• ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি ২০২১
  • " />

     

    ডিপিডিএল সেরা একাদশ: শামিম-শুভাগতর 'পাওয়ার', সোহানের 'ইমপ্যাক্ট', সঙ্গে তানভির

    ডিপিডিএল সেরা একাদশ: শামিম-শুভাগতর 'পাওয়ার', সোহানের 'ইমপ্যাক্ট', সঙ্গে তানভির    

    গত বছর কোভিড-১৯ এর কারণে স্থগিত হয়ে যাওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ এবার হয়েছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। জাতীয় দলের ব্যস্ত সময়ের কারণে বেশ ঠাসা সূচি ছিল এ লিগের। শেষ পর্যন্ত বায়ো-সিকিউরিটি বলয়ে এ টুর্নামেন্ট শেষ হয়েছে। ভরা বর্ষায় বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েকবার বদলানো হয়েছে সময়সূচি, ভেন্যু। লিগে পুরোনরা যেমন জ্বলে উঠেছেন, ঝলক দেখিয়েছেন নতুন মুখও। প্যাভিলিয়নের চোখে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি ২০২১-এর সেরা একাদশ...
     

    মুনিম শাহরিয়ার (আবাহনী) 
    ১৪৩.১৪ স্ট্রাইক রেটে ৩৫৫ রান, সর্বোচ্চ ৯২* 

    টুর্নামেন্টে তার চেয়ে বেশি স্ট্রাইকে এতো রান আছে আর মাত্র একজনের। এ বছর লিগের আগে খেলেছিলেন মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি, ২০১৯ সালে। তবে এবার যেন নতুন করে জ্বলে উঠেছেন। প্রথম ম্যাচে ওপেনিংয়ে নামেননি, এরপর একাধিক ম্যাচে শুরু করলেও স্কোর বড় করতে পারেননি এই ডানহাতি। তবে আবাহনী ভরসা রেখেছিল তার ওপর, সেটির প্রতিদানও দিয়েছেন। প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে ৯২ রানের পর শেখ জামালের বিপক্ষে করেছিলেন ৭৪ রান, দুটিতেই হয়েছিলেন ম্যাচসেরা। এরপর ৪০-পেরুনো আরও দুটি ইনিংস আছে। শেষদিকে এসে ব্যর্থ হলেও ওপেনিংয়ে আবাহনীর বড় অস্ত্র ছিলেন তিনি এবার।



    রনি তালুকদার (প্রাইম ব্যাংক) 
    ১৩৫.৪২ স্ট্রাইক রেটে ৩৬৭ রান, ৩ ফিফটি 

    টপ অর্ডারে প্রাইম ব্যাংকের অন্যতম ভরসা ছিলেন রনি তালুকদার। তামিম ইকবালের সঙ্গে তার ওপেনিং জুটিতেও বেশিরভাগ সময় আগ্রাসী ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনিই। ৩টি ফিফটি করেছেন, ৩ ম্যাচে সেরা হয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন জয়ে, তবে দুটি ফিফটির দিনে ম্যাচসেরা হয়েছেন অন্য কেউ। শেষ রাউন্ডে শুরুতে তার উইকেট যে চাপে ফেলেছিল, সেটি থেকেই যেন পরে আর বেরুতে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। তবে সব মিলিয়ে তার লিগটা গেছে দারুণ। 

    মাহাদি হাসান (গাজি গ্রুপ) 
    ১৪৩.৭২ স্ট্রাইক রেটে ৩৫৫ রান ও ৬.৩৫ ইকোনমি ও ১৮.৮১ গড়ে ১৬ উইকেট 

    একেবারে প্রথম ম্যাচে ওপেনিংয়ের পর নিচে নেমে গিয়েছিলেন, এরপর আবার টপ অর্ডারে ফিরে তুলেছেন ঝড়। ৩৫৫ রানের সঙ্গে ১৬ উইকেট- মাহাদি হাসানের হয়ে কথা বলার জন্য তার সংখ্যাই যথেষ্ট।

    মুশফিকুর রহিম (অ) (আবাহনী) 
    ৩৮.১৪ গড়ে ২৬৭ রান, ১২ ডিসমিসাল 

    লিগের শুরুর দিকে একা আবাহনীকে টেনেছিলেন ব্যাটিংয়ে। সুপার লিগে উঠেছেন, এমন ক্রিকেটারদের মাঝে মুশফিকের মতো এতো গড়ে এতো রান করেননি এবার আর কেউ। আঙুলের চোটে সুপার লিগের শেষ ৩ ম্যাচ খেলতে পারেননি, তবে আবাহনীর এবারের দাপট শুরু হয়েছিল তার নেতৃত্বেই। শেষে উপস্থিত না থাকলেও ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে শিরোপাখরাটা অন্তত এবার ঘুচেছে মুশফিকের।
     


