• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    ১০ ওভারেই বেঙ্গালুরুর ৯২ রান টপকে গেল সাকিবহীন কেকেআর

    ১০ ওভারেই বেঙ্গালুরুর ৯২ রান টপকে গেল সাকিবহীন কেকেআর    

    গ্রুপ পর্ব, আবু ধাবি (টস- বেঙ্গালুরু/ ব্যাটিং)

    রয়্যাল চ্যালেঞ্জারস বেঙ্গালুরু ৯২, ১৯ ওভার (পাডিকাল ২২, ভারত ১৬, হারশাল ১২, বরুন ৩/১৩, রাসেল ৩/৯, ফার্গুসন ২/২৪)

    কলকাতা নাইটরাইডারস ৯৪/১, ১০ ওভার ( গিল ৪৮, আইয়ার ৪১*, চাহাল ১/২৩)

    কলকাতা নাইটরাইডারস ৯ উইকেটে জয়ী



     

    ভিরাট কোহলির ২০০তম আইপিএল ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার বেঙ্গালুরুকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ৯ উইকেটের জয় দিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে শুভ সুচনা করেছে সাকিববিহীন কলকাতা নাইটরাইডারস। স্পিন জালে বেঙ্গালুরু ব্যাটসম্যানদের আটকে বরুন চক্রবর্তীর ৩ উইকেটের সাথে আন্দ্রে রাসেলের কিপটে স্পেলে পাওয়া ৩ উইকেটে মাত্র ৯২ রানে গুটিয়ে যায় বেঙ্গালুরু।  জবাবে শুবমান গিল ও অভিষিক্ত ভেঙ্কটেশ আইয়ারের ৮২ রানের ওপেনিং জুটিতে ৯ উইকেটের জয় পেয়েছে কলকাতা। 

    দারুণ বোলিং পারফর্ম্যান্সের পরে কলকাতার জবাবের শুরুটাও হয় দারুণ। পাওয়ারপ্লের সদ্ব্যবহার করে প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি তুলে নেয় গিল-আইয়ারের ওপেনিং জুটি। অভিষেকেই দারুণ সপ্রতিভ আইয়ারের ব্যাট থেকেই আসে কলকাতার ইনিংসের প্রথম ছয়ও। কাইল জেমিসনের করা ঐ ৫ম ওভারে আসে ১৬ রান। ব্যাটিংয়ে যতটা জরাজীর্ণ দশা ছিল বেঙ্গালুরুের বোলিংয়ে যেন ছিল তার চেয়েও করুণ হাল। ম্যাচ যেন ছেড়েই দিয়েছিল কোহলির দল। বেঙ্গালুরু বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করে দুই ওপেনার মিলে পাওয়ারপ্লেতে তাই তোলে ৫৬ রান।  

    দুই কলকাতা ওপেনারের কোনও জবাবই ছিল না এদিন বেঙ্গালুরু বোলারদের। দারুণ শব শটের পসরা সাজিয়ে অচিরেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় কলকাতা। ফিফটির খোঁজে আরও মারমুখি হতে গেলে অবশ্য জয়ের কাছাকাছি এসে যুজবেন্দ্র চাহালের বলে মোহাম্মদ সিরাজের ক্যাচের শিকার হয়ে ৩৪ বলে ৪৮ রান করে ফিরে যান গিল। ঐ ওভারেই তিন চারে অভিষিক্ত আইয়ার অবশ্য ম্যাচ শেষ করে তবেই ফিরেন, মাত্র ১০ ওভারেই লক্ষ্য তাড়া করে ফেলে কলকাতা। আইয়ার অপরাজিত ছিল ২৭ বলে ৪১ রান করে। ৬০ বল হাতে রেখেই পাওয়া এই জয় আইপিলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে জয়ের তালিকায় ৫ম।  

