ব্যাটিং ধসের কারণ হিসেবে মানসিক ক্লান্তি দেখেন ডমিঙ্গো
২১৪ রানে ৩ উইকেট থেকে ২৫১ রানে অল-আউট হয়ে যাওয়া, পাল্লেকেলেতে তৃতীয় দিন বড় ধসের কবলে পড়েছে বাংলাদেশ। অভিষিক্ত প্রভিন জয়াবিক্রমা এবং ১ টেস্টের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রমেশ মেন্ডিসের সামনে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে দ্রুতই। বাংলাদেশের এ ধসের পেছনে তাদের ‘মানসিক ক্লান্তি’র ব্যাপারটিকেও দেখছেন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
“আমার মনে হয় এটা (ব্যাটিং ধস) বেশ কিছু জিনিসের সমন্বয়। ছেলেরা গত ৪-৫ দিনে অনেক সময় মাঠে কাটিয়েছে, তারা হয়ত মানসিকভাবে একটু ক্লান্ত”, দিনশেষে বলেছেন ডমিঙ্গো। “আমার মনে হয় আমরা শেষ ৪-৫ দিনে প্রায় ৩৭০ ওভারের জন্য মাঠে ছিলাম, যা অবশ্যই একজন ক্রিকেটারকে ক্লান্ত করে ফেলে। শারীরিক এবং মানসিকভাবে। সেটি একটি কারণ হতে পারে। অবশ্যই সেখানে একটি বা দুটি আলগা ডিসমিসাল ছিল। কিন্তু আমাদের দ্বিতীয় ইনিংস এখনও বাকি আছে এবং আমাদের নিজেদেরকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে সেটির জন্য যা গুরুত্বপূর্ণ হবে।”
তামিম ইকবালের প্রতি-আক্রমণের পর মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশকে টানছিলেন ভালই। তবে চা-বিরতির আগে-পরে তাদের ফেরা মূলত ধস নামিয়েছে বাংলাদেশ ইনিংসে। ক্লান্তির সঙ্গে ‘বাজে সিদ্ধান্তে’র দায়ও দেখেন ডমিঙ্গো, “না, আমার মনে দুটি মিলিয়েই হয়েছে। তারা সেট ছিল এবং ভালো খেলছিল। কিন্তু ছেলেরা পরিশ্রম করছে, অনেক চেষ্টা করছে, তারা মাঠে পরিশ্রম করছে, নেটে করছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ব্যাটিংয়ের সময় কিছু বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা মঠে এত সময় কাটিয়েছি যে সব দলেরই ব্রেকিং পয়েন্ট থাকে, আমাদের ব্রেকিং পয়েন্ট ছিল আজকে যখন আমরা ব্যাটিং করছিলাম। আজকে আমাদের জন্য কঠিন দিন ছিল।”
“ছেলেরা তাদের সর্বোচ্চটা দিয়েছে, তারা অনেক পরিশ্রম করছে, তারা চেষ্টা করছে। অজুহাত নয়, কিন্তু মাঠে অনেক সময় কাটানোয় তারা হয়ত মনোযোগে একটু ঘাটতি হয়েছিল ব্যাটিংয়ের সময়। আপনাদের মনে রাখতে হবে ছেলেরা প্রায় ৩৮০ ওভার মাঠে কাটিয়েছে। সেটা মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রভাব রাখে এবং সেটিই হইয়ত আজকে আমাদের ব্যাটিং ধসের আংশিক কারণ।”
এ উইকেটে স্পিন ধরবে শেষের দিকে, এমনটি ম্যাচ শুরুর আগে থেকেই বলেছেন শ্রীলঙ্কানরা। তাদের একাদশেও ছিল সেটির প্রতিফলন, দুজন পেসার নিয়ে নেমেছেন তারা। তবে বাংলাদেশ দুজন স্পিনারের সঙ্গে খেলিয়েছে তিনজন পেসারকে। ডমিঙ্গোর মতে, তিনদিন যাওয়ার পর একাদশ নির্বাচনের সমালোচনা করার মানে নেই, “দেখুন, তৃতীয় দিনের পর এটা বলাটা সহজ। আমরা যখন প্রথম দিনে বল করেছি তখন এত টার্ন ছিল না। অবশ্যই উইকেট এখন টার্ন করা শুরু করেছে, ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন হয়ে গিয়েছে। তিন দিনের পর বলাটা সহজ আমাদের দল নির্বাচন ভুল হয়েছে কিন্তু আমার তা মনে হয় না। আমাদের বেশ ব্যালেন্সড বোলিং লাইনআপ আছে, যেটি আমরা মনে করি ২০ উইকেট নিতে পারবে। আমরা যখন শুরুতে বোলিং করেছি তখন বোলারদের জন্য তেমন কিছু ছিল না কিন্তু এখন আছে।”
তৃতীয় দিনশেষে ২৫৯ রানে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা, বাকি আছে ৮ উইকেট। এখনও ইতিবাচকই থাকতে চান ডমিঙ্গো, কদিন আগে চট্টগ্রামে কাইল মেয়ার্স-এনক্রুমাহ বনারে ভর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রূপকথার জয় থেকেও প্রেরণা নিতে চান, “... আমাদের ইতিবাচক থাকতে হবে এবং এখনও অনেক ক্রিকেট বাকি। কালকে আমরা দ্রুত কিছু উইকেট নেয়ার চেষ্টা করব এবং আপনি জানেন না ক্রিকেটে কখন কী হয়। আমাদের চতুর্থ দিনে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে যেতে হবে।
“আমরা কয়েক সপ্তাহ আগেই অবিশ্বাস্য একটি টেস্ট ম্যাচের অংশ ছিলাম। যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ আমাদের বিপক্ষে ৩৯৭ রান তাড়া করে জিতেছিল। আমরা জানি আমরা এখনও অনেক পিছিয়ে এই ম্যাচে, আমরা অনেক চাপে আছি, শ্রীলঙ্কা আধিপত্য বিস্তার করছে এই মুহূর্তে। কিন্তু আমরা আগামীকাল সকালে দ্রুত ২-৩ উইকেট নিয়ে নিতে পারলে ওদের ড্রেসিংরুমে একটু আশঙ্কা জাগাতে পারব। আপনি কখনই জানেন না, কেউ হয়ত দারুণ কোনো ইনিংস খেলবে। আমাদের ইতিবাচক থাকতে হবে।”