পাপু-মারিয়া-মেসি ম্যাজিকে প্যারাগুয়ে বাধা পার হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা
ফুলটাইম: আর্জেন্টিনা ১-০ প্যারাগুয়ে
গত কিছুদিনের ফর্মটা খুব একটা সুখকর না হলেও টানা তিন ড্রয়ের পর উরুগুয়ের সাথে জয়ে ফিরেছিল আর্জেন্টিনা। শিরোপার শক্ত দাবিদার লিওনেল স্কালোনির দল তাই স্বাভাবিকভাবেই জয়ের ধারা বজায় রাখতেই মাঠে নেমেছিল আজ। তবে প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ের সাথে তাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসটাও পক্ষে ছিল না। ২০১৫ সালের পর আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ে ৪ বার মুখোমুখি হয়েছে, তবে একবারও জয়ের মুখ দেখেনি আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে প্যারাগুয়ে সহজ জয় দিয়ে কোপা যাত্রা শুরু করে নিজেরাও ছিল আত্মবিশ্বাসী। তবে এসব বাধা পেরিয়ে আলেহান্দ্রো পাপু গোমেজের একমাত্র গোলে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। এই জয়ে পরের রাউন্ডে ওঠা নিশ্চিত করে ফেলেছে আলবিসেলেস্তেরা, ধরে রেখেছে গ্রুপ 'এ’-এর শীর্ষস্থানও।
দলের আক্রমণভাগে পরিবর্তন এনে শুরু থেকেই প্যারাগুয়ের উপর চেপে বসে আর্জেন্টিনা। এবারের আসরে প্রথমবারের মত শুরু করা সার্জিও আগুয়েরো সুযোগটা পেয়ে গিয়েছিলেন ম্যাচের ৮ মিনিটেই। দুই ডিফেন্ডার গুস্তাভো ও পিরিসের ভুল বোঝাবুঝিতে আগুয়েরোর পায়ে এসে বল পড়লেও উড়িয়ে মারেন তিনি। তবে ১০ মিনিটেই গোলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। প্রথম থেকেই প্যারাগুয়ে রক্ষণে ত্রাস ছড়ানো আনহেল ডি মারিয়াই তাদের রক্ষণবুহ্য ভেঙ্গে দেন। মেসির কাছ থেকে বল পেয়ে মারিয়ার দেওয়া থ্রু থেকে বল পেয়েই এগিয়ে আসা কিপারের মাথার ওপর দিয়ে আলতো চিপে বল জালে জড়ান পাপু গোমেজ।
গোলের পরেও আক্রমণের ধারা বজায় রাখা আর্জেন্টিনা আরেকটা গোল পেয়ে যেতে পারত ১৮ মিনিটের মাথায়। তবে মেসির নিচু ফ্রি-কিক কয়েক ইঞ্চি ব্যবধানে গোলপোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপর দুই দলই বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে মনোযোগী হলেও গোলমুখে তেমন একটা সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।
প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে আর্জেন্টিনা গোল পেলেও অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়। পাপু গোমেজের নিচু ক্রস নিজেদের জালে জড়ান ডিফেন্ডার আলোন্সো, তবে আক্রমণের বিল্ডাপে অফসাইড ঘোষণা করে রেফারি। প্রথমার্ধ তাই এক গোলের ব্যবধানে এগিয়েই শেষ করে আর্জেন্টিনা।
তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই বেশ অগোছালো ছিল আর্জেন্টিনা, আক্রমনভাগ ছিল একেবারেই নখদন্তহীন। এমনকি প্যারাগুয়ের পায়েই বল ছিল বেশিরভাগ সময় ধরে। তবে আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগ এদিন ছিল বেশ দৃঢ়। বেশ কয়েকবার পুরো দল নিয়েই আক্রমণে উঠেছিল প্যারাগুয়ে, তবে আর্জেন্টিনার রক্ষণের দৃঢ়তায় মুখ থুবড়ে পড়েছে তাদের আক্রমণ।
শেষ ১৫ মিনিটে অ্যাঞ্জেল রোমেরো, মিগুয়েল আলমিরনরা মুহুর্মুহু আক্রমণে বেশ কয়েকবার আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগের পরীক্ষা নিয়েছেন। ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো- জার্মান পেজ্জেলারা এদিন রক্ষণকে আগলে রেখেছিলেন বিশ্বস্ত প্রহরীর মতই। দুই উইংব্যাক মলিনা-তালিয়াফিকো শেষ দশ মিনিটে ক্রস সামাল দিয়েছেন নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে। অধিনায়ক লিওনেল মেসির আকাশি-নীল জার্সি গায়ে হাভিয়ের মাশ্চেরানোর সমসংখ্যক রেকর্ড ১৪৭ ম্যাচ খেলার দিনে তাই আলবিসেলেস্তেরা জয় নিয়ে ফিরেছেন কোন গোল হজম না করেই। শেষ টানা দুই ম্যাচে তারা ক্লিন শিট রেখেছিল ২০১৯ সালে, চিলি ও মেক্সিকোর বিপক্ষে।