গোলশূন্য ড্রতে রিয়ালের সামনে দুয়ার খুলে দিল বার্সা-অ্যাটলেটিকো
যে দল হেরে যাবে তাদের শিরোপা সম্ভাবনা প্রায় শেষ, আর জিতলে এগিয়ে যাবে অনেকটা। এমন একটা পরিস্থিতিতে অ্যাটলেটিকো আর বার্সেলোনার ম্যাচটা শেষ হলো গোলশূন্য ড্রতে। তাতে সবচেয়ে বেশি লাভ হলো রিয়াল মাদ্রিদেরই, সেভিয়াকে রবিবার হারাতে পারলে তারাই চলে যাবে লা লিগার শীর্ষে।
এই ম্যাচের আগে ৭৪ ও ৭৬ পয়েন্ট নিয়ে নেমেছিল বার্সা ও অ্যাটলেটিকো। ড্রয়ের পর অ্যাটলেটিকো ৭৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই রইল। কিন্তু সেভিয়াকে হারালে রিয়ালের পয়েন্টও হবে ৭৭। কিন্তু হেড টু হেডে এগিয়ে থাকার সুবাদে রিয়ালই থাকবে শীর্ষে। আর ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে এখন বার্সার ভাগ্য নিজেদের হাতে নেই, নির্ভর করতে হবে অনেক যদি, কিন্তুর ওপর।
ন্যু ক্যাম্পে কখনো জয় পায়নি অ্যাটলেটিকো কোচ সিমিওনে। অধরা মিশনে শুরুটা ভালোই করেছিল তারা। বিশেষ করে একটা ইনজুরির পর। আর সার্জিও বুস্কেটস এই মৌসুমে বার্সার জন্য কতটা মূল্যবান সেটা বোঝা গেছে নেমে যাওয়ার পর। স্টেভান সাভিচের সাথে ধাক্কা খাওয়ার পর মাথায় ব্যথা পেয়ে নেমে গিয়েছিলেন। ফিরলেও বেশিক্ষণ খেলা চালিয়ে যেতে পারেননি। বেঞ্চে পিয়ানিচ ও রিকি পুইদের মতো খেলোয়াড় থাকলেও কোমান নামিয়েছেন ১৮ বছর বয়সী মিডফিল্ডার ইয়াক্স মরিবাকে। কিন্তু এরপর থেকে মনে হয়েছে বার্সা খেলছে একজন কম নিয়ে।
বলতে গেলে বুস্কেটস নেমে যাওয়ার পর একের পর এক আক্রমণে বার্সাকে তটস্থ করে রেখেছে অ্যাটলেটিকো। বাঁদিকে রীতিমতো ত্রাস হয়ে ছিলেন ইয়ানিক কারাস্কো। এক্লবার তার পাস থেকে মার্কোস লরেন্তের শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন টের স্তেগান, খানিক পর স্টেগেনের পরীক্ষা নিয়েছেন কারাস্কো নিজেই। এরপরেই সুযোগ পেয়েছিলেন সুয়ারেজ, কিন্তু তার হেডটা শেষ মুহূর্তে ফিস্ট করে বিপদমুক্ত করেছেন স্টেগান। সুযোগ অবশ্য তার আগেও পেয়েছিল অ্যাটলেটিকো, তবে ওই সময় মনে হচ্ছিল স্টেগেন যেন নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না।
অ্যাটলেটিকোর রক্ষণকে সেই অর্থে শুরু থেকে বড় পরীক্ষা দিতে হয়নি। গ্রিজমান একটা লং বল থেকে সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু বুক দিয়ে রিসিভ করে বাঁ পায়ের শট সহজেই ঠেকিয়ে দিয়েছেন অ্যাটলেটিকো গোলরক্ষক ইয়ান অবলাক। এরপর বুস্কেটস উঠে যাওয়ার পর বার্সা কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এরপরেই মেসি ঠিক করেন, যা করার তাকেই করতে হবে। নিজেদের অর্ধ বরাবর দৌড় শুরু করেছিলেন। ডান দিক ঘেঁষে সেই দৌড়ের পর ছিটকে বেরিয়ে গেলেন। বক্সের মাথা থেকে বাঁ পায়ের শটও নিলেন। গোলটা হলে আরও একটি জাদুকরী মুহূর্তের জন্ম হতো, কিন্তু সেটা অবলাক দারুণভাবে সেভ করে পাঠিয়ে দেন বাইরে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বেশ গুছিয়ে খেলতে থাকে বার্সা। মরিবোয়া আর ডি ইয়িং আরেকটু ধাতস্থ হয়ে খেলতে শুরু করেন মিডফিল্ডে। অবশ্য খুব একটা পরিহকার সুযোগ পাচ্ছিল না। মেসির একটা ফ্রিকিক থেকে লেংলে একটুর জন্য হেড পোস্টে রাখতে পারেননি। পিকের হেডও চলে যায় সরাসরি অবলাকের কাছে। প্রথমার্ধে ট্রিপিয়ের আলবাকে ওপরে ওঠার তেমন সুযোগ দেননি, তবে এই অর্ধে আলবা ওভারল্যাপ করেছেন। সেরকম একটা ওভারল্যাপ থেকেই তার ক্রসে পা ছুঁইয়েছিলেন মরিবা, কিন্তু সময়মতো অ্যাটলেটিকো ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে সেটা বাইরে চলে যায়।
এরপর বার্সা সার্জি রবার্তো আর উসমান দেম্বেলেকে নামায়, আরও বাড়ে আক্রমণের ধার। আলবার আরেকটি ক্রস থেকে গ্রিজমানের শট চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। এরপরেই প্রথমার্ধের সম্ভবত সেরা সুযোগটা পেয়ে যায় বার্সা। এবারও আলবার ক্রস, পেছন থেকে উড়ে এসে হেড করেন দেম্বেলে। কিন্তু সেটা পোস্টের ঠিক ওপর দিয়ে চলে যায়। ৯০ মিনিটে ফ্রিকিক পেয়েছিলেন মেসি, বক্সের ঠিক বাইরে। কিন্তু সেটা অল্পের জন্য চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। শেষ পর্যন্ত কোনো গোল ছাড়াই মাঠ ছাড়তে হয় দুই দলকে।