    শুভাগত হোম (মোহামেডান) 
    ১৬৯.২৩ গড়ে ২৪২ রান; ৬.৬৬ ইকোনমি ও ২০ গড়ে ১১ উইকেট 

    লিগে তার চেয়ে বেশি স্ট্রাইকে তার চেয়ে বেশি রান করেননি আর কেউ। বোলিংয়েও ছিলেন আঁটসাঁট, সঙ্গে পেয়েছেন উইকেটও। সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে মোহামেডানকে নেতৃত্বও দিয়েছেন। শেষটা মনমতো না হলেও এ মৌসুমে অন্যতম সেরা পারফরমার ছিলেন শুভাগত। 

    শামিম পাটোয়ারি (প্রাইম দোলেশ্বর) 
    ১৪৬.৩৮ স্ট্রাইক রেট ও ৩০.৩৭ গড়ে ২৪৩ রান, ৬.৬৪ ইকোনমি ও ১৬.১৪ গড়ে ৭ উইকেট, ৭ ক্যাচ 

    তিনি ক্রিজে এসেছেন, বদলে গেছে ম্যাচের চিত্র। দোলেশ্বরের বড় স্কোরের পথে অন্যতম অস্ত্র ছিল তার ব্যাটিং। সঙ্গে তার বোলিংটাও দোলেশ্বর কাজে লাগিয়েছে ভালভাবেই। আর ফিল্ডিংয়ে তিনি এই মুহুর্তে দেশের অন্যতম সেরা- এটা বলতে খুব বেশি সাহস লাগে না। সেটির ছাপ রেখেছেন এই লিগেও। লিগের মাঝেই খবর পেয়েছেন জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার, এরপর একটা ঝড়ো ফিফটিতে যেন সেটির সাড়াও দিয়েছেন। 

    নুরুল হাসান সোহান (শেখ জামাল)
    ১৪৯.৬১ স্ট্রাইক রেট ও ৩৫.৩৬ গড়ে ৩৮৯ রান; ১০ ডিসমিসাল 

    টুনার্মেন্টজুড়েই দারুণ ধারাবাহিক ছিলেন শেখ জামাল অধিনায়ক। ম্যাচ জেতানো, কার্যকরী বেশ কয়েকটি ইনিংস খেলেছেন, সুপার লিগের শেষদিকে তো ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। লিগের সেরা ক্রিকেটারও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। 

    মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (আবাহনী) 
    ৬.৭৯ ইকোনমি, ১৫.৮০ গড়ে ২৬ উইকেট, ৭৩ রান 

    শুরুতে তেমন কিছু করতে না পারলেও সুপার লিগে এসে ঝলকটা দেখিয়েছেন সাইফউদ্দিন। ২৬ উইকেটের ১৪টিই নিয়েছেন এই ৫ ম্যাচে। তার পারফরম্যান্স শেষ পর্যন্ত আবাহনীর শিরোপার পথে হয়ে দাঁড়িয়েছে গুরুত্বপূর্ণ, অলিখিত ফাইনালে প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে বোলিংয়ে ৪ উইকেট নেওয়ার আগে ব্যাটিংয়েও রেখেছিলেন অবদান। 

    কামরুল ইসলাম রাব্বি (প্রাইম দোলেশ্বর)
    ৭.৩৮ ইকোনমি ও ১৩.৭৬ গড়ে ২৬ উইকেট

    উইকেটশিকারির তালিকায় যৌথভাবে শীর্ষে আছেন তিনি। প্রাইম দোলেশ্বরের বোলিং ডিপার্টমেন্টের অন্যতম অস্ত্র ছিলেন এই ডানহাতি। এক ম্যাচে দেখিয়েছিলেন ব্যাটিং-ঝলকও। 

    শরিফুল ইসলাম (প্রাইম ব্যাংক) 
    ১৭.৭৭ গড় ও ৭.১৩ ইকোনমি রেট, ২২ উইকেট 

    প্রাইম ব্যাংকের বোলিং আক্রমণ ছিল টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী বলতে গেলে। মোস্তাফিজুর রহমান মাঝে চোটে পড়ে একটু ছন্দ হারিয়েছিলেন, তবে শরিফুল খেলেছেন টানা। হয়েছেন সফলও। 

    তানভির ইসলাম (শাইনপুকুর) 
    ৯.৩৫ গড়, ৪.৭৯ ইকোনমি রেট, ২০ উইকেট 

    শাইনপুকুর সুপার লিগে ওঠেনি, খেলেনি রেলিগেশন লিগও। তানভির ইসলামের উইকেটসংখ্যাও তাই আটকে গেছে ২০-এই। সুপার লিগে ওঠেনি, এমন দলগুলির মাঝে এ একাদশে একমাত্র আছেন তানভিরই। ৯.৩৫ গড়, ৪.৭৯ ইকোনমি রেট তার। প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে নিয়েছিলেন ১২ রানে ৩ উইকেট, শেখ জামালের বিপক্ষে ৩ উইকেট নিতে খরচ করেছিলেন ৮ রান, আবাহনীর বিপক্ষে ২৩ রানে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। তানভিরকে বাদ দেওয়ার আসলে উপায় নেই কোনো।