঞ্জাবে বড় হার ব্যাঙ্গালোরের    

    গ্রুপ পর্ব, আহেমেদাবাদ (টস- ব্যাঙ্গালোর/ফিল্ডিং) 
    পাঞ্জাব কিংস ১৭৯/৫, ২০ ওভার ( রাহুল ৯১*, গেইল ৪৬, হারপ্রিত ২৫*, জেমিসন ২/৩২, স্যামস ১/২৪, চেহেল ১/৩৪)
    রয়্যাল চ্যালেঞ্জারস ব্যাঙ্গালোর ১৪৫/৮, ২০ ওভার (কোহলি ৩৫, পাতিদার ৩১, প্যাটেল ৩১, হারপ্রিত ৩/১৯, বিষ্ণয় ২/১৭, শামি ১/২৮) 
    পাঞ্জাব কিংস ৩৪ রানে জয়ী


    অধিনায়ক লোকেশ রাহুলের ৫৭ বলে ৯১ রানের অপরাজিত ইনিংসের পর মৌসুমে প্রথম নামা হারপ্রিত ব্রারের স্বপ্নের রাতে ব্যাঙ্গালোরের বিপক্ষে ৩৪ রানের বড় জয় পেয়েছে পাঞ্জাব কিংস। নিজেদের ব্যাটিংয়ের সময়ে মাঝের ওভারগুলোতে খেই হারিয়ে ফেলা পাঞ্জাবকে প্রথমে হারপ্রিত বড় স্কোর গড়ে দিতে সহায়তা  করেছেন ১৭ বলে ২৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে, তবে আসল কাজটা করেছেন বোলিংয়ে। বিরাট কোহলি, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আর এবি ডি ভিলিয়ার্সেকে ৭ বলের ব্যবধানে ফিরিয়ে একাই ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়েছেন বলতে গেলে, কোটার চার ওভার পূর্ণ করে এক মেইডেনে দিয়েছেন মাত্র ১৯ রান। 
       
    টসে হেরে ব্যাটিংয়ে রাহুলের ওপেনিং সঙ্গী হিসেবে আজ নেমেছিলেন প্রাভসিমরান সিং, সুবিধা অবশ্য করতে পারেননি তিনি। পাওয়ারপ্লে ব্যাঙ্গালোরের দিকেই ঝুঁকে থাকলেও কাইল জেমিসনের করা শেষ ওভারেই মোড় ঘুরিয়ে দেন ক্রিস গেইল, পাঁচটি চারে ২০ রানের ওভারের পর পাওয়ারপ্লেতে ওঠে ৪৯ রান।
     
    রাহুল কিছুটা ধীরগতির থাকলেও গেইলের আক্রমণে পাঞ্জাবের রান রেটে তাই বড় সমস্যা মনে হয়নি তখন। অবশ্য স্যামসের দারুণ এক বাউন্সারে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে গেইল ফিরেছেন ২৪ বলে ৪৬ রান করে। নিকোলাস পুরানের দুঃসহ মৌসুমে তার হতাশা আরও বাড়িয়ে তাকে চতুর্থবার শূন্য রানে ফিরিয়েছেন জেমিসন। আক্রমণে এসেই প্রথম ওভারেই শাহবাজ আহমেদ ফিরিয়েছেন দীপক হুডাকে। গেইলের কাছে নাস্তানাবুদ হওয়া যুজভেন্দ্র চেহেল দারুণ শেষ ওভারে বোল্ড করেছেন শাহুরুখ খানকে। মাঝে ১১.২ ওভার থেকে ১৭.২ ওভার পর্যন্ত হয়নি কোনো বাউন্ডারিই।

    তবে থিতু হওয়া রাহুল আরেকবার বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন তিনি স্ট্রাইক রেটের চেয়ে উইকেটে টিকে থাকাকে বেশি প্রাধান্য দেন। ৩৫ বলে ফিফটি করেছেন, প্রথম ৩৩ বলে করেছিলেন ৪৩, পরের ২৪ বলে ৪৮। রাহুলের শেষদিকের ঝড়ের সঙ্গে হারপ্রিতের ক্যামিও মিলিয়ে শেষ তিন ওভারে ৪৭ রানে পাঞ্জাব গিয়ে থেমেছে ১৭৯ রানে। 

    আহমেদাবাদে শিশিরের প্রভাব থাকার কথা থাকলেও এদিন ছিল না তেমন, ১৮০ রানের লক্ষ্যে তাই শুরু থেকেই চড়াও হতে চেয়েছিলেন বিরাট কোহলিরা। তবে ফেরার দিনে রাইলি মেরেডিথের বলে যেন আগুন ঝরছিল, দেভদূত পাডিক্কাল বিদায় নিয়েছেন তার বলে অফস্টাম্প খুইয়ে। মেরেডিথের সাথে মোহাম্মাদ শামির পেসে কোহলি আর রজত পাতিদার এরপর তাই একেবারেই কোনো সুযোগ নেননি। পাওয়ারপ্লেতে ওই এক উইকেট হারিয়ে ব্যাঙ্গালোর তুলেছিল ৩৬ রান।

    কোহলি এরপর গিয়ার বদলাতে চাইলেও একেবারেই সুবিধা করতে পারছিলেন না পাতিদার। রবি বিষ্ণয়ের দারুণ বোলিংয়ে যেই চাপ তৈরি হয়েছিলো সেটারই সদ্ব্যবহার করেছেন হারপ্রিত। বেরিয়ে এসে খেলতে গেলে নিচু হয়ে আসা বলে বোল্ড হয়ে শেষ হয় কোহলির ৩৪ বলে ৩৫ রানের ইনিংস। পরের বলেই ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে মিস করা ম্যাক্সওয়েলকে ফেরান হারপ্রিত, নেন ডাবল উইকেট মেইডেন। পরের ওভারের প্রথম বলে ডি ভিলিয়ার্স ধরা পড়েছেন কাভারে, স্বপ্নময় প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষের তিন বড় ব্যাটসম্যানের উইকেট নিয়ে রান দিয়েছেন মাত্র ১৯। 

    অনেকক্ষণ উইকেটে থাকলেও ভুগতে থাকা পাতিদারকে ফিরিয়ে তাকে মুক্তি দিয়েছেন ক্রিস জর্ডান, ৩০ বলে ৩১ করে শেষ হয়েছে তার ইনিংস। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত বল করা বিষ্ণয় অবশেষে ফল পেয়েছেন নিজেও, টানা দুই বলে ফিরিয়েছেন শাহবাজ আহমেদ আর ড্যানিয়েল স্যামসকে, নিজের চার ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৭ রান। ম্যাচ শেষ করা যখন সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিলো তখনই বল হাতে দুর্বিষহ দিন কাটানো হারশাল প্যাটেল খেলেছেন ১৩ বলে ৩১ রানের দারুণ ক্যামিও, মেরেডিথ ওভারের মাঝে চোট পেয়ে বেরিয়ে গেলে তার জায়গায় বল করতে আসা শামির বল আকাশে উড়িয়ে খেললে সামনে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন বোলিং নায়কদের একজন বিষ্ণয়। সাথে কাইল জেমিসনের অপরাজিত ১৬ রানে ব্যাঙ্গালোর গিয়ে থেমেছে ১৪৫ রানে। 

    তবে কাছাকাছি গিয়েও ব্যাঙ্গালোরকে অল আউট করতে না পারায় নেট রানরেট  নিয়ে একটু আক্ষেপ থাকতে পারে পাঞ্জাব কিংসের, দারুণ এই জয়ে অবশ্য পাঁচে উঠে এসেছে তারা।