সব দোষ ফন গালের !
বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক গুরুকে কটাক্ষই করলেন ডি মারিয়া। ফন গালের স্বেচ্ছাচারিতাই নাকি তার ম্যানচেস্টার ছাড়ার কারণ।
রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ব্রিটিশ ট্রান্সফার ফি'র রেকর্ড গড়ে যোগ দিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। রেড ডেভিলদের বিখ্যাত ৭ নম্বর জার্সিটিও চড়েছিল তার গায়েই। রোনালদোর পর ওল্ড ট্রাফোর্ডে এই বুঝি যুতসই একজনকে পাওয়া গেল যার গায়ে জর্জ বেস্ট, ক্যান্টোনা, বেকহ্যামদের ফেলে যাওয়া ওই জার্সি নম্বরটা শোভা পায়! ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সি গায়ে শুরুটাও হয়েছিল দুর্দান্ত, কিন্তু তারপরই কেমন যেন খেই হারিয়ে ফেললো ইউনাইটেড, পথ হারালেন ডি মারিয়াও! মাত্র এক মৌসুম শেষেই আবারও সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্যারিসে পাড়ি জমালেন ডি মারিয়া! ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড নয়, ডি মারিয়ার সমস্যার নাম ছিলেন ফন গাল!
নিজের ইচ্ছেমত পজিশনে খেলতে না পারাটাই নাকি ডি মারিয়াকে বাধ্য করেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছাড়তে। ডি মারিয়ার অভিযোগ, একেক ম্যাচে একেক জায়গায় তাকে খেলতে নামাতেন ফন গাল। দলে তার ছিল না নির্দিষ্ট কোন ভূমিকা। এর জন্যেও এই আর্জেন্টাইন দুষছেন ফল গালকেই! কোন খেলোয়াড়ের সাথে কোনো সমস্যাও ছিল না, এমনকি ক্লাবের সাথেও নয়, ডি মারিয়া তার ইংল্যান্ড ছাড়ার দোষটা চাপাচ্ছেন শুধুই এই ডাচ কোচের ওপর!
মাত্র এক মৌসুমে নতুন এক জায়গায় মানিয়ে নেয়াটাও কি খুব সহজ কাজ? ডি মারিয়া কেন অন্তত আরও একটি মৌসুম চেষ্টা করলেন না মানিয়ে নেবার! দোষটা তো ডি মারিয়ার কাঁধেও পড়ে! সে প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন পিএসজির এই উইঙ্গার। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে মানিয়ে না নেবার জন্য তার যতো না ভুল, তার চেয়েও বেশি দোষ নাকি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষের; তারাই নাকি ডি মারিয়াকে থিতু হতে দেননি ওল্ড ট্রাফোর্ডে।
“আমার মনে হয় না এটা আমার ভুল, যতোবারই আমাকে সুযোগ দেয়া হয়েছিল, আমি তা লুফে নিয়ে নিয়েছি এবং ভালোও করেছি। কিন্তু আমি যা ভেবেছিলাম তেমনটি হয়নি, ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছি।“
“শুধু তাই নয়, একেক ম্যাচে আমাকে একেক ভূমিকায় খেলতে দেয়া হতো, ম্যানেজার অবশ্যই এই ক্ষমতা রাখেন। তবে খেলোয়াড় যখন ম্যানেজারের দেয়া স্থানে খেলতে অপছন্দ করে সেটাও ম্যানেজারের খেয়াল রাখা উচিত, ভ্যান গাল তা করেননি।”
ডি মারিয়ার কথা শুনে মনে হতে পারে অনেক দিনের পুরোনো ক্ষোভ ঝাড়ছেন ফন গালের ওপর! কিন্তু ইউনাইটেড ছেড়েছিলেন কেন ? ডি মারিয়ার দাবি, লিগ জিততেই নাকি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে পিএসজিতে এসেছিলেন!
“পিএসজিতে এসেছিলাম লিগ জিততে। এটা ভাবতেই অবাক লাগে আমি ছেড়ে যাবার পরও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড একই ধরনে খেলা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা প্রিমিয়ার লিগ বা চ্যাম্পিয়নস লিগ কোনটাতেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছে না। একারণেই ছেড়ে এসেছিলাম।“
পুরোনো কোচের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেও নতুন ম্যানেজার লরা ব্লাকে প্রাপ্য সম্মানটাই দিচ্ছেন ২৮ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন। “আমি যেমনটা করতে চেয়েছিলাম তেমনটাই হচ্ছে এখানে। পিএসজিতে যোগ দেবার পরই কোচ আমাকে জানিয়েছিলেন কোথায় খেলতে হবে আমাকে; আর আমিও ওই একই জায়গায় উন্নতি করে চলেছি। আমি খুবই খুশী যে এখানে আমার স্বাধীনতা পেয়েছি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যেটা অনুপস্থিত ছিল।”