আবার মুনিম ঝড়, গাজির টানা চার, ভেসে গেল মোহামেডান-ব্রাদার্স
আবাহনী লিমিটেড ১৮১/৪, ২০ ওভার (মুনিম ৭৪, শান্ত ৬৫*, মোসাদ্দেক ২৬, এবাদত ১/২০, নাসির ১/২৪, শাকিল ১/২৭, জিয়াউর ১/৩৬)
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ৯৮/৮, ১৩ ওভার (লক্ষ্য ১৩ ওভারে ১৪৮) (এনামুল ২৯*, নুরুল ২২, রানা ৩/১৬, আরাফাত সানি ২/১৬, সাইফউদ্দিন ১/১৯, বিপ্লব ১/২১, তানজিম ১/২৬)
আবাহনী ডিএলে ৪৯ রানে জয়ী
আগেরদিন ছিটকে দিয়েছিলেন প্রাইম ব্যাংককে, এবার মুনিম শাহরিয়ার ঝড় তুললেন শেখ জামালের বিপক্ষে। তার ৪০ বলে ৭৪ রানের সঙ্গে নাজমুল হোসেন শান্তর ৪২ বলে ৬৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে ১৮১ রান তোলা আবাহনী শেখ জামালকে হারিয়েছে বড় ব্যবধানে। এ নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ তিনটি স্কোরই গড়লো আবাহনী, তবে এদিন বৃষ্টির কারণে তারা খেলেছে ১৮.২ ওভার, সে হিসেবে ওভারপ্রতি সবচেয়ে বেশি রান উঠেছে এ ইনিংসেই।
মুনিম এদিন ঝড়টা শুরু করেছিলেন মূলত তৃতীয় ওভারে, এবাদত হোসেনকে ছয়ের পর দুই চার মেরে। ঠিক পরের ওভারে তার ওপেনিং সঙ্গী নাইম শেখ ফিরেছেন ১১ বলে ১০ রান করার পর, এরপর মুনিমও একটা ক্যাচ তুলেছিলেন লং-অনে। তবে সেটি ঠিকঠাক নিতে পারেননি আব্দুল হালিম, মুনিমের রান ছিল তখন ১৭। এরপর তার সঙ্গে শান্ত যোগ দিলে দুজনকে আর থামাতে পারেনি শেখ জামাল। পাওয়ারপ্লের মাঝেই আবাহনী তুলেছিল ৫৯ রান, যার ৪৬ রানই ছিল মুনিমের।
২৪ বলেই ফিফটি পূর্ণ করেছেন এই ডানহাতি। আগেরদিন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেও সেঞ্চুরি পাননি ৮ রানের জন্য, এদিন সেটি হয়ে যাবে বলেই মনে হচ্ছিল। তবে একই পেসে খেলতে গিয়ে ১২তম ওভারের শেষ বলে জিয়াউরকে টেনে মারার চেষ্টায় ধরা পড়েছেন, এর আগে মেরেছেন ৯টি চার, ৩টি ছয়।
আইসিসির প্লেয়ার অফ দ্য মান্থ হওয়ার দিনে আবাহনী অধিনায়ক মুশফিক ফিরেছেন শূন্যতেই, তবে মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে আবাহনীর গিয়ার কমতে দেননি শান্ত। এই বাঁহাতি ফিফটি করেছেন ৩০ বলে, বৃষ্টি নামার আগে অপরাজিত ইনিংসে ৬টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ২টি ছয়। এর আগে ৪৯ রানের ইনিংস কাটিয়ে এটিই এখন সর্বোচ্চ।
বৃষ্টি থামার পর শেখ জামালের লক্ষ্য ছিল ১৩ ওভারে ১৪৮। তবে আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক সৈকত আলি ও তিনে আসা জিয়াউর রহমান ফিরেছিলেন দুই ওভারের মাঝেই। তবে তাদেরকে দুমড়ে দিয়েছে মূলত মেহেদি হাসান রানার করা ৫ম ওভার- যেখানে ৫ বলের ব্যবধানে ফিরেছেন ইমরুল কায়েস, নুরুল হাসান সোহান ও তানভীর হায়দার। নুরুল করেছিলেন ১১ বলে ২২। আর শেষদিকে মোহাম্মদ এনামুল করেছেন ২৩ বলে অপরাজিত ২৯।
এ জয় দিয়েও অবশ্য প্রাইম ব্যাংককে টপকে যাওয়া হয়নি আবাহনীর, রান-রেটের হিসেবে দুইয়েই আছে তারা। আর ৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে সাতে আছে শেখ জামাল।
****
পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব ১০৯/৭, ২০ ওভার (হাসানুজ্জামান ২৬, জয়রাজ ২৪, মিলন ২১, রাজিবুল ২১*, মহিউদ্দিন ৩/৩৬, মাহাদি ১/১০, মুমিনুল ১/১৩, মাহমুদউল্লাহ ১/১৬, মুকিদুল ১/২৬)
