এবার ইমরান-শামিম ঝড়ে উড়ে গেল মোহামেডান, জয় রূপগঞ্জ, ডিওএইচএসের
প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব ৭৮/৪, ৬(৬) ওভার (ইমরান ৪১, শামিম ২৯*, রাহি ২/৪, রুয়েল ১/২৪, সাকিব ১/২৭)
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ৫৬/৪, ৬(৬) ওভার (সাকিব ২২, নাদিফ ১৬, শফিউল ৩/২২, রাজা ১/১৯)
দোলেশ্বর ২২ রানে জয়ী
আগেরদিন মোহামেডান হেরেছিল ম্যাচের প্রথম ইনিংসের শেষের ঝড়ে। এবার প্রথম ইনিংসের প্রথমের ঝড়েই উড়ে গেল তারা। বৃষ্টিতে ৬ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ইমরান উজ জামানের ১৪ বলে ৪১, শামিম পাটোয়ারির ১৬ বলে ২৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে ৬ ওভারে ৭৮ রান তুলেছিল প্রাইম দোলেশ্বর, জবাবে মোহামেডান আটকে গেছে ৫৬ রানেই।
টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল মোহামেডান, তবে প্রথম বল থেকেই যে আক্রমণ শুরু করেছিলেন ইমরান, তাতেই যেন অনেকখানি দমে গেছে তারা। ইনিংসের প্রথম বলেই তাসকিন আহমেদকে টেনে লং-অন দিয়ে ছয় মেরেছিলেন ইমরান, সে ওভারে শামিমও মেরেছেন একটি। পরের ওভারে সাকিব এসেছিলেন, তবে দুই ওপেনার তাকেও মেরেছেন দুটি ছয়, সঙ্গে শামিমের একটি চারে সে ওভারে এসেছিল ১৭ রান। এরপর রুয়েল মিয়া এসেছেন, ইমরান চড়াও হয়েছেন তার ওপর। দুই ছয়, এক চার, সঙ্গে লেগবাইয়ের চারে সে ওভারে উঠেছে ২৩ রান, ৩ ওভার শেষেই দোলেশ্বরের স্কোর ছিল ৫৮ রান।
সে অর্থে শেষ ৩ ওভারে ২০ রানকে বলতে হবে ছন্দপতনই। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে ইমরানকে ফিরিয়েছেন সাকিব, একটি ছয়ের পর আবারও টেনে মারতে গিয়ে লিডিন-এযে ক্যাচ দেওয়ার আগে তিনি মেরেছেন ৫ চার, ২ ছয়, খেলেছেন ২৯২.৮৫ স্ট্রাইক রেটের ইনিংস- যা বাংলাদেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে ৬ষ্ঠ সর্বোচ্চ।
ইমরানের উইকেটের পর আর কোনো বাউন্ডারিই হয়নি দোলেশ্বরের ইনিংসে। শামিম প্রথম ৯ বলে করেছিলেন ২২ রান, পরের ৭ রান করতে খেলেছেন সমানসংখ্যক বল। ফরহাদ রেজা, সাইফ হাসান ও ফজলে মাহমুদ মিলে করেছেন ২ রান, শেষ ২ ওভারে দোলেশ্বরকে ১০ রানের বেশি তুলতে দেননি আবু জায়েদ রাহি ও রুয়েল।
তবে সে মোমেন্টাম ব্যাটিংয়ের শুরুতেই হারিয়ে ফেলেছে মোহামেডান। প্রথম ৩ বলের মাঝে কোনো রান না করেই শফিকুল ইসলামের শিকার পারভেজ হোসেন ইমন ও শুভাগত হোম, এরপর সাকিবের সঙ্গে নাদিফ চৌধুরির ৩১ রানের জুটিতেও ঠিক উড়ানটা দেওয়া হয়নি তাদের। প্রথম ৫ ওভারে কোনো ছয়ই মারতে পারেননি সাকিবরা, শেষ ওভারে গিয়ে তিনি ও ইরফান শুক্কুর মিলে মেরেছেন একটি করে। তবে যে ম্যাচ জিততে ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৩-এর বেশি করে রান, সেখানে এমন বাউন্ডারি-খরা মোটেও সহায়তা করেনি তাদের।
****
ওল্ড ডিওএইচএস ১২০/৪, ১৩(১৩) ওভার (ইমন ৪৪, রাইয়ান ৩৭, জয় ২৯*, খালেদ ৩/২৪, মিরাজ ১/৩৪)
খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতি ১০৪/৫, ১৩(১৩) ওভার (জহুরুল ৩৭*, ইমতিয়াজ ৩৩, মাসুম ১৬, রাকিবুল ২/১৬, হামিদুল ১/১৬, পায়েল ১/২২)
ডিওএইএচএস ১৬ রানে জয়ী
