• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    মোস্তাফিজদের দারুণ বোলিংয়ের পরও পারল না রাজস্থান

    মোস্তাফিজদের দারুণ বোলিংয়ের পরও পারল না রাজস্থান    

    গ্রুপ পর্ব, আবু ধাবি (টস- রাজস্থান/ বোলিং)
    দিল্লি ক্যাপিটালস ১৫৪/৬, ২০ ওভার (আইয়ার ৪৩, হেটমায়ার ২৮, পান্ট ২৪, মোস্তাফিজ ২/২২,  সাকারিয়া ২/৩৩, তেওয়াতিয়া ১/১৭)
    রাজস্থান রয়্যালস ১২১/৬, ২০ ওভার (স্যামসন ৭০*, লোমরর ১৯, নরকিয়া ২/১৮, আশ্বিন ১/২০, রাবাদা ১/২৬)
    দিল্লি ক্যাপিটালস ৩৩ রানে জয়ী

     

    মোস্তাফিজুর রহমানের দারুণ বোলিং পারফর্ম্যান্স ম্লান করে ৩৩ রানের জয়ে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করেছে দিল্লি ক্যাপিটালস। বাউন্ডারিবিহীন চার ওভারের স্পেলে মোস্তাফিজ দুই উইকেট পেলেও স্রেয়াশ আইয়ারের ৪৩ রানে লড়াই করার সংগ্রহ পেয়েছিল দিল্লি। ৭০* রানের ইনিংস খেলে সাঞ্জু স্যামসন একাই লড়ে গেলেও বোলারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সেই ১৫৪ রানের সংগ্রহেই জয় পায় দিল্লি।

    ১৫৫ রানের লক্ষে রাজস্থানের শুরুটা হয় ভয়াবহ। এদিন ওপেন করতে নামা লিয়াম লিভিংস্টোন ফেরেন আভেশ খানের  করা প্রথম ওভারেই। পরের ওভারের প্রথম বলেই ফিরতে হয় আগের দিন দারুণ খেলা ওপেনার ইয়াশাসভি জাইসওয়ালকেও। মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে রবিচন্দ্রন আশ্বিনের ২৫০তম টি-টোয়েন্টি শিকার হিসেবে স্টাম্পড হয়ে এরপর ফেরেন ডেভিড মিলার। সেই সাথে পাওয়ারপ্লেতে আসে মোটে ২১ রান, বাউন্ডারি আসেনি একটিও!

    অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসনের সাথে আগের ম্যাচে বিধ্বংসী ইনিংস খেলা মাহিপাল লোমরর বিপদ সামলে ওঠেন। এদিন অবশ্য সময়ের দাবি অনুযায়ী একেবারেই বিপরীতধর্মী ইনিংস খেলেন তিনি। সেই চাপেই কাগিসো রাবাদার বাউন্সারে উড়িয়ে খেলতে গিয়ে ফেরেন ২৪ বলে ১৯ রান করে। বিপদ আরও বাড়িয়ে উইকেটে আসার কিছুক্ষণ পরেই অক্ষর পাটেলের শিকার হয়ে ফেরেন রিয়ান পরাগ।

    উইকেটের পতনে অবশ্য বিচলিত হননি স্যামসন। এক প্রান্ত আগলে রেখে অধিনায়কের ভূমিকা যথার্থই পালন করে যাচ্ছিলেন। তবে অন্য কারও কাছেই সহায়তা পাননি। উইকেটে এসে রাহুল তেওয়াতিয়াও খুব একটা সুবিধা করতে না পেরে ফিরে যান এদিন আগুনঝরা বোলিং করা আনরিখ নরকিয়ার বলে। ৫৩ বলে ৭০ রানে অপরাজিত স্যামসনকে এক প্রান্তে বেঁধে রেখে দিল্লি বোলাররা তাই আরও একবার প্রমাণ করে কেন তারা পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দল।    

    এর আগে দিল্লির দুর্ধর্ষ ওপেনিং জুটির বিপক্ষে প্রথম ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে শুরুটা সেখান থেকেই করে দেন মোস্তাফিজ। তারই ধারাবাহিকতায় টসে জিতে বোলিং নেওয়ার সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করে চতুর্থ ওভারে আক্রমণে এসেই আগের ম্যাচের নায়ক কার্তিক তিয়াগি ফেরান টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শিখর ধাওয়ানকে। পরের ওভারেরও প্রথম বলেই চেতন সাকারিয়ার শিকার হয়ে ফিরতে হয় আরেক ওপেনার পৃথ্বী শকে। তিয়াগির করা পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ১১ রান নিয়ে ঐ ২ উইকেট হারিয়ে তারা তোলে ৩৬ রান।

    দিল্লির হয়ে আগের দিন ম্যাচ শেষ করে আসা আইয়ার-পান্ট জুটি এরপর বিপদ সামলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। দিল্লির সাবেক ও বর্তমান অধিনায়কের জুটি ঠিক যখন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিল তখনই ব্রেকথ্রুর আশায় মোস্তাফিজকে ১২তম ওভারে আক্রমণে আনেন স্যামসন। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে ৬১ রানের জুটি ভেঙে বিপদজনক পান্টকে ফেরান তিনি। মোস্তাফিজের খাটো লেংথের বল স্টাম্পে ডেকে এনে ফেরার আগে দিল্লি অধিনায়ক করেন ২৪ বলে ২৪ রান। একটু পরেই অধিনায়কের পথ ধরেন আইয়ারও। তেওয়াতিয়ার ভাসানো বলে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হয়ে ফেরেন ৩২ বলে ৪৩ করে।

    লালিত যাদবকে সাথে নিয়ে এরপর শিমরন হেটমায়ার দুই থিতু ব্যাটসম্যানের পতনের প্রভাব পড়তে দেননি। তিয়াগির করা ১৭তম ওভারে তিন চারে ১৬ রান নিয়ে যখনই হাত খুলে খেলা শুরু করেছিলেন, তখনই আবারও আক্রমণে এসেই সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দেন মোস্তাফিজ। আগের বলেই দুর্দান্ত ইয়র্কারে তাকে পরাস্ত করার পর আবারও ইয়র্কার দেন মোস্তাফিজ। তাতে কোনোমতে ব্যাট চালিয়েও কানায় লেগে সাকারিয়ার ক্যাচের শিকার হয়ে ১৪ বলে ২৮ রান করে ফিরতে হয় হেটমায়ারকে। ১৯তম ওভারে অক্ষর পাটেলকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়ে সাকারিয়া ১০ রান গুনলে মোস্তাফিজ শেষ ওভারে দেন ৯, যা এই ইনিংসে তার সর্বোচ্চ। চার ওভারের কোটা পূর্ণ করে  অসাধারণ বল করা মোস্তাফিজ এদিন বাউন্ডারি দেননি একটিও। তাদের প্রচেষ্টাতেই দিল্লি গিয়ে থামে ১৫৪ রানে। দিনশেষে সেই সংগ্রহই অবশ্য যথেষ্ট হয়ে দাঁড়ায় দিল্লির জন্য।