    টসে জিতে ব্যাটিং নিলেও শুরুতেই বিপদে পরে বেঙ্গালুরু। দ্বিতীয় ওভারেই প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর ভেতরে ঢোকা বল ফ্লিক করতে গিয়ে মিস করলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান কোহলি। নিজের বিশেষ দিনে করতে পেরেছেন কেবল ৫ রান। তবে পাওয়ারপ্লেতে অবশ্য সেই ধাক্কা সামলে উঠেছিলেন দুই তরুণ দেবদূত পাডিকাল ও অভিষিক্ত শ্রীকার ভারত। প্রতি ওভারেই প্রয়োজনীয় বাউন্ডারি বের করতে থাকে তারা। পাওয়ারপ্লের শেষ বলে এসে লকি ফার্গুসনের বলে র‍্যাম্প শট খেলতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ২২ রান করে ফিরে যান পাডিকাল। পাওয়ারপ্লে শেষে দুই উইকেট হারালেও বেঙ্গালুরু তাই তুলেছিল ৪১ রান। 

    ভরাডুবির শুরু হয় পাডিকালের বিদায়ে। পরের দুই ওভারে রাসেল ও নারাইনের তৈরি করা চাপের সুফল পান রাসেল নিজেই। বাউন্ডারির খোঁজে হন্যে হয়ে ওঠা ভারত রাসেলের শর্ট বলে পুল খেলতে গিয়ে ডিপ স্কয়্যার লেগে গিলের তালুবন্দি হয়ে ফিরে যান ১৯ বলে ১৬ করে। ঐ ওভারেই রাসেল ফেরান এবি ডি ভিলিয়ার্সকেও। প্রথম বলেই রাসেলের দুর্দান্ত ইয়র্কারের জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না ডি ভিলিয়ার্স। এরপর বোলিংয়ে বরুন চক্রবর্তী এলে হাত খোলার সুযোগই পাননি উইকেটে থাকা দুই ব্যাটসম্যান গ্লেন মাক্সওয়েল ও শচীন বেবি। ১২তম ওভারে দারুণ এক ড্রিফটারে মাক্সওয়েলকে বোকা বানিয়ে তার স্টাম্প উপড়ে ফেলেন বরুন। পরের বলেই আরেক আইপিএল অভিষিক্ত ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। হ্যাটট্রিকও পেয়ে যেতে পারতেন তিনি। কিন্তু জেমিসনের প্যাডে লাগার আগে বল তার ব্যাটের কানা চুমু খেয়ে গেলে সেই যাত্রায় বেঁচে যান তিনি। তবে এরপর আক্রমণে এসে বেবিকে বোকা বানিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে নিতিশ রানার তালুবন্দি করেন বরুন। 

    ধুঁকতে থাকা বেঙ্গালুরু বাউন্ডারির দেখা পায় ৫৫ বল পরে! নারাইনের বলে চার মেরে হারশাল পাটেল কিছুটা লড়াইয়ের আভাস দেন। তবে বরুনের শেষ ওভারেই অপর প্রান্তে থাকা জেমিসন রান আউটের শিকার হয়ে ফিরে গেলে সেটাও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। পরের ওভারে ফার্গুসনের দারুণ ইয়র্কারে পরাস্ত হয়ে ১২ রান করে বোল্ড হয়ে ফেরেন হারশাল। এদিন দারুণ বল করে শেষ আঘাতটাও হানেন রাসেল। সিরাজ তাকে স্কুপ করতে গেলে ফাইন লেগে সরাসরি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। দুঃস্বপ্নের মত ইনিংস শেষে বেঙ্গালুরু গিয়ে থামে মাত্র ৯২ রানে। বরুন চক্রবর্তীর স্পিন বিষে নীল বেঙ্গালুরুকে নিঃশেষ করেছেন রাসেল ৩ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে। সেই ৯২ রান অনায়াসেই টপকে যায় ম্যাচ শুরুর আগে পয়েন্ট টেবিলের সাতে থাকা কলকাতা।