• ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি ২০২১
  • " />

     

    শাকিলের ৫ উইকেট, বৃথা জয়ের ৮৫, রাব্বির শেষের ঝড়

    শাকিলের ৫ উইকেট, বৃথা জয়ের ৮৫, রাব্বির শেষের ঝড়    

    শেখ জামাল-ডিওএইচএস, মিরপুর
    পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব ১০৪ অল-আউট, ১৯.৩ ওভার (আব্বাস ২০, ইজাহারুল ১৯, ধীমান ১৯, শাকিল ৫/১৬, ইলিয়াস সানি ২/১৭, নাসির ১/৫, জিয়াউর ১/১৮, এবাদত ১/৩১)
    শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ১০৫/৪, ১৭.২ ওভার (নুরুল ৩০, ইলিয়াস সানি ২৭*, নাসির ২২, জয়নুল ২/২৬, রাজিবুল ১/৭, মেহরাব ১/৬)
    শেখ জামাল ৬ উইকেটে জয়ী 


    সালাউদ্দিন শাকিলের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং ফিগারে পারটেক্সকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে শেখ জামাল। ১৬ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার, যা এ মৌসুমে কোনো বোলারের দ্বিতীয় পাঁচ উইকেট, সেরা ফিগারও। বিকেএসপিতে পারটেক্স গুটিয়ে গিয়েছিল ১০৪ রানেই, জবাবে নাসির হোসেন, নুরুল হাসান সোহান ও ইলিয়াস সানির ২০-পেরুনো তিন ইনিংসে মৌসুমে তৃতীয় জয় পেয়েছে শেখ জামাল। ৬ ম্যাচ শেষে পারটেক্স এখনও আছে জয়শূন্যই। 

    শেখ জামালকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছিলেন নাসির হোসেন, দ্বিতীয় ওভারে সায়েম আলমকে বোল্ড করে। নিজের প্রথম ওভারে উইকেট পেয়েছেন শাকিল, ৬ষ্ঠ ওভারে এসে তার বলে উইকেটকিপার সোহানকে ক্যাচ দিয়েছিলেন পারটেক্স অধিনায়ক তাসামুল হক। পরের ওভারে এসে শাকিল ফিরিয়েছেন আব্বাস মুসাকে। ইজাহারুল ইসলাম ও ধীমান ঘোষের জুটি এরপর একটু আগলে রেখেছিল পারটেক্সকে, তবে সে জুটি টেকেনি বেশিক্ষণ। ইজাহারুলকে ফিরিয়েছেন জিয়াউর রহমান, নিহাদুজ্জামানকে ইলিয়াস সানি। মাঝে ধীমানকে ক্যাচ বানিয়েছেন শাকিল।



    শেষ ওভারে এসে শাকিল পরপর দুই বলে ফিরিয়েছেন জুবাইর হোসেন ও শাহাদাত হোসেনকে, তাতেই ৫ উইকেট পূর্ণ হয়েছে তার। বাংলাদেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে শাকিলেরটি ৮ম সেরা ফিগার, স্থানীয়দের মাঝে তৃতীয়। 
     


    রানতাড়ায় প্রথম ওভারেই সৈকত আলিকে হারিয়ে ফেলেছিল শেখ জামাল, এরপর ১৮ বলে ১৭ রান করা মোহাম্মদ আশরাফুল ও ২৩ বলে ২২ করা নাসির হোসেন ফিরেছিলেন ১২ রানের ব্যবধানে। তবে সোহানের ৩২ বলে ৩০ রানের পর ইলিয়াস সানির ২৪ বলে ২৭ রানে শেখ জামাল জিতেছে ১৬ বল বাকি থাকতেই। 


