দশজনের নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে শেষ আটে উঠে গেল চেক প্রজাতন্ত্র
গ্রুপ পর্বে টানা তিন ম্যাচে উড়ছিল নেদারল্যান্ডস। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে এসে তাদের থামিয়ে দিল চেক প্রজাতন্ত্র। ২০০৪ ইউরোর আরেকবার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে ডাচদের আটকে দিল চেকরা। ম্যাথিয়াস ডি লিটের লাল কার্ডের পর দশ জনের দলে পরিণত হয়েছিল নেদারল্যান্ডস। সেই ধাক্কাটা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি তারা । টমাস হোলস ও প্যাটড়িক শিকের গোলে অনেক দিন পর আবারও ইউরোর শেষ আটে উঠে গেল চেকরা। শেষ আটে তাদের প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক।
এই ম্যাচে উড়তে থাকা ডাচদের পক্ষেই বাজি ছিল বেশি। ম্যাচের শুরু থেকেই জেতার ইচ্ছাটা জানান দিয়ে এসেছে তারা, কিন্তু সেভাবে গোলের কোনো পরিষ্কার সুযোগ পাচ্ছিল না। ১৩ মিনিতে এই ম্যাচে ডাচদের সেরা খেলোয়াড় ডেনজেল ডামফ্রাইস প্রথম গোলের পরিষ্কার সুযোগটা পেয়েছিলেন। কিন্তু তার তার শট ও হেড পর পর ঠেকিয়ে দেন।
এরপর নেদারল্যান্ডস আর সেভাবে পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি চেক রক্ষণকে। ২২ মিনিটে ওয়েস্ট হামের চেক মিডফিল্ডার থমাস সুচেক একটা হাফ চান্স পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু নিয়ার পোস্টে তার উড়ে আসা হেড পোস্টে ছিল না, পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধের সেরা সুযোগটা চেকরা পায় ৪২ মিনিটে। ডি রুনের ভুলের পর চেক প্রজাতন্ত্রের মাসুপস্ট বল পেয়ে যান ডাচ অর্ধে। তার পাসটা নিয়ে বারেক গোলটা করেই ফেলেছিলেন, কিন্তু শেষ মুহূর্তে পা ছুঁইয়ে ডি লিট সে যাত্রা বাচিয়ে দেন দলকে। একটি নিশ্চিত গোল দিয়েছেন ঠেকিয়ে। কিন্তু কে জানত, এই ডি লিটই পরে ডোবাবে দলকে।
দ্বিতীইয়ার্ধের ৫২ মিনিটে নেদারল্যান্ডস নিজেদের সেরা সুযোগটা পেয়ে যায়। বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন ডনিয়েল মলেন। দুজনকে কাটিয়েও ফেলেছিলেন, কিন্তু গোলরক্ষক ভাচলিক শেষ মুহূর্তে ঠেকিয়ে দেন মলেনকে। এরপর কিছুক্ষণ পরেই আসে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। শিক একটা বল পেয়ে বক্সে ঢুকে পড়ার পর হাত দিয়ে সেটা ঠেকিয়ে দেন ডি লিট। শুরুতে রেফারি ফ্রিকিক ও হলুদ কার্ড দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরে সিদ্ধান্ত বদলে ডি লিটকে দেন লাল কার্ড। ইউরোর ইতিহাসে ডাচদের চেয়ে বেশি লাল কার্ড কেউ দেখেনি।
এরপর দশ জনের ডাচরা যেন দমে যায় পুরোপুরি। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় চেকরা, ডাচদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে গোল করতেই হতো চেকদের। এটা এসেছে কর্নার থেকে। ডাচ রক্ষণকে বোকা বানিয়ে কালাসের কর্নার থেকে হেডটা অন্য পোস্টে হেড করেই জালে জড়িয়ে দেন হোলস।
এরপরও নেদারল্যান্ডস সেই অর্থে সুযোগ পায়নি।বরং ৮০ মিনিটে হোলসের কাছ থেকে বল পেয়ে শিক গোল করে নিশ্চিত করেন দলের জয়। ২০০৪ সালে ইউরোর শেষ আটে দুই দলের এপিক এক লড়াইয়ে জিতেছিল চেকরা। এরপর তারা নিজেদের সোনালী সময়টা পেছনে ফেলে এসেছে। তবে নেদভেদ, রসিস্কি, বারোসদের মনে করিয়ে দিয়ে আরেকবার ডাচদের হারিয়েছেন শিক, হোলসরা।