• ইউরো ২০২০
  • " />

     

    আরও একটি থ্রিলারে শেষ মুহূর্তের গোলে কোয়ার্টারে ইউক্রেন

    আরও একটি থ্রিলারে শেষ মুহূর্তের গোলে কোয়ার্টারে ইউক্রেন    

    নিয়তির নির্মম পরিহাস বুঝি একেই বলে। গ্রুপ পর্বে সুইডেনের একটা গোলের জন্যই কপাল খুলে গিয়েছিল ইউক্রেনের। সেই ইউক্রেনই এবার অতিরিক্ত সময়ে গোল করে বিদায় করে দিল সুইডেনকে। শেষ আটে চলে গেল ইউক্রেন। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড।

    এবারের ইউরোতে এখন পর্যন্ত মনে রাখার ম্যাচ কম নেই। ফ্রান্স, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডস, জার্মানির বিদায়ে কম নাটকও হয়নি। শেষ ষোলোর শেষটাও হলো আরেকটা জমজমাট ম্যাচ দিয়ে। সুইডেন-ইউক্রনের ম্যাচটা নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র থাকাটাই ছিল প্রায় অবিশ্বাস্য। স্কোরলাইন অনায়াসেই অন্যরকম হতে পারত, বিশেষ করে সুইডেনের জন্য সেটি তিন বা চার গোলও হতে পারত। সেটা হয়নি, অতিরিক্ত সময়ে লাল কার্ডের পাশাপাশি হয়েছে ভূতুড়ে ইনজুরিও।



    সুইডেন ম্যাচের শুরুটা করেছিল দারুণ। শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণে চেপে ধরে ইউক্রেনকে। তবে ইউক্রেন পালটা আক্রমণে যাচ্ছিল সুযোগ পেলেই। আলেকজান্ডার ইজাকের একটা শট শুরুতেই পোস্ট ঘেঁষে চলে যায়। কিন্তু ২৭ মিনিটে হুট করেই এগিয়ে যায় ইউক্রেন। ডান দিক থেকে একটা বল এসে পড়ে ইয়ারমলেংকোর পায়ে। নিজের জাত চিনিয়ে দেওয়া বুটের আউটসাইড দিয়ে একটা ক্রসে বলটা পাঠান বাঁদিকে। অলেগ জিনচেংকো তৈরি ছিলেন, দুর্দান্ত টেকনিকে গোলার মতো বাঁ পায়ের শট করেন। হাত দিয়েও সেটা ঠেকাতে পারেননি গোলরক্ষক বিশান। গোলটা খেয়ে শোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। ৪৩ মিনিটে সেটা অবশ্য ভাগ্যগুণেই চলে আসে সুইডেনের। ইসাকের কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁ পায়ে শট করেছিলেন এমিল ফর্সবার্গ। বাঁ পায়ের শট ইউক্রেনের একজনের পায়ে লেগে দিকবদল করে ঢুকে যায় জালে। এই টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত চার গোল হলো ফর্সবার্গের, তার চেয়ে বেশি গোল আছে শুধু ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর।

    তবে দ্বিতীয়ার্ধে যেটা হয়েছে, সেটা ফর্সবার্গ চাননি। ভাগ্য এবার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তার দিক থেকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতা একটা ভালো সুযোগ পেয়েছিল ইউক্রেন। কিন্তু ইয়ারমলেংকোর পাস থেকে সিডর চুকের শট পোস্টে লেগে চলে যায় বাইরে। সেই বল থেকেই সুইদেন গোল প্রায় দিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু ফর্সবার্গের শট পোস্টে লেগে চলে যায় বাইরে। খানিক পর আবার ফর্সবার্গ, এবার বস্কের মাথা থেকে ডান পায়ের বাঁকানো শট জালে প্রায় চলেই যাচ্ছিল। কিন্তু সেটা ফিরে আসে পোস্টে লেগে, নিশ্চিত দুই গোল বঞ্চিত হলেন। পুরো ম্যাচে দারুন খেলা দেজান কুলুসেভস্কি এরপর দারুণ দুইটা সুযোগ পেয়েছিলেন। একবার তার ডান পায়ের বাঁকানো শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে দিয়েছেন উশান, আরেকবার বক্সে ঢুকেও পোস্টে রাখতে পারেননি। নির্ধারিত সময়ে আর গোল হয়নি।

    এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে হয়েছে নাটক। বদলি বেসেডিনকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন ড্যানিয়েলসন, কিন্তু সেটা ছিল বিপজ্জনক। রেফারি শুরুতে হলুদ কার্ড দেখিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরে রিপ্লে দেখার পর সিদ্ধান্ত বদলে লাল কার্ড দেন। দশ জনের দল হয়ে যায় সুইডেন, এরপর রক্ষণেই বেশি মনযোগ দিয়েছে তারা। এর মধ্যে একের পর এক খেলোয়াড় ক্র্যাম্প বা চোটে পড়েন। কেউ মাঠ ছেড়ে যান, কেউ চালিয়ে যান খেলা। কিন্তু অতিরক্ত সময়ের একদম শেষে গিয়ে বাজিমাত করে ইউক্রেন। এবার বাঁদিক থেকে জিনচেঙ্কোর ক্রস থেকে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন ডবভিক।