রোনালদোর পর্তুগালকে বিদায় করে শেষ আটে হ্যাজার্ড ভাইদের বেলজিয়াম
পারলেন না ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। হলো না রেকর্ড, পর্তুগাল পেল না জয়। থরগান হ্যাজার্ডের একমাত্র গোলটাই ঠিক করে দিল ম্যাচের ভাগ্য। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালকে বিদায় করে দিয়ে শেষ আটে চলে গেল বেলজিয়াম। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ইতালি।
শুরুটাই দারুণ হতে পারত পর্তুগালের। ইউরোতে পর্তুগালের সাথে সাথে জোটারও বেলজিয়ামের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ। সে ম্যাচটা রাঙ্গিয়ে দেয়ার সুযোগটা পেয়েও গিয়েছিলেন তিনি। সানচেজের পা থেকে বল পেয়ে জোটা এরপর বাইরে দিয়ে মারলে গোলবঞ্চিত হয় পর্তুগাল। অপরদিকে বেলজিয়াম এ ম্যাচে হাই-লাইন প্রেস থেকে সরে এসে একটু সতর্কতার সাথেই খেলছিলো। পর্তুগিজরা নিচ থেকে বিল্ডআপে লং বলে আক্রমণের চেষ্টাও করে গেছেন কয়েকবার। তবে বেলজিয়ান গোলকিপারকে বড় ধরনের পরীক্ষায় ফেলতে পারছিলো না তারা। রোনালদো একবার ফ্রি-কিক থেকে ভালো একটা শট নিয়েছিলেন, থিবো কর্তোয়া যা ভালো সেভে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
রোনালদো-লুকাকুদের দিকেই এ ম্যাচে নজর ছিল সবার। গেল ম্যাচেও গোল করেছেন, তবু নিশ্চিতভাবেই গোলের জন্য থর্গ্যান হ্যাজার্ডের দিকে তাকিয়ে থাকাদের সংখ্যা খুব বেশি ছিল না। শেষমেশ সেই থর্গ্যান হ্যাজার্ডের সৌজন্যেই গোল পায় বেলজিয়াম। নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এই প্রথমবারের টানা দুই ম্যাচে গোলের দেখা পেলেন তিনি। লং বল থেকে বল লুকাকু বল দখলে রাখলে কয়েকটি পাস বিনিময় শেষে বল গিয়ে পৌছায় হ্যাজার্ডের পায়ে। বক্সের বাইরে থেকে এরপর হ্যাজার্ড বুলেট শটে ডান বটম কর্নার দিয়ে বল জড়িয়ে দেন জালে। প্রথমার্ধে বেলজিয়ামের অন-টার্গেটে একমাত্র শট ছিল সেটিই।
শেষের ৪৫ মিনিটে দুর্দান্তভাবে খেলতে থাকা পর্তুগাল কয়েকটা ভালো সুযোগও তৈরি করে। রোনালদো তার স্কিলের প্রদর্শনী দেখিয়ে বাঁ পাশ থেকে ভেতরে ঢুকে বক্সে থাকা জোটার দিকে বল বাড়িয়েছিলেন। বারের উপর দিয়ে মেরে জোটা আরেকবার ব্যর্থ হন। ফার্নান্দেজ কয়েকবার লং রেঞ্জ থেকে শটে গোলের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছেন। শেষের মিনিট পনেরোতে পর্তুগাল একেবারে নিজেদের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছে। একের পর এক আক্রমণে গোলের কাছেও গিয়েছিল বেশ কয়েকবার। কর্নার থেকে একবার রুবেন দিয়াজ দারুণ এক হেড নিয়েছিলেন, জোরালো সে হেডার সোজাসুজি হওয়াতে কর্তোয়া সেভ দিয়ে ফিরিয়ে দেন সহজেই। আরেকবার বক্সের কিনারা থেকে রাফায়েল গেরেইরোর শট তাকে পরাস্ত করেছিলো ঠিকই, কিন্ত দুর্ভাগ্যবশত সেটি গোলপোষ্টে লেগে ফিরে আসে। জোয়াও ফেলিক্সের আরেক শট গেছে পোষ্টের পাশ ঘেঁষেই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ইনজুরিতে ডি ব্রুইনকে হারানো বেলজিয়াম গোলের জন্য মরিয়া পর্তুগালকে রুখতেই তখন মনযোগী ছিল। প্রতি-আক্রমণে উঠে গিয়ে গোলের চেষ্টায় সেভাবে কোনও ভাল সুযোগ তৈরি করতে পারেনি মার্টিনেজের শিষ্যরা। তবে শেষ পর্যন্ত তারা গোলহজম বিহীন ম্যাচ শেষ করেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করতে পেরেছে। আর তাতেই পর্তুগালের টানা দুই ইউরো জেতার স্বপ্নযাত্রা থেমে গেছে শেষ ষোলোতেই। ইউরোর রোনালদোকে বিদায় নিতে হয়েছে অশ্রুভেজা চোখেই। রেকর্ড যার পায়ে লুটায়, সেই রোনালদো আরেকটা রেকর্ড থেকেও বঞ্চিত হলেন সেই সাথে। এক ইউরোতে তিনটি ম্যাচে দুটি করে গোল আর কেউ করতে পারেনি। এবারের ইউরোতে দুবার তা করে সে রেকর্ডের খুব কাছ থেকেই ফিরে এলেন তিনি।