'বোরিং ফুটবলে' ওয়েম্বলিতে ড্র করল ইংল্যান্ড-স্কটল্যান্ড
দলে দুর্দান্ত প্রতিভাবান সব ফুটবলার, অনেকেই লিগে দারুণ একটা মৌসুম কাটিয়ে এসেছেন। তবে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তারা সবাই বিবর্ণ, গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ড তাই ভীষণ বোরিং। ঘুমপাড়ানি ৯০ মিনিটের ম্যাচে ওয়েম্বলিতে স্কটল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচটা তাই গোলশূন্য ড্র করল ইংল্যান্ড। পরের রাউন্ড যাওয়ার জন্য ইংলিশদের অপেক্ষা তাই বাড়ছে, গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের ওপর নির্ভর করছে সবকিছু।
ফুটবলীয় শক্তি বিবেচনায় ইংল্যান্ড এখন স্কটল্যান্ডের চাইতে ডজন ডজন এগিয়ে। ঐতিহ্যগত দিক দিয়ে তবু প্রতিবেশী এই দুই দেশের দ্বৈরথ নিয়ে উত্তেজনার কোন কমতি ছিল না। কিন্তু মাঠে সেভাবে গুছিয়ে খেলতে পারেনি কেউ। দুই দল বিরতিতে গেছে ০ - ০ স্কোরলাইন নিয়েই।
তবে স্কোরলাইনটা এমন না হয়েও নিশ্চিতভাবেই ভিন্ন হতে পারতো। ম্যাসন মাউন্টের বাঁক নেওয়া কর্নারে জন স্টোনসের বেশ লাফিয়ে উঠে ফ্রি-হেডারে বল যখন আসছিলো, স্কটল্যান্ড গোলকিপার ডেভিড মার্শাল তখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন। তার ভাগ্য ভালো, গোলপোষ্টে লেগে বল ফিরে আসে। গোলবঞ্চিত হয় ইংল্যান্ড। ম্যাসন মাউন্ট আরেকবার বাঁ প্রান্ত থেকে স্টার্লিংয়ের বাড়ানো বল পেয়ে শট মারেন সামান্য বাইরে দিয়ে। শুরুর ওই ৪৫ মিনিটে অধিকাংশ সময়েই বল দখলে রেখেছিল ইংল্যান্ড, তবে ওই দুটির চাইতে ভালো সুযোগ আর বেশি তৈরি করতে পারেনি। নভেম্বর ২০১৭ সালের পর এই প্রথম এমন হলো, ইংল্যান্ড প্রথমার্ধে অনটার্গেটে কোন শট নিতে ব্যর্থ হলো। টিয়েরনি-ম্যাকটমনিদের স্কটল্যান্ডও শুরুর ওই ভুল পরে ইংল্যান্ডকে আর তেমন সুযোগ দেয়নি।
তবে গোলের দেখা পেতে পারত স্কটল্যান্ডও। পিকফোর্ডের দারুণ সেভে গোলবঞ্চিত হয় স্কটিশরা। বাঁ পাশ থেকে করা এন্ড্রু রবার্টসনের ক্রসে বল পেয়ে যান স্টিফেন ও’ডনেল। ডান বটম কর্নারের দিকে নেওয়া তার ভলিতে দারুণ রিফ্লেক্সে বল জালে জড়ানো থেকে বিরত রাখেন পিকফোর্ড। শুরুতেও পেনাল্টি বক্স থেকে অ্যাডামসের নেয়া শট দুর্দান্ত ব্লকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন স্টোনস।
দ্বিতীয়ার্ধে হ্যারি কেইন বল পেয়ে একবার পাস করেছিলেন রিস জেমসের পায়ে। বক্সের কিনারায় থাকা রিস জেমসের শট গেছে বারের উপর দিয়ে। তবে ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের মতো এদিনও তেমন ছন্দে ছিলেন না হ্যারি কেইন। এরপর গ্যারেথ সাউথগেট তার বদলে নামিয়েছেন মার্কাস রাশফোর্ডকে, এর আগে ফোডেনকে তুলে নামিয়েছিলেন জ্যাক গ্রিলিশকে। মেজর টুর্নামেন্টে অভিষেকের দিনে গ্রিলিশ ভালো খেললেও তবু পার্থক্য গড়ে দেওয়ার মতো কিছু করে দেখাতে পারেননি।
স্কটল্যান্ড রক্ষণে ছিল দুর্দান্ত। তাদের অধিনায়ক রবার্টসন রক্ষণের পাশাপাশি উপরে উঠেও ছিলেন বেশ ছন্দে। স্কটিশরা ফাইনাল থার্ডে থেকে গোলের তেমন সুযোগ তৈরি করতে না পারায় খেলা শেষমেশ সমাপ্ত হয়েছে গোলশূন্য ড্রতেই। তাতে অবশ্য পাশের দেশ থেকে আসা স্কটিশ ফ্যানদের ‘টার্টান আর্মি’ ফিরবে হাসিমুখেই। ইংল্যান্ডকে যে তারা জিততে দেয়নি, এটাই তাদের কাছে বড় পাওয়া।
কোন বছরের শুরুর ছয় ম্যাচে জিতেছে ইংল্যান্ড এর আগেও। তবে শুরুর সাত ম্যাচেই টানা জয়ের রেকর্ডটা তাদের নেই। এবার সুযোগ ছিল সে রেকর্ডটা পাওয়ার। তবে ছয় জয়ের পর এবার সপ্তম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে হোঁচট খাওয়াতে তা তাদের কাছে না পাওয়াই থাকলো। অপরদিকে ৩২ ম্যাচের পর এসে ইংল্যান্ডের সাথে কোন ম্যাচে ড্র করতে পেরেছে স্কটল্যান্ড। যে ড্রটা তাদের দরকার ছিল খুব। ইংল্যান্ডের সাথে হওয়াতে, পাশাপাশি টুর্নামেন্টে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে।