১৩২ নিয়ে আবাহনীকে দোলেশ্বর, ১০৭ নিয়ে গাজিকে আটকে দিল শাইনপুকুর
প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব ১৩২/৯, ২০ ওভার (সাইফ ৫৮, ইমরান ২৩, মার্শাল ২০, রানা ৩/২৮, তানজিম ২/২৬, মোসাদ্দেক ১/৩, আরাফাত সানি ১/১৬, সাইফউদ্দিন ১/৩৪)
আবাহনী লিমিটেড ১০৪ অল-আউট, ১৯.৫ ওভার (আফিফ ২৬, নাইম ২২, মোসাদ্দেক ১৪, কামরুল রাব্বি ৪/১১, শরিফুল্লাহ ২/১২, রাজা ১/১২, শামিম ১/১৫, সাইফ ১/২০, এনামুল জুনিয়র ১/২৪)
দোলেশ্বর ২৮ রানে জয়ী
টেবিলের শীর্ষস্থানীয় দুই দলের লড়াই, অথচ প্রথম ইনিংসশেষে সেটিকে প্রায় একপেশে বানিয়ে ফেলেছিল আবাহনী। মেহেদি হাসান রানা, তানজিম হাসান সাকিবদের তোপে ২০ ওভারে ১৩২ রানেই আটকে গিয়েছিল প্রাইম দোলেশ্বর। তবে পরে কামরুল ইসলাম রাব্বিরা আবারও সেটিকে একপেশে বানিয়ে ফেললেন দোলেশ্বরের দিকে, ১৩৩ তাড়া করতে গিয়ে ১০৪ রানেই হুমড়ি খেয়ে পড়েছে মুশফিকুর রহিমের আবাহনী। এ জয়ে আবাহনীকে টপকে গেছে দোলেশ্বর, প্রথম রাউন্ডে এক ম্যাচ বাকি থাকতে তাদের পয়েন্ট এখন ১৫, শীর্ষে থাকা প্রাইম ব্যাংকের ১৬, ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে আবাহনী।
মিরপুরে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের নিচে ব্যাটিং সহজ ছিল না সেভাবে, তবে ইমরান উজ জামান ও সাইফ হাসানের ওপেনিং জুটি শুরুটা ভালই করেছিলেন দোলেশ্বরের। ১৬ বলে ৩০ করে ইমরান ফিরেছেন আরাফাত সানির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে, ৭ বল খেললেও ১ রানের বেশি করতে না পারা ফজলে মাহমুদ রাব্বি এলবিডব্লিউ হয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেনের বলে। মার্শাল আইয়ুবকে নিয়ে এরপর তৃতীয় উইকেটে সাইফ যোগ করেছিলেন ৫৪ রান, ২৩ বলে ২০ করা ফজলেকে ফিরিয়ে সে জুটি ভেঙেছেন রানা। পরের ওভারে এসে সাইফের উইকেটও নিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার। ৪৯ বলে ৫৮ রানের ইনিংসে সাইফ মেরেছেন ৬টি ছয়, সঙ্গে একটি চার।
সাইফ ফিরেছিলেন ১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে, রানাকে একটি ছয়ের পর আবার তুলে মারতে গিয়ে লং-অনে। সে ওভারেই শামিমকেও ফিরিয়েছেন রানা, দোলেশ্বরের আরও বড় সংগ্রহের পথের অনেকটাই বন্ধ হয়েছে তাতে। পরের ওভারে ফরহাদ রেজা একটি ছয় মেরেছিলেন সাকিবকে, তবে তিনিও ফিরেছেন পরপরই। শেষ ২ ওভারে দোলেশ্বর ১২ রান, শেষ ওভারে মাত্র ১!
রানতাড়ায় আবাহনী উইকেট হারিয়েছে নিয়মিত বিরতিতে, যেটির শুরু হয়েছিল চতুর্থ ওভারে শরিফুল্লাহর বলে আগের দুই ম্যাচে আবাহনীর সর্বোচ্চ স্কোরার মুনিম শাহরিয়ারের উইকেট দিয়ে। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত শরিফুল্লাহর বলে দিয়েছেন ক্যাচ, আর মুশফিক শামিম হোসেনকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। পরের ওভারে নাইম শেখ ফিরেছেন মিডউইকেটে রাব্বির দারুণ এক ক্যাচে, সাইফের বলে।
মাঝে সমানসংখ্যক বলে ১৪ রান করা মোসাদ্দেক হোসেন ও ১৫ বলে ২৬ রান করা আফিফ হোসেনের জুটিতে উঠেছিল ৩৪ রান, তবে বড় ক্ষতি করার আগেই দুজনকে ফিরিয়েছেন যথাক্রমে রাব্বি ও এনামুল হক জুনিয়র। রাব্বি এরপর ছেঁটে দিয়েছেন আবাহনীর লেজ।
****
লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জ ১৩১/৬, ২০ ওভার (সানজামুল ৩০, আল-আমিন ১৬, সাব্বির ১৫, রাজিবুল ২/১৩, শাহাদাত ২/২৫, মিলন ১/২১)
পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব ১১০/৮, ২০ ওভার (মিলন ২১, ধীমান ২১, শহিদ ২/১৭, নাবিল ১/১৩, মুক্তার ১/২২, অনিক ১/২৭)
