অতিরিক্ত সময়ে কিয়েসা-পেসিনার গোলেই হাঁপ ছেড়ে বাঁচল ইতালি
প্রথম তিন ম্যাচে অপ্রতিরোধ্য ইতালি। অস্ট্রিয়ার তো দাঁড়াতে পারার কথা নয় তাদের সামনে, সেরকম বাজিই ছিল বেশি। কিন্তু ইতালি যেন ‘ইতালি’ হয়ে গেল নকআউট পর্বে এসে, খোলসে ঢুকে গেল অনেকটা। নির্ধারিত সময়ে আর গোল হলো না, কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে ইতালি আবার ঘুরে দাঁড়াল। ফেদেরিকো কিয়েসা আর মাতেও পেসিনার গোলে ২-১ ব্যবধানে অস্ট্রিয়া বাধা জয় করল ইতালি। সেই সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সময় ক্লিন শিটের বিশ্বরেকর্ডও গড়েছে তারা।
অথচ এই কিয়েসা আর পেসিনা দুজনকে মানচিনি নামিয়েছিলেন বদলই হিসেবে। কিয়েসা প্রথমে গোল করলেন, সেই সঙ্গে ফিরিয়ে আনলেন ইতিহাস। এই ইংল্যান্ডেই ১৯৯৬ ইউরোতে গোল করেছিলেন এনরিকো কিয়েসা। ২৫ বছর পর সেই ইউরোতে এসে সেই ইংল্যান্ডেই গোল পেলেন ফেদেরিকো কিয়েসা। সেই সঙ্গে ভেঙে দিলেন একটা অভিশাপেরও। ইউরোতে এর আগে সাতটি ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গেলেও গোল পায়নি ইতালি। এই প্রথম গোলের দেখা পেল যোগ করা সময়ে।
তবে তার আগে শুরুর গল্পটা বলে নেওয়া যাক। শুরুটা অবশ্য ভালোই করেছিল ইতালি। শুরু থেকেই অস্ট্রিয়ার রক্ষণদুর্গে আক্রমণ। ১৭ মিনিতে সবচেয়ে ভালো সুযোগটা পেয়েছিলেন বারেল্লা, তার নিচু ভলিটা পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন অস্ট্রিয়া গোলরক্ষক বাখমান। এর আগে স্পিনাজ্জোলার শট একবার চলে গেছে বাইরে দিয়ে, পরে আরও একবার। কিন্তু গোলে আর শট রাখতে পারছিল না ইতালি। প্রথমার্ধে অবশ্য গোলের সবচেয়ে কাছাকাছি গিয়েছিলেন ইম্মোবিলেই। তার বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া দারুণ ভলিটা ফিরে আসে পোস্টে লেগে।
প্রথমার্ধে অস্ট্রিয়া গোল ঠেকানোর কাজেই বেশি ব্যস্ত ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে তারা জেগে ওঠে। এই অর্ধে খেই হারিয়ে ফেলতে শুরু করে ইতালি। ফাইনাল পাসগুলো হচ্ছিল না ইনসিনিয়েদের, শ্লথ হয়ে হয়ে গিয়েছিলেন ভেরাত্তিরা। এর মধ্যে গোলটা করেই বসে অস্ট্রিয়া। মার্ক আরনুটভিচ দারুণ এক হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন। কিন্তু ভিএআরে অফসাইডের সূক্ষ্ম সিদ্ধান্তে সেই গোল বাতিল হয়ে যায়। আরও একবার গোল করার কাছাকাছি গিয়েছিল অস্ট্রিয়া, পেনাল্টির একটা জোরালো আবেদন ছিল লাইনারের। কিন্তু সেটাও অফসাইডের জন্য ধোপে টেকেনি। তবে অস্ট্রিয়া ছিল বিপজ্জনক, ইতালিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
বেরার্ডির জায়গায় এরপর নামেন কিয়েসা, ওদিকে লোকেতাল্লি-পেসিনা নামেন বারেল্লা-ভেরাত্তির জায়গায়। নির্ধারিত সময়ে অবশ্য আর কোনো গোল হয়নি। তবে অতিরিক্ত সময়ে এসে সেই ১৭ মিনিটের পর প্রথম শট টার্গেটে নেন ইতালির হয়ে কিয়েসা। এর মধ্যে অবশ্য ১১৬৯ মিনিট গোল না খেয়ে বিশ্বরেকর্ড হয়ে গেছে ইতালির। তবে শুরুটা হয়েছে কিয়েসার মাধ্যমে। স্পিনাজ্জোলার বলটা ডান দিকে ধরে প্রথমে দুর্দান্ত ফার্স্ট টাচে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন কিয়েসা। এরপর দারুণ ফিনিশে বল জড়িয়ে দিয়েছেন জালে। খানিক পর ইন্সিনিয়ের পাস থেকে ভেলোত্তি, এরপর পেসিনা বাঁ পায়ের শতে বল জড়িয়ে দিয়েছেন জালে।
তবে অস্ট্রিয়া হাল ছাড়েনি। ডোন্নারুমাকে দূর থেকে শটে পরীক্ষা নিয়েছে, সাবিতজার মিস করেছেন একদম কাছ থেকে। শেষ পর্যন্ত ১১২ মিনিটে কালাদজিচ কর্নার থেকে হেড করে ব্যবধান কমিয়েছেন। কিন্তু সেটা যথেষ্ট হয়নি আর। ইতালি চলে গেছে শেষ আটে।