    **** 

    ওল্ড ডিওএইচএস-গাজি গ্রুপ, বিকেএসপি-৩
    ওল্ড ডিওএইচএস স্পোর্টস ক্লাব ১৩৬/৭, ২০ ওভার (জয় ৮৫, আলিস ১৫, নাসুম ২/১০, মাহমুদউল্লাহ ১/১২, মুমিনুল ১/১৮, মুকিদুল ১/২৭, মহিউদ্দিন ১/৩২) 
    গাজি গ্রুপ ক্রিকেটারস ১৩৯/৪, ১৯ ওভার (সৌম্য ৩৭, মুমিনুল ২৭, ইয়াসির ২৪*, মাহাদি ২২, রাকিবুল ২/২১, আলিস ১/১৮, হামিদুল ১/২০)
    গাজি গ্রুপ ৬ উইকেটে জয়ী 


    ১৬তম ওভারের চতুর্থ বলে মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর বলে যখন ক্যাচ দিলেন রাকিবুল হাসান, ওল্ড ডিওএইচএসের স্কোর তখন ৭ উইকেটে ৮২ রান। সেখান থেকেও যে তারা গেল ১৩৬ পর্যন্ত, তাতে মূল অবদান মাহমুদুল হাসান জয়ের ৫৫ বলে ৮৫ রানের অপরাজিত ইনিংসের। তবে এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেও ডিওএইএচএসকে জয়ের মতো স্কোর এনে দিতে পারেননি জয়, এক ওভার বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করেছে পরে গাজি গ্রুপ। 

    ১১তম ওভারেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল আগে ব্যাটিং করা ডিওএইচএস, প্রথম ৬ জন ব্যাটসম্যানের মাঝে জয় ছাড়া দুই অঙ্কই ছুঁতে পারেননি কেউ। শেষ পর্যন্ত জয়ের পর তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ১৫! 

    অন্যপাশে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়া আটকে রেখেছিল জয়কে, প্রথম ৩০ বলে তিনি করেছিলেন সমানসংখ্যক রান, সে পর্যন্ত মেরেছিলেন দুটি ছয়। তবে আর অপেক্ষা করেননি এরপর, মুমিনুলকে এরপর টানা দুই ছয়ে চল্লিশের ঘরে গেছেন, ফিফটি পূর্ণ করেছিলেন ৪০ বলে। ফিফটির পরের ১৫ বলে তিনি করেছেন ৩৫ রান, ইনিংসে মেরেছেন ৩টি চারের সঙ্গে ৭টি ছয়। প্রায় সবকটি ছয়ই তিনি মেরেছেন মিডউইকেট থেকে লং-অনের মাঝ দিয়ে। 

    শেষ দুই ওভারে ডিওএইচএস তুলেছিল ৪০ রান, তাতে অবশ্য অবদান ছিল আলিস আল ইসলামের ৯ বলে ১৫ রানের ক্যামিওরও। গাজির এক মাহাদি ছাড়া উইকেট নিয়েছেন বাকি ৫ বোলারই। এদিনও পঞ্চম বোলার বদলে ফেলেছে গাজি, অভিষেক করানো হয়েছে মিডিয়াম পেসার মহিউদ্দিন তারেককে, যিনি নিয়েছেন ৩২ রানে ১ উইকেট। মুমিনুলকেও বোলিংয়ে এনেছিলেন এদিন মাহমুদউল্লাহ, ২ ওভারে ১৮ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন তিনিও।  

    রানতাড়ায় ওপেনিংয়ে আসা মাহাদি হাসানের ১০ বলে ২২ রানের ইনিংসেই অনেকখানি ছিটকে গেছে এরপর ডিওএইচএস। দ্বিতীয় উইকেটে মুমিনুল হকের সঙ্গে সৌম্য সরকার যোগ করেছেন ৬৫ রান। ৩৪ বলে ২৭ করে প্রথম মুমিনুল, এরপর ৩৫ বলে ৩৭ রান করা সৌম্য এবং ১৮ বলে ১৯ করা মাহমুদউল্লাহ ফিরলেও ইয়াসির আলি রাব্বির ১৮ বলে ২৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে সহজ জয়ই নিশ্চিত করেছে গাজি গ্রুপ। 