রূপগঞ্জ ২১ রানে জয়ী
পারটেক্সকে টানা ১০ম পরাজয় উপহার দিয়েছে রূপগঞ্জ। লিগে এখন পর্যন্ত জয়শূন্য পারটেক্সের জন্য যথেষ্ট হয়েছে রূপগঞ্জের ১৩১ রানই।
আগে ব্যাটিং করা রূপগঞ্জের প্রথম ৪ ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন তবে ১৫ পেরুতে পারেননি কেউ। মাঝে সানজামুল ইসলামের ২৩ বলে ৩০ এবং শেষে অধিনায়ক নাঈম ইসলামের ২০ বলে অপরাজিত ২৯ রানে ভর করে মোটামুটি একটা স্কোর পেয়েছিল তারা। পারটেক্সের বাঁহাতি স্পিনার রাজিবুল ইসলাম করেছেন দারুণ আঁটসাঁট বোলিং, ৪ ওভারে ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি মাত্র ১৩ রানে। আর পেসার শাহাদাত হোসেন ২ উইকেট নিয়েছেন ২৫ রানে।
তবে পারটেক্সের মূল সমস্যা এ লিগে ব্যাটিং, সেটি এবারও কাটিয়ে উঠতে পারেনি তারা। রানতাড়ায় উইকেট হারানোর চাপ সামলাতে পারেনি তারা, শুরুতে সমানসংখ্যক বলে আব্বাস মুসার ১৭, অধিনায়ক ধীমান ঘোষের ২৩ বলে ২১, নাজমুল হোসেন মিলনের সমানসংখ্যক বলে ২১-এর পর রাজিবুলের ১৩ বলে ১৭ রানের ইনিংস যথেষ্ট হয়নি তাদের।
****
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ১০৭ অল-আউট, ১৯.৪ ওভার (সাব্বির ৪১, সাজ্জাদুল ২৫, মাহমুদউল্লাহ ৩/১৪, মহিউদ্দিন ২/২৯, মাহাদি ২/৩৬, মুকিদুল ১/১১)
গাজি গ্রুপ ক্রিকেটারস ৯৯ অল-আউট, ১৯.৩ ওভার (নাসুম ১৭, মুমিনুল ১৭, মোহর ৪/২২, সুমন ৩/২০)
শাইনপুকুর ৮ রানে জয়ী
মিরপুরের দ্বিতীয় ম্যাচে ১৩২ তাড়া করতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছে আবাহনী, সন্ধ্যার ম্যাচে গাজি গ্রুপের অবস্থা আরও বাজে হয়েছে শাইনপুকুরের কাছে। ১০৮ রানতাড়ায় তারা থেমেছে ৯৯ রানেই।
মাহাদি হাসান ও সৌম্য সরকার রানতাড়ায় শুরুতেই ভুগছিলেন, প্রথমজন ১২ বলে ৮ ও পরেরজন ফিরেছেন ৮ বলে ২ রান করে। চারে আসা আকবর আলির সঙ্গে মুমিনুল হক এরপর টিকে থাকার লড়াই করেছেন, তবে পরপর দুই ওভারে একই রানে দাঁড়িয়ে- মুমিনুল হাসান মুরাদ ও আকবর সুমন খানের বলে হয়েছেন বোল্ড। এরপর মাহমুদউল্লাহ, ইয়াসির আলি রাব্বি, আরিফুল হক ও জাকির হাসান- গাজিকে পার করাতে পারেননি কেউ।
শেষদিকে মুকিদুল ইসলাম ৯ বলে ১১ রান করে ৮ম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছিলেন, এরপর ফিরেছিলেন জাকির। তবে শেষ ওভারে হুট করেই গাজিকে আশা জুগিয়েছিলেন নাসুম আহমেদ। মোহর শেখের করা শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৯ রান, ওয়াইডের পর ডাবলসে প্রথম বৈধ ডেলিভারিতে ৩ রানের পর দ্বিতীয় বলে নাসুম মেরেছিলেন ছয়। এরপর আবার ওয়াইড করেছিলেন মোহর, ফলে শেষ ৪ বলে ৯ রান প্রয়োজন ছিল গাজির। তবে মোহরের এরপরের বলে আবার তুলে মারতে গিয়ে ওয়াইড লং-অনে ধরা পড়েছেন নাসুম। মোহর শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেট নিয়েছেন ২২ রানে, সুমন খান ৩টি নিয়েছেন ২০ রান খরচ করে।
এর আগে শাইনপুকুরের স্কোরকার্ড ছিল অদ্ভুত- ওপেনিংয়ে নামা সাব্বির হোসেন করেছেন ২৬ বলে ৪১, ৪ চার ও ৩ ছয়ে আর পাঁচে নামা সাজ্জাদুল হক ১৫ বলে ২৫ রান করেছেন ৩ চার ও ১ ছয়ে। তবে এ দুটি ছাড়া শাইনপুকুর ইনিংসে নেই আর কোনো দুই অঙ্কের ইনিংস, এমনকি আর কারও স্ট্রাইক-রেটও ছোঁয়নি একশ। গাজি গ্রুপ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ৩ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১৪ রানে, মাহাদি অবশ্য ২ উইকেট নিতে খরচ করেছেন ৩৬ রান- সে সময় সাব্বিরের তোপে পড়েছিলেন তিনি। এছাড়া মহিউদ্দিন তারেক ২ উইকেট নিয়েছেন ২৯ রানে।