চিরতরে চলে গেলেন গার্ড মুলার
ফুটবল মাঠে তাঁর পায়ের জাদুতে হার মেনেছে বহু দল, ডি-বক্সে ত্রাস সঞ্চার করে দলকে এনে দিয়েছেন বহু জয়। তবে জীবনযুদ্ধে এবার হেরে যেতে হল জার্মান কিংবদন্তি গার্ড মুলারকে। দীর্ঘ দিন ধরে আলঝাইমাইরসে ভুগতে থাকা ৭৫ বছর বয়সী মুলার পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে।
ক্যারিয়ারের সিংহভাগ সময় কেটেছে যেই ক্লাবে সেই বায়ার্ন মিউনিখ তাদের টুইটারে বিবৃতিতে বলেছে, “গার্ড মুলারের মৃত্যুতে বায়ার্ন মিউনিখ গভীরভাবে মর্মাহত। বায়ার্ন ও তাদের ভক্তকূলের জীবন আজ থমকে দাঁড়িয়েছে রবিবার সকালে ৭৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করা মুলারের জন্য।”
বায়ার্ন সভাপতি হার্বার্ট হাইনার বলেছেন, “আজকে বায়ার্ন মিউনিখ ও তার ভক্তদের জন্য অত্যন্ত শোকাবহ একটি দিন। গার্ড মুলার ফুটবল ইতিহাসের সেরা স্ট্রাইকার। তিনি দারুণ একজন মানুষ ছিলেন, ফুটবল বিশ্বে ছিলেন একজন বরেণ্য ব্যাক্তিত্ব। আমরা তার সহধর্মিণী উশি ও তাঁর পরিবারের সাথে একাত্মতা পোষণ করছি। আজকের এই বায়ার্ন হওয়ার পিছনে তাঁর অবদান অসামান্য। আমাদের ক্লাবের ইতিহাসের পাতায় তাঁর নাম ও স্মৃতি থাকবে চিরঅম্লান।”
বায়ার্ন সিইও অলিভার কান বলেছেন, “বায়ার্নের ইতিহাসের কিংবদন্তীদের মধ্যে তিনি একজন। তাঁর মৃত্যুতে আমরা সবাই মর্মাহত। একজন খেলোয়াড় ও মানুষ হিসেবে বায়ার্ন মিউনিখে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর স্মৃতি চিরকাল আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে।”
১৯৭৪ সালে বিশ্বকাপ ও ১৯৭২ সালে ইউরোজয়ী মুলার পশ্চিম জার্মানির হয়ে ৬২ ম্যাচে করেছেন ৬৮ গোল। ১৯৭২ ইউরো ও ১৯৭০ বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতা। একসময় ছিলেন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা (১৪)। বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ৬০৭ ম্যাচে ৫৬৬ গোল করা মুলারের অধীনে ছিল এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ গোল (৮৫) ও বুন্দেসলিগায় এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের (৪০) রেকর্ড যা পরবর্তীতে যথাক্রমে ভেঙেছেন লিওনেল মেসি ও রবার্ট লেভানডফস্কি। বুন্দেসলিগা ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড এখনও তাঁর নামেই আছে (৩৬৫)।
ছয় গজ বক্সের মাঝে রাজত্ব কায়েম করে বহু রেকর্ড নিজের করে নিলেও খেলা ছাড়ার পর থেকেই তিনি অ্যালকোহল আসক্তিতে ভুগছিলেন। ২০১২ সালে অ্যালঝাইমারস ধরা পড়লে তিনি বাভারিয়ায় নিজ গৃহে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবশেষে স্ত্রী ও এক মেয়েকে কাঁদিয়ে চিরতরে বিদায় নিয়েছেন এই কিংবদন্তি।