    ****

    প্রাইম-ব্যাংক-প্রাইম দোলেশ্বর, বিকেএসপি-৩
    প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ১৫১/৭, ২০ ওভার (মিঠুন ৫৫, এনামুল ২৯, অলক ২৬, নাহিদুল ২০, কামরুল রাব্বি ২/২২, এনামুল জুনিয়র ১/১৭)
    প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব ১৪৮/৯, ২০ ওভার (কামরুল রাব্বি ৩৮*, মার্শাল ২২, ফজলে রাব্বি ২১, মোস্তাফিজুর ৩/২৫, শরিফুল ২/১৫, রুবেল ২/৪৬, নাঈম ১/১৯, অলক ১/৩০)
    প্রাইম ব্যাংক ৩ রানে জয়ী 


    শেষ ওভারে টেবিলের শীর্ষে থাকা দোলেশ্বরের প্রয়োজন ছিল ৩১ রান। এরপর রুবেল হোসেনের ওপর কামরুল ইসলাম রাব্বি যে তান্ডব চালালেন, তাতে প্রায় অসম্ভবকে ছুঁয়ে ফেলেছিল তারা। রুবেলের প্রথম পাঁচ বলে রাব্বির স্কোরিং ছিল এমন- ছয়, দুই, ছয়, ছয়, ছয়! তবে শেষ বলে আবারও তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুললেন রাব্বি, আউট না হলেও সিঙ্গেলের বেশি হলো না। দোলেশ্বরকে প্রায় অসম্ভব এক জয় এনে দিতে গিয়ে খুব কাছাকাছি থেকে আটকে গেলেন তিনি। এর আগে বোলিংয়েও ২২ রানে নিয়েছিলেন ২ উইকেট, তবে দিনটা তার হলেও দোলেশ্বরের হয়নি। প্রাইম ব্যাংকও শেষ ওভারের শঙ্কা কাটানো জয়ে দোলেশ্বরকেই টপকে উঠে গেছে টেবিলের শীর্ষে। 

    বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে আগে ব্যাটিং করা প্রাইম ব্যাংক দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও তামিম ইকবাল এদিন টেকেননি বেশিক্ষণ। ১৮ বলে ২৯ রান করে এখন পর্যন্ত মৌসুমের সেরা ব্যাটিংটা করেছেন অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়। তবে প্রাই ব্যাংককে ১৫০ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার মূল কৃতিত্ব মোহাম্মদ মিঠুনের, ৫০ বলে ৫৫ রানের ইনিংসের পথে তিনি এনামুলের সঙ্গে ৪১ রানের পর নাহিদুল ইসলামকে নিয়ে ৩৮ ও অলক কাপালির সঙ্গে গড়েছিলেন ৩৭ রানের জুটি। ১ চার ও ২ ছয়ে কাপালি করেছিলেন ১৪ বলে ২৬ রান। 
     


    রানতাড়ায় দ্বিতীয় বলেই ফিরেছিলেন আগেরদিন ঝড় তোলা ইমরান উজ জামান। এরপর দোলেশ্বর উইকেট হারিয়েছে নিয়মিত বিরতিতে। সাইফ হাসান, মার্শাল আইয়ুব, শরিফুল্লাহ, ফজলে মাহমুদ রাব্বিরা শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি, তৃতীয় উইকেটে মার্শাল ও রাব্বির ৩৬ ছাড়া তেমন কাঙ্খিত জুটিও পায়নি দোলেশ্বর। 

    এরপর কামরুল রাব্বি নেমেছিলেন ৯ নম্বরে, ১৮তম ওভারে। শরিফুলকে দুই চারে শুরু করেছিলেন, ওপাশে মোস্তাফিজুর রহমানের তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে একটি ছয় মেরেছিলেন রেজাউর রহমান রাজা। এরপর ৩ ওভারে ১৯ রানে ২ উইকেট নেওয়া রুবেলের ওপর রাব্বি ঝড় তুললেন, তবে তাতে ঠিক উড়ে গেল না প্রাইম ব্যাংক।