ছয় ছক্কা ও এক মিলিয়ন ডলার
ঘটনাবহুল ক্যারিয়ারের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের সীমা অতিক্রম করেছেন হার্শেল গিবস। ম্যাচ ফিক্সিং কলঙ্ক, বর্ণবাদ, ডোপিংসহ অনেক ক্ষেত্রে অনুমোদিত সীমার বাইরে পা রেখে খবরের শিরোনাম হওয়ার ব্যাপারটাও তাই নতুন নয় তাঁর জন্যে। তবে এমন একটা সীমা একবার অতিক্রম করেছিলেন তিনি, যেটার সাথে জড়িত ছিল মিলিয়ন ডলারের একটা চ্যালেঞ্জ।
২০০৭ বিশ্বকাপে সেবার চ্যালেঞ্জটা ছুড়ে দিয়েছিল সুপরিচিত হুইস্কি কোম্পানি ‘জনি ওয়াকার’। বিপণনের অংশ হিসেবে আসরের শুরু থেকেই ‘আপনার সীমা জানুন’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের এই চ্যালেঞ্জের ব্যাপারে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছিল কোম্পানিটি। চ্যালেঞ্জটা ছিল এক ওভারে ছয়টি ছয় হাঁকিয়ে সীমা অতিক্রম করা, যেটা জিতে যান গিবস।
১৬ই মার্চ অনুষ্ঠিত নেদারল্যান্ডস ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ম্যাচটি ছিল গ্রুপ ‘এ’-র সপ্তম ম্যাচ। বৃষ্টিবিঘ্নিত হয়ে ৪০ ওভারে পরিণত হওয়া সে ম্যাচে টসে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ডাচ অধিনায়ক লুক ভ্যান ট্রুস্ট। ম্যাচের প্রথম ওভারে বিলি স্টেলিংয়ের নেওয়া মেইডেন উইকেট আর পাঁচ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান(৪/১) দেখে অত্যন্ত যুক্তিযুক্তই মনে হয়েছিল সে সিদ্ধান্তকে। তবে এরপর থেকেই শুরু হয় পটপরিবর্তন, যেটার চূড়ান্ত পরিণতি ৪০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার দাঁড় করানো ৩৫৩ রানের পাহাড়।
এখানে আমাদের আগ্রহের সবটুকু জুড়ে অবশ্য ৩০তম ওভার। লেগ ব্রেক বোলার ড্যান ভ্যান বুঞ্জের করা সে ওভারের প্রথম বলটিকে ‘ডাউন দা ট্র্যাক’-এ এসে লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারার সময়ও গিবস জানতেন না সেটাই হতে যাচ্ছে বহুল কাঙ্ক্ষিত সে ওভার। গিবসের ভাষ্যমতে এমনকি পরপর তিনটি ছয় হাঁকানোর পরও ছয় ছক্কার বিষয়টি মাথায় আসেনি তাঁর। চার নম্বর ছয়টি মারার পর এ ব্যাপারে প্রথম চিন্তা করেন।
পঞ্চম বলটি মোকাবিলা করার আগে প্রথমে ভেবেছিলেন সামনে এগিয়ে খেলবেন। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে জায়গায় থেকেই নিয়েছেন শট। আর সে দুটোও ছয়ে পরিণত হলে শুধু চ্যালেঞ্জটাই জিতে নিলেন না তিনি, জায়গা করে নিলেন একদিনের আন্তর্জাতিকের রেকর্ড বইয়েও। এ ম্যাচ থেকে তাঁর যদি কোন অতৃপ্তি থেকে থাকে, সেটা গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকসংখ্যা। টেনেটুনে হাজারখানেক দর্শক সেদিন হয়েছিল সেইন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্ক স্টেডিয়ামে!