গাজি গ্রুপ ক্রিকেটারস ৪৭/১, ৫.৩ ওভার (৮ ওভারে লক্ষ্য ৪৭) (মাহাদি ৩৩, সৌম্য ১১, মইন ১/২০)
গাজি গ্রুপ ডিএলে ৯ উইকেটে জয়ী
পারটেক্স হারবে- এটি যেন এখন অলিখিত নিয়ম। প্রতিপক্ষ কে- প্রশ্ন সেটাই। সে নিয়ম মেনে এবার গাজি গ্রুপের কাছে উড়ে গিয়ে ৯ম রাউন্ড শেষে জয়শূন্য থাকল পারটেক্স। বিপরীতে টানা চার জয়ে টেবিলের চারে উঠে এসেছে গাজি গ্রুপ।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা পারটেক্স ২০ ওভারে তুলতে পেরেছিল মাত্র ১০৯ রান। চারজন পেরিয়েছেন ২০, তবে শেষদিকে রাকিবুল হাসানের ১৩ বলে ২১ রানের ইনিংসে ছাড়া বাকিগুলি ঠিক এ ফরম্যাটের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
গাজির বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৬ রান, বাংলাদেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে ৪ ওভার বোলিং করে এর চেয়ে কম রান দিয়েছেন শুধু আর একজন। সবচেয়ে বেশি ৩ উইকেট যিনি পেয়েছেন, সেই মহিউদ্দিন তারেক আবার খরচ করেছেন ওভারপ্রতি ১২ রান। মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ও মাহাদি হাসান- চারজনই করেছেন আঁটসাঁট বোলিং, নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
রানতাড়ায় মাহাদি হাসানের ঝড়ে ৩.৩ ওভারেই ৪৩ রান তুলেছিল গাজি, এরপর নামা বৃষ্টিশেষে ৮ ওভারে তাদের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ৪৭ রান। সেটি পেরিয়ে যেতে তারা নিয়েছে ৫.৩ ওভার। ১৩ বলে ১ চার ও ৪ ছয়ে মাহাদি করেছেন ৩৩ রান, ১৬ বলে ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন সৌম্য সরকার।
****
মোহামেডান ১৪৩/৯, ২০ ওভার (মজিদ ৩৫, মাহমুদুল ২৮, ইরফান ১৯, আলাউদ্দিন ২/২৭, রাহাতুল ২/২৯, গাফফার ১/১৩, সুজন ১/২৩, মানিক ১/২৬) বনাম ব্রাদার্স ইউনিয়ন
ম্যাচ পরিত্যক্ত
লিগের প্রথম রাউন্ডে দুটি ম্যাচ হয়েছিল পরিত্যক্ত। এরপর ভেন্যু, সূচি বদলিয়ে চালানো হয়েছে খেলা, প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টির হানা থাকলেও অন্তত ফল এসেছে ম্যাচগুলিতে। তবে আবারও আরেকটি ম্যাচ হলো পরিত্যক্ত। বিকেএসপির অন্য মাঠেও অন্তত খেলা হয়েছে দ্বিতীয় ইনিংসে, তবে বৃষ্টির কারণে ৪ নম্বর মাঠে মোহামেডানের বিপক্ষে ব্রাদার্সের ইনিংস শুরুই হতে পারেনি। এ নিয়ে দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হলো ব্রাদার্সের।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল সাকিবকে ছাড়া দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা মোহামেডান। সেখানে ব্যাটিংয়ে অবশ্য খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি তারা। ওপেনিংয়ে আব্দুল মজিদ করেছিলেন সমানসংখ্যক বলে ৩৫, তিনে নামা মাহমুদুল হাসান ২৮ রান করলেও খেলেছিলেন ৩১ বল। মাঝে ইরফান শুক্কুর ১৩ বলে করেছেন ১৯, আর শেষদিকে শুভাগত হোম ৭ বলে ১৫। ব্রাদার্সের আলাউদ্দিন বাবু ও রাহাতুল ফেরদৌস নিয়েছেন দুটি করে উইকেট, একটি করে নিয়েছেন আব্দুল গাফফার, সুজন হাওলাদার ও মানিক খান।
৯ রাউন্ড শেষে মোহামেডানের পয়েন্ট এখন ১১, টেবিলে গাজি গ্রুপের পর পাঁচ নম্বরে তারা। আর ৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে মোহামেডানের ঠিক পরেই আছে ব্রাদার্স।