প্রাইম ব্যাংকের দাপট, দোলেশ্বরের যথেষ্ট ১১৮ রান, হোঁচট খেলাঘরের
প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব ১১৮ অল-আউট, ১৯.৫ ওভার (ফজলে ২৯, শামিম ১৭, সাইফ ১৬, শহিদ ৩/২৮, নাবিল ২/১৭, হোসাইন ১/৭, সানজামুল ১/১৫)
লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জ ১০৪/৮, ২০ ওভার (আল-আমিন ৩০, আজমির ২৩, শহিদ ২১*, কামরুল রাব্বি ৩/১৫, শফিকুল ২/৬, শরিফুল্লাহ ১/৬, এনামুল জুনিয়র ১/২২, রেজা ১/৩৬)
দোলেশ্বর ১৪ রানে জয়ী
প্রয়োজন ছিল বলপ্রতি একেরও কম রান। তবে কামরুল ইসলাম রাব্বি, শফিকুল ইসলামদের কাছ থেকে সেটিও নিতে পারলেন না রূপগঞ্জ ব্যাটসম্যানরা। বিকেএসপিতে ১১৮ রানের সম্বল নিয়েও তাদেরকে আটকে দিয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর। ৯ রাউন্ড শেষে তারা এখন তিনে।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দোলেশ্বর এদিন ওপেনিংয়ে পাঠিয়েছিল শরিফুল্লাহকে। তবে ইমরান উজ জামান বা তিনি- দুজনের কেউই টেকেননি বেশিক্ষণ। ৭ রানে ২ উইকেট হারানোর পর সাইফ হাসানও রান-আউট হয়েছেন ১৪ বলে ১৬ রান করে। আগেরদিনও ঠিক এমন পরিস্থিতি থেকেই দোলেশ্বরকে টেনেছিলেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি, এদিনও চেষ্টা করেছেন। তবে চাপ সামাল দেওয়ার মূল্য গুণতে হয়েছে তাকে- ২৯ রান করতে খেলেছেন ৩৮ বল। তার রান-আউটে ভেঙেছে মার্শাল আইয়ুবের সঙ্গে ৪১ রানের জুটি- ইনিংসে যা সর্বোচ্চ।
দোলেশ্বরের গিয়ার বদলানোর অনেকখানিই নির্ভর করছিল শামিম পাটোয়ারি ও ফরহাদ রেজার ওপর- তবে দুজন যথাক্রমে ১২ বলে ১৭ ও ৫ বলে ৮ রান করেই আউট হলে। দোলেশ্বরকে কমের মাঝে আটকে রাখার কাজটা ভালভাবেই করেছেন দুই বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদ, সানজমুল ইসলামের সঙ্গে মোহাম্মদ শহিদ ও হোসাইন আলি। ইনিংসে দুই রান-আউটও সহায়তা করেনি দোলেশ্বরকে।
রানতাড়ায় প্রথম ৩ ওভারে ২ উইকেট হারালেও আজমির আহমেদের ১৯ বলে ২৩, আল-আমিনের ৩৩ বলে ৩০ রানের ইনিংস রূপগঞ্জকে আশা জোগালেও গুচ্ছাকারে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে তারা এরপর। জাকের আলি কিছুক্ষণ টিকলেও ২৪ বল খেলে করেছেন মাত্র ১৩ রান। শেষ ওভারে গিয়ে ফরহাদ রেজাকে মারা মোহাম্মদ শহিদের তিন ছয়ে একশ পেরুলেও জয় থেকে বেশ দূরেই থামতে হয়েছে রূপগঞ্জকে।
প্রথম ওভারে ৮ রান দেওয়া রাব্বি বোলিং শেষ করেছেন ৪ ওভারে ১৫ রানে ৩ উইকেটের ফিগার নিয়ে। বাঁহাতি পেসার শফিকুল ৩ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৬ রান, নিয়েছেন ২ উইকেট।
*****
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ১৪৭/৭, ২০ ওভার (রনি ৫৪, তামিম ২৫, মিঠুন ১৬, রাকিবুল ২/১৪, আসাদুজ্জামান ২/৩৮, মোহাইমিনুল ১/৮, ইমন ১/৩১)
ওল্ড ডিওএইচএস স্পোর্টস ক্লাব ১২৫ অল-আউট, ২০ ওভার (জয় ২৬, রাইয়ান ২১, প্রিতম ১৯, শরিফুল ৩/২৩, মনির ২/১৭, অলক ২/১৯, নাহিদুল ২/২৪, রুবেল ১/১১)
প্রাইম ব্যাংক ২২ রানে জয়ী
চোটের কারণে আগে থেকেই ছিলেন না মোস্তাফিজুর রহমান, এদিন বোলিংয়ের সময় চোট পেয়ে উঠে গেছেন রুবেল হোসেনও। তবে ওল্ড ডিওএইচএসকে হারাতে সেসব বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি প্রাইম ব্যাংকের। আগের ম্যাচে আবাহনীর কাছে হারলেও রনি তালুকদারের তিন ম্যাচে দ্বিতীয় ফিফটির পর বোলারদের সমন্বিত পারফরম্যান্সে শেষ পর্যন্ত সহজ জয়ই পেয়েছে তারা, ধরে রেখেছে টেবিলের শীর্ষস্থানও।