আনিসুল ইসলাম ইমন, রাইয়ান রহমান, মাহমুদুল হাসান জয়ের ঝড়ো ইনিংসের পর রাকিবুল হাসান, হামিদুল ইসলাম, আসাদুজ্জামানের বোলিং পারফরম্যান্সে খেলাঘরের বিপক্ষে জয় পেয়েছে ওল্ড ডিওএইচএস। ১৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে তাদের ১২০ রানের জবাবে খেলাঘর আটকে গেছে ১০৩ রানেই। আগের ম্যাচে ব্রাদার্সের বিপক্ষে অভাবনীয় হারের পর একটু হলেও তাই সান্ত্বনা পেতেই পারে ডিওএইচএস।
বিকেএসপির অন্য মাঠে এ ম্যাচ শুরু হয়েছিল একটু আগেই। আগে ব্যাটিং করা ডিওএইচএস ইনিংসের ৫ম ওভারে রাকিন আহমেদ ১৩ বলে ৫ রান করে ফিরলেও ইমন আক্রমণ শুরু করেছেন ততক্ষণে, ৮ম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেছেন ২৭ বলে ৪ চার ও ১ ছয়ে ৪৪ রান। তৃতীয় উইকেটে রাইয়ান ও জয়ের জুটিতে এসেছে ৬১ রান, ৪.৩ ওভারের মাঝেই। ২১ বলে ৩৭ রানের ইনিংসে রাইয়ান মেরেছেন ৩ চার ও ২ ছয়, আর শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা জয় ২টি করে চার-ছয়ে করেছেন ২৯ রান।
রানতাড়ায় প্রথম ৩ ওভারে ১২ রান তুলতে ২ উইকেট হারিয়েছিল খেলাঘর, সেই চাপ পরে আর সামাল দেওয়া হয়নি তাদের। ৩০ বলে ৩৩ রান করে ইমতিয়াজ হোসেন ফেরার পর ২৪ বলে ৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংসে চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম- যে ইনিংসে তিনি মেরেছেন ২টি করে চার-ছয়- তবে সফল হননি শেষ পর্যন্ত। ১২ বলে ১৬ রান করা মাসুম খানের সঙ্গে ২৯ রানের জুটির পর খেলাঘর থেমেছে জয় থেকে ১৬ রান দূরেই।
****
লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জ ৮১/৬, ১২(১২) ওভার (সানজামুল ২৪, নাইম ১৮*, সাব্বির ১৬, সুমন ৩/২০, রবিউল ২/৯, তানভির ১/১৩)
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ৬৭/৬, ১২(১২) ওভার (অঙ্কন ৩০, রবিউল ১৫*, নাবিল ৩/১, মুক্তার ২/১৪, সানজামুল ১/১০)
রূপগঞ্জ ১৪ রানে জয়ী
বিকেএসপিতে সংক্ষিপ্ত হয়ে আসা দুই ম্যাচে যখন ঝড় উঠছে, মিরপুরে তখন বলতে গেলে ছিল শুনশান অবস্থা। শেষ ৫ ওভারে ৪৬ রান তুলে ৮১ পর্যন্ত গিয়েছিল রূপগঞ্জ, সেটিই যথেষ্টর চেয়েও বেশ বেশি হয়েছে শাইনপুকুরের জন্য।
আগে ব্যাটিং করা রূপগঞ্জের একসময় স্কোর ছিল ৭ ওভারে ৩ উইকেটে ৩৫ রান, ৯ রানেই ৩ উইকেট হারিয়েছিল তারা। এরপর সানজামুল ইসলামের ১৭ বলে ২৪, সঙ্গে নাইম ইসলামের অপরাজিত ১৩ বলে ১৮ ও সোহাগ গাজির ৭ বলে ১৩ রানের ইনিংসে তখন পর্যন্ত মোটামুটি একটা স্কোরে গিয়েছিল রূপগঞ্জ। খেলাঘরের সুমন ৩ উইকেট নিয়েছেন ২০ রানে, ৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন রবিউল।
জবাবে শাইনপুকুর লড়াই থেকে ছিটকে গেছে প্রথম ৪ ওভারেই, ৫ রান তুলতেই প্রথম ৪ উইকেট হারিয়েছে তারা। বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদ ২ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১ রান, নিয়েছেন ৩ উইকেট। সঙ্গে মুক্তার আলি ২ উইকেট নিয়েছেন ১৪ রানে। শেষদিকে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন খেলেছেন ২৩ বলে ৩০ রানের ইনিংস, সঙ্গে ছিল রবিউল হকের অপরাজিত ১২ বলের ১৫। তবে খেলাঘর তো ম্যাচ হেরে বসেছে আরও আগেই।