কেমন হলো প্যাভিলিয়নের ইউরোর সেরা একাদশ?
শেষ হয়ে গেল ইউরো। প্রথম থেকে যারা পুরো টুর্নামেন্ট দেখেছেন তারা নিশ্চিয় মনে মনে একটা সেরা একাদশ সাজিয়েছেন। সেই চেষ্টা করেছে প্যাভিলিয়নও।
আসুন, মিলিয়ে নেওয়া যাক আপনার সেরা একাদশের সাথে।
গোলরক্ষকঃ এই জায়গাটা নিয়েই বোধ হয় সবচেয়ে কম বিতর্ক থাকবে। জিয়ানলুইজি ডোনারুমা শুধু এবারের সেরা গোলরক্ষক নয়, সেরা খেলোয়াড়ই নির্বাচিত হয়েছে আনুষ্ঠানিকভাবে। দুইটি টাইব্রেকারে দলকে একাই জিতিয়ে দেওয়া, তার আগে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত মাত্র এক গোল খাওয়া, পুরো টুর্নামেন্টে প্রায় নিখুঁত কিপিং, দুর্দান্ত সব সেভ- এই জায়গায় ডনারুমা প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী। পিকফোর্ড দারুণ করলেও তাই তার আশেপাশে আসতে পারেননি।
ডিফেন্ডারঃ এখানে মূলত ইংল্যান্ডেরই প্রাধান্য, সেটা অবশ্য স্বাভাবিকই। পুরো টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের ক্লিন শিট ছিল সবচেয়ে বেশি, সেমির আগে কোনো গোলও হজম করেনি তারা। জন স্টোনস খেলেছেন শুরু থেকেই, সেন্ট্রাল ডিফেন্সে তার জায়গা তাই পাকা। আরেকজন এখানে ইতালির লিওনার্দো বনুচ্চি, ইতালিয়ান ডিফেন্ডার শুধু ডিফেন্স করেননি, ফাইনালে মহামূল্যবান গোলও করেছেন। লেফট ব্যাকে আসলে তিন জন এবারের ইউরোতে খেলেছেন দুর্দান্ত, সবাই আসতে পারতেন একাদশে। একজন লিওনার্দো স্পিনাজ্জোলা, কোয়ার্টার পর্যন্ত যিনি ছিলেন টুর্নামেন্ট সেরাদের একজন। আরেকজন ডেনমার্কের জোয়াকিম মাহলে, যিনি নকআউটে গোলও পেয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত কোয়ার্টার থেকে ফাইনাল পর্যন্ত দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য লুক শকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। রাইট ব্যাকে সেই তুলনায় খুব অসাধারণ ছিলেন না। তবে আক্রমণে সেভাবে না উঠলেও রক্ষণে ধারাবাহিকতার জন্য এখানে আছেন কাইল ওয়াকার। থাকতে পারতেন এখানে চেক প্রজাতন্ত্রের ডিফেন্ডার সুফালও।
মিডফিল্ডঃ ৪-৩-৩ ফর্মেশনে শুরুতেই একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। এখানে অপশন হতে পারতেন দুজন। ইতালির জর্জিনহো ছিলেন তাদের মূল ইঞ্জিনরুম, প্রতিপক্ষের খেলা নষ্টের সাথে খেলা গড়ার কাজও ছিল তার। স্পেনের সঙ্গে জর্জিনহো অফ ছিলেন, ভুগেছিল ইতালি। আবার জর্জিনহো তার কাজটা ঠিকমতো করলে ইতালিও ভালো করেছে। ডেনমার্কের পিয়েরে এমিল হয়বিয়া ভালো করলেও তাই জর্জিনহোও জায়গা পাচ্ছেন। এখানে তার সঙ্গে আছেন স্পেনের ১৯ বছর বয়সী তরুণ পেদ্রি। সেমিতে তার পাসিং অ্যাকুরেসি ছিল ১০০ ভাগ। এই ইউরোতে সেরা তরুণও নির্বাচিত হয়েছেন। বুস্কেটস, কোকের মধ্যেও আলাদাভাবে আলো কেড়ে নিয়েছেন তিনি। আর মিডফিল্ডে শেষজন হয়েছেন সুইডেনের এমিল ফর্সবার্গ। মাত্র দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত খেললেও এর মধ্যেই করেছেন চার গোল, ছিলেন সুইডেনের মূল অস্ত্র। পল পগবাও তছিলেন কাছাকাছি, থাকতে পারতেন মার্কো ভেরাত্তিও এখানে। তবে ৩ জন মিডফিল্ডারের মধ্যে তাদের জায়গা হয়নি।
ফরোয়ার্ড ঃ এখানে একজনের নাম নিয়ে খুব একটা সংশয় নেই, ইংল্যান্ডের রাহিম স্টার্লিং। ইংল্যান্ডের রায় বেশির ভাগ আক্রমণের কেন্দ্রে ছিলেন তিনি, গোলের সঙ্গে করেছেন অ্যাসিস্টও। আরেকজন শুরু থেকে ইতালির দলে ছিলেন না, কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে ফাইনাল পর্যন্ত সম্ভবত ছিলেন দলের সেরা খেলোয়াড়। ফেদেরিকো কিয়েসার অন্তভুর্ক্তি নিয়েও তাই খুব কথা নেই। সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ডের জায়গায় প্রতিদ্বন্দ্বী তিন জন। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, যিনি পেয়েছেন গোল্ডেন বুট। হ্যারি কেন, গ্রুপ পর্বে কিছু করতে না পারলেও নকআউতে যিনি চিনিয়েছেন। কিন্ত দুর্দান্ত কিছু গোলের সঙ্গে দারুণ হোল্ড আপ প্লে, সব মিলে এই জায়গায় রাখা হয়েছে পাঁচ গোল করা চেক প্রজাতন্ত্রের প্যাট্রিক শিককে।
এই দলের কোচ হিসেবেও একজনকে বেছে নিতে হয়। সেই কাজটা একদম সহজ, ইতালিকে দ্বিতীয় ইউরো এনে দেওয়া রবার্তো মানচিনির নাম নিয়ে সংশয়ের কোনো কারণ নেই।