দুইবার পিছিয়ে পড়েও মিউনিখে হাঙ্গেরির বুক ভেঙে শেষ হাসি জার্মানির
মিউনিখে নিজেদের মাঠে ম্যাচ, প্রতিপক্ষ হাঙ্গেরি, জার্মানির জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবেনি খুব বেশি কেউ। বিশেষ করে জার্মানি যেভাবে পর্তুগালকে উড়িয়ে দিয়ে এসেছিল, তার পর তো বটেই। কিন্তু হাঙ্গেরি দেখাল ফ্রান্সের সঙ্গে তাদের ড্র ফ্লুক ছিল না।, দুইবার এগিয়ে থেকে শেষ ১৬-র স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছিল। কিন্তু দুইবারই সমতা ফিরিয়েছে জার্মানি। শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ড্রয়ে জার্মানি চার পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে থেকেই চলে গেছে শেষ ১৬-তে। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড।
'গ্রুপ অফ ডেথ' নামকরণে হাঙ্গেরির কোনও ভুমিকা নেই। কিন্ত সেই হাঙ্গেরির সাথে ফ্রান্স ও পর্তুগালকে বড় পরীক্ষায়ই দিতে হয়েছিলো। ম্যাচের ১১ মিনিটে এগিয়ে গিয়ে আজ জার্মানিকেও তারা ভালো পরীক্ষায় ফেলে দিয়েছিলো। কাউন্টার অ্যাটাকে রোনাল্ড সালাই বল পেলে ডান প্রান্ত থেকে দুর্দান্ত এক ক্রস করেন। জার্মান দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলিয়ে এরপর প্রায় উড়ে গিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন তার অধিনায়ক অ্যাডাম সালাই।
এর কিছুক্ষণ পরেই সমতায় ফিরতে পারতো জার্মানি। কিমিখের কর্নারে ম্যাট হামেলস দারুণ এক হেড নিয়েছিলেন। বল জালে জড়ানো থেকে রুখতে হাঙ্গেরির গোলকিপার গুলাসির হাতে কিছু করার ছিল না। কিন্ত তাদের সৌভাগ্য, গোলপোস্টে গিয়ে লাগে বল। এর খানিকটা পরেই আবার সিক্স-ইয়ার্ড বক্সের সামনে সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন ম্যাথিয়াস গিন্টার। যদিও গিন্টারের দুর্বল ও সোজা ফার্স্ট টাচ ফাঁকি দিতে পারেনি গুলাসিকে। জার্মানি বারবার আক্রমণে করলেও খুব বেশি আর ভালো সুযোগ বানাতে পারেনি। লং রেঞ্জ থেকে হাঙ্গেরি কয়েকটা শট নিলেও তাতে স্কোরলাইনে কোন পার্থক্য আসেনি। প্রথমার্ধ শেষে দুদল গেছে তাই ১-০ স্কোরলাইন নিয়ে বিরতিতে। সে অবস্থায় জার্মানদের ইউরো যাত্রা সেখানেই শেষ।
তা হয়নি অবশেষে, তবে ম্যাচে নাটকের কমতি ছিল না। ৬৪ মিনিটে হ্যাভার্জের গোলে সমতায় ফিরে জার্মান। ডানদিক থেকে আসা বল গুলাসি এগিয়ে এসে পাঞ্চে ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। হামেলসের হেডারে এরপর ফাঁকা জালের সামনে বল পেয়ে অনায়াসেই গোল করেন হ্যাভার্জ। সেই গোলের পর কিক-অফ থেকে আক্রমণে গিয়েই আবার গোল দিয়ে দেয় হাঙ্গেরি।
অ্যাডাম সালাইয়ের পাসে বল পেয়ে আন্দ্রেস শেফার হেডে পরাস্ত করেন ম্যানুয়েল নয়্যারকে। হ্যাভার্জের গোলের ৯১ সেকেন্ড পরেই তাই লিড নিয়ে নেয় হাঙ্গেরি। গোলের জন্য মরিয়া জোয়াকিম লো এরপর একের পর এক বদলি নামাতে থাকেন। শেষমেশ বদলি নামা গোরেৎজকার গোলেই অঘটন থেকে রক্ষা পায় জার্মানি। ৮৪ মিনিটে তার শটে প্রথমে শেফার ও পরে গুলাসির পায়ে ডিফ্লেক্টেড হয়ে বল জড়ায় জালে।
জার্মানদের ভাগ্য ভালো, মিউনিখে এদিন শুরু হওয়া বৃষ্টি খেলা শেষের আগে থেমে গেলেও তাদের চোখের পানির বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়নি। ‘গ্রুপ অফ ডেথ’ নামের যথার্থতা প্রমাণ করে গ্রুপ পর্বে হাঙ্গেরি তাদের ‘ডেথ’র কারণ হয়নি। হাঙ্গেরির যাত্রা এখানেই থেমে গেছে, তবু তারা যেভাবে বাকিদের ভয়ের কারণ হতে পেরেছিলো, সেজন্য তারা ফুটবলপ্রেমীদের মনে থাকবে বহুদিন।