নিজের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত নন ডমিঙ্গো, বলছেন 'কাজ বাকি'
বাংলাদেশের হেড কোচের পদে নিজের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত নন রাসেল ডমিঙ্গো। এখানে কাজটা উপভোগ করছেন, তার কাজ বাকিও আছে বলে মনে করেন তিনি।
২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পর তখনকার হেড কোচ স্টিভ রোডসকে বাদ দিয়েছিল বিসিবি, এরপর সে বছরের আগস্টে দায়িত্ব নিয়েছিলেন ডমিঙ্গো। তার অধীনে এখন পর্যন্ত শুধু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট (একটি ম্যাচের), ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ- এর সবকটিই এসেছে দেশের মাটিতে। বিদেশের মাটিতে সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১৬ ম্যাচে তারা জিতেছে শুধু ভারতের বিপক্ষে একটি টি-টোয়েন্টি। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ হেরে এসেছে বাংলাদেশ, প্রথম টেস্ট ড্র করলেও দ্বিতীয় টেস্টে বড় ব্যবধানে হেরে।
দুই বছরের জন্য দায়িত্ব নেওয়া ডমিঙ্গোর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা এ বছরের ২১ আগস্ট। তবে সামনে ব্যস্ত সূচি বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজের পর জিম্বাবুয়ে সফরে যাবে তারা। এরপর দেশের মাটিতে একাধিক সিরিজের (সূচি নিশ্চিত হয়নি) পর আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
আপাতত নিজের পদ নিয়ে ভাবছেনও না ডমিঙ্গো, “সত্যি বলতে কী, (হেড কোচ হিসেবে নিজের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত) না আমি। আমি এখানে কাজ উপভোগ করছি। এই সেট-আপটা উপভোগ করছি। কাজ বাকি আছে এখনও”, শ্রীলঙ্কা সফর থেকে ফেরার পর সাংবাদিকদের বলেছেন তিনি।
তারা না থাকলে ক্রিকেটারদের সুযোগ-সুবিধার দিকে নজর দিতে বলেছেন তিনি বরং, “আমার মনে হয় ঘরোয়া ক্রিকেটের অবস্থা এবং আমরা না থাকলে তারা কেমন সুযোগ-সুবিধা পায় অনুশীলনের ক্ষেত্রে, সেদিকে নজর দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই ফল বিপক্ষে গেছে আমাদের। তবে আমি দলের সঙ্গে এখন সংযোগ স্থাপন শুরু করেছি, সামনে এগিয়ে যেতেও আত্মবিশ্বাসী আমি।”
“ঘরের মাটিতে সিরিজ হারের পর প্রশ্ন উঠবেই। সেসব মেনে নিতে হবে আমাদের, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভাল প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে হবে। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে নজর দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।”
সাম্প্রতিক সময়ের ফল নিজের হতাশাটাও জানিয়েছেন তিনি, “আমি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফল নিয়ে হতাশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেও ভাল খেলেছিলাম। কিছু বাজে সিদ্ধান্ত আর ভুলের কারণে হেরেছিলাম আমরা। দ্বিতীয় টেস্টও অনেক কাছাকাছি গিয়েছিলাম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ভাল খেলেছি। আমি উন্নতি দেখছি। সাম্প্রতিক সময়ে যা দেখেছি, সেটি নিয়ে রোমাঞ্চিত আমি।”
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে বাংলাদেশ খেলেছে ৬ ব্যাটসম্যান ও ৫ বোলার নিয়ে, নিকট অতীতে যে ঘটনা নিয়মিত নয় মোটেও। সাকিব না থাকার কারণে দলের কম্বিনেশন নিয়ে আর কিছু করার ছিল না বলেও মনে করেন ডমিঙ্গো, “যেমনটা বললাম, হারলে সমালোচনা হবেই। তবে সাকিব (আল হাসান) না থাকলে দলে ভারসাম্য তৈরি করা কঠিন। এরপর আপনাকে একজন ব্যাটসম্যান বা বোলার কম খেলাতেই হবে।”
দলে সাকিব ছাড়া একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার খোঁজার তাগিদও দিয়েছেন তিনি, “অবশ্যই আমি মনে করি দলের ভারসাম্যের জন্য একজন অলরাউন্ডার খুঁজে পেতে হবে আমাদের। সাকিব নিশ্চিতভাবেই সেই ব্যক্তি, তবে (তাকে ছাড়াও) এমন একজনকে দরকার, যে প্রথম ছয়ের মাঝে ব্যাটিং করবে, পেস বোলিং করবে। বিশেষ করে দেশের বাইরে খেলতে হলে এটি গুরুত্বপূর্ণ। অমন কেউ এই মুহুর্তে নেই আমাদের।”
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেশের মাটিতে পরের ওয়ানডে সিরিজটি বিশ্বকাপ সুপার লিগের অধীনে। নিউজিল্যান্ড সিরিজে ভরাডুবির পর এ ফরম্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন তিনি। সেখানে সাকিবের সঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমানের ফেরাটাও দলের জন্য ভাল বলে মত তার।
“দেশের মাটিতে খেলতে পারাটা ভাল ব্যাপার। যেমনটা বললাম, সাকিব-মোস্তাফিজের মতো অভিজ্ঞদের ফিরে পাওয়াটা আমাদের জন্য দারুণ। আমরা বিপজ্জনক একটা দলের বিপক্ষে খেলব। ফলে তাদের হারাতে আমাদের সত্যিই ভাল খেলতে হবে। মোস্তাফিজকে ভাল কাটার করতে দেখেছি। অমন উইকেট সত্যিই তার বোলিংয়ের জন্য সহায়ক।”