১৪৮ রানতাড়ায় ওল্ড ডিওএইচএস ২৬ রানে হারিয়েছিল ২ উইকেট, তৃতীয় উইকেটে মাহমুদুল হাসান জয় ও রাইয়ান রহমান যোগ করেছিলেন ৩৭ রান। তবে এরপর আবার নেমেছে ধস, ১১ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়েছে তারা। মাঝে প্রিতম কুমারের ১২ বলে ১৯ আর শেষদিকে রাকিবুলের ১১ বলে ১৩ রান ছাড়া সেসব সামাল দেওয়ার মতো কিছু ছিল না তাদের। শুরুতে মনির হোসেন, মাঝে অলক কাপালি ও নাহিদুল ইসলাম, শেষে শরিফুল ইসলাম ও রুবেল- টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা বোলিং লাইন-আপ এদিনও ছিল উজ্জ্বল।
অবশ্য নিজের তৃতীয় ওভারে অসমাপ্ত রেখেই উঠে গেছেন রুবেল, এর আগে ১ উইকেট নিয়েছেন ১১ রানে। পিঠের পুরোনো সমস্যা ফিরে এসেছে তার, ম্যাচশেষে জানিয়েছেন প্রাইম ব্যাংকের ম্যানেজার। ২.২ ওভারে ২৯ রান দেওয়া নাঈম হাসানই শুধু ছিলেন একটু খরুচে। মনির ও শরিফুল মিলে ৮ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট, অলক ও নাহিদুল মিলে ৪ উইকেট নিতে ৭ ওভারে খরচ করেছেন মাত্র ৪৩।
এর আগে গাজিকে ওপেনিংয়ে আরেকটি ভাল শুরু এনে দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল ও রনি, দুজনের জুটি ছিল ৫১ রানের। আগের ম্যাচে ফিফটি করা তামিম অবশ্য ফিরেছেন ২৮ বলে ২৫ রান করে মোহাইমিনুলের বলে স্টাম্পড হয়ে। ১৪তম ওভারে রাকিবুলের বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে রনি করেছেন ৩৯ বলে ৫৪, ৫ চারের সঙ্গে মেরেছেন ৩টি ছয়। রনির ঠিক পরের বলে ক্যাচ দিয়েছেন অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়ও, ১৭ বলে ১৫ রান করার পর।
রাকিবুল ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৪ রান, এ দুই উইকেট নিতে। ১২ বলে ১৬ করা মোহাম্মদ মিঠুন ও ৭ বলে ১২ করা অলক কাপালির উইকেট নিয়েছেন আসাদুজ্জামান পায়েল।
****
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ১৫৪/৬, ২০ ওভার (সাজ্জাদুল ৪৮, হৃদয় ৪৬, অঙ্কন ১৯, খালেদ ৩/২০, সাদ্দাম ১/২৮, মাসুম ১/৩৫)
খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতি ১১০/৭, ১৬ ওভার (লক্ষ্য ১৬ ওভারে ১২৬) (সাদিকুর ৩১, জহুরুল ২৭, ইমতিয়াজ ১৮, মোহর ২/১৩, তানভির ২/৩১, হাসান মুরাদ ১/৮, ইফতেখার ১/২৪)
শাইনপুকুর ডিএলে ১৫ রানে জয়ী
টেবিলের নিচের দিকের দুই দলের লড়াই, সুপার লিগে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখতে তাই সেটি গুরুত্বপূর্ণ। সাজ্জাদুল হক ও তৌহিদ হৃদয়ের দুটি চল্লিশ পেরুনো ইনিংসের পর শাইনপুকুর বোলারদের দাপটে সেখানে হোঁচট খেল খেলাঘর। ১৫৫ রানতাড়ায় বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে শেষ ৯ ওভারে ৭৬ রান প্রয়োজন ছিল খেলাঘরের, ৭ উইকেট বাকি রেখে। তবে বৃষ্টির পর ৩০ বলে ৪৭ রানের তুলনামূলক সহজ লক্ষ্যে ঠিক সুবিধা করতে পারেনি তারা।
মিরপুরে আগে ব্যাটিং করা শাইনপুকুর পাওয়ারপ্লেতে তুলেছিল ৪৭ রান, ২ উইকেটে। সাজ্জাদুল ও হৃদয় তৃতীয় উইকেটে যোগ করেছেন ৭০ রান, খালেদ আহমেদের বলে ৩৪ বলে তিনটি করে চার-ছয়ে ৪৮ রান সাজ্জাদুল ফিরলে ভেঙেছে সে জুটি। ফিফটি পাননি হৃদয়ও, ৪২ বলে ৫ চারে শাইনপুকুর অধিনায়ক করেছেন ৪৬ রান। শেষ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৬ রানের বেশি তুলতে পারেনি শাইনপুকুর, শেষ ৫ ওভারে উঠেছিল ৩৮ রান।
রানতাড়ায় উইকেট হারিয়ে শুরুটা ঠিক আক্রমণাত্মক হয়নি খেলাঘরের, তবে পাওয়ারপ্লের পরের অংশে সাদিকুর রহমানের ২৩ বলে ৩১ রানের ইনিংসে একটু এগিয়েছিল তারা। বৃষ্টির আগ দিয়ে হাসান মুরাদের বলে বোল্ড হয়েছেন তিনি। অন্যদিকে জহুরুল ইসলাম থিতু হয়েছিলেন, তবে বৃষ্টির পর দিয়ে রান-বলের ব্যবধানটা কমার আগেই তানভির ইসলামের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৩০ বলে ২৭ রান করে। এরপর ৭ বলে ১৫ করেছেন মাসুম খান, তবে শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে তার রান-আউটে কার্যত আশা শেষ হয়ে গেছে খেলাঘরের।
এ জয় দিয়ে ৬ পয়েন্ট হলো শাইনপুকুরের, খেলাঘরের পয়েন্ট ৮।