পেরুকে উড়িয়ে দিয়ে জয়রথ ছুটছেই নেইমারদের ব্রাজিলের
ফুলটাইম স্কোর : ব্রাজিল ৪-০ পেরু
আবার গোল করলেন নেইমার, আবারও সহজ জয় ব্রাজিলের। নেইমারের পাশাপাশি অ্যালেক্স সান্দ্রো, এভারটন রিবেইরো আর রিচার্লিসনও গোল পাওয়ায় গতবারের ফাইনালিস্ট পেরুকে উড়িয়ে দিয়েই কোপা আমেরিকায় নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেও অনায়াসেই জয় পেয়েছে সেলেসাওরা।
ভেজা মাঠ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় ব্রাজিলের সহজাত পাসিংয়ে কিছুটা সমস্যা হবে বলে মনে হয়েছিল। তবে সেসবের তোয়াক্কা না করে মাত্র ১২ মিনিটেই গোলের খাতা খোলে তিতের দল। বাম প্রান্ত থেকে এভারটনের বাড়ানো ক্রস পেরুর ডিফেন্ডাররা ঠিকঠাকভাবে ক্লিয়ার করতে না পারায় বল গিয়ে পড়ে গ্যব্রিয়েল জেসুসের পায়ে, মাঝে ওঁত পেতে থাকা অ্যালেক্স সান্দ্রোর দিকে বল বাড়িয়ে দিলে সেখান থেকে কোনো ভুল করেননি সান্দ্রো। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে নিজের দ্বিতীয় গোল পেলেন তিনি।
গোলের পরেও আক্রমণাত্মক মানসিকতা নিয়েই খেলেছে ব্রাজিল। ২৫ মিনিটে আবার এসেছিল গোলের সুযোগ, তবে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ফাবিনহোর শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধের শেষদিকে বক্সে আবার সুযোগ পেয়েছিলেন সেই অ্যালেক্স সান্দ্রোই, তবে নেইমারের বাড়িয়ে দেওয়া বল তিনি পোস্টের উপর উড়িয়ে মারেন। প্রথমার্ধ তাই এক গোলের ব্যবধানেই শেষ করে ব্রাজিল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ম্যাচের দখল নিয়ে নেয় স্বাগতিকরা। ৫২ মিনিটে জেসুসের স্কয়ার পাস থেকে দানিলোর গোলমুখে শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ৬৩ মিনিটের মাথায় নেইমারের ড্রিবলিংয়ে বিভ্রান্ত হয়ে ডিবক্সের কোণায় তাকে ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। অবশ্য পরে ভিএআর বাতিল করে সেই সিদ্ধান্ত। গোলের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা নেইমার গোলের খাতায় নিজের নাম তুলতে বেশিক্ষণ সময় নেননি। ৬৭ মিনিটে ফ্রেডের কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকেই দারুণ এক শটে বল জালে জড়ান তিনি। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে পেলের ৭৭ গোল ছুঁতে তার আর প্রয়োজন মাত্র ৯ গোল।
নেইমারের খেলার ধার অবশ্য বিন্দুমাত্রও কমেনি গোলের পরেও। দারুণ এক দৌড়ে পেরুর ডিফেন্স ছত্রভঙ্গ করে রিচার্লিসনের উদ্দেশ্যে বল বাড়ালে প্রথমবারেই বাঁকানো শটে বল জালে জড়ানোর চেষ্টা করেন তিনি। পেরুভিয়ান গোলকিপার গালেস দুর্দান্ত সেভে অবশ্য রিচার্লিসনকে সেই যাত্রায় প্রতিহত করেন।
পেরুর রক্ষণবুহ্য ভেদ করে আরও কয়েকবার ত্রাস ছড়িয়েছেন নেইমার, বেশ কয়েকবারই কয়েক সেন্টিমিটার ব্যবধানে গোলের দেখা পাননি তিনি। স্বাগতিকদের মুহুর্মুহু আক্রমণে পেরুর প্রতিরোধ একেবারেই ভেঙে পড়ে ম্যাচের শেষদিকে এসে। নেইমার, রিচার্লিসন ও এভারটনের মসৃণ পাসিং শেষে রিচার্লিসন আলতো করে বল বাড়িয়ে দেন এভারটনের দিকে, বল জড়াতে ভুল করেননি এই ফ্ল্যামেঙ্গো মিডফিল্ডার।
ব্রাজিলের গোলযাত্রা থামেনি এরপরেও। ৯৫ মিনিটে রিচার্লিসনের বাড়ানো থ্রু থেকে ফিরমিনোর শট গালেস দক্ষতার সাথে প্রতিহত করলেও বল গিয়ে পড়ে সেই রিচার্লিসনের পায়েই, দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় সাইড ভলিতে গোল পেয়ে যান বদলি হিসেবে নামা এভারটন তারকা।
ঘরের মাঠে এবারও যে কোপা শিরোপা ছাড়া অন্য কিছু ব্রাজিল ভাবছে না, সেটা তারা আরেকবার প্রমাণ করল পেরুর সাথে বড় জয়ে। টানা দুই জয়ে গ্রুপ 'বি' শীর্ষেও উঠে গেল নেইমাররা। আগামী ২৪ জুন নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে ব্রাজিল।