চার বারে এসে তুখেলের চেলসিকে হারাল গার্দিওলার সিটি, শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি মিসের মাশুল দিল ইউনাইটেড
চেলসির দায়িত্ব যখন থেকে নিয়েছেন তুখেল। এরপর তিনবারের দেখায় তিনবারই হারতে হয়েছে গার্দিওলাকে। দুই মাস্টারমাইন্ডের লড়াইয়ে উত্তেজনার বাড়তি রসদ যোগ করেছিল এটি। তবে ম্যাচের প্রথমার্ধের খেলায় তা ফুঠে না উঠলেও দ্বিতীয়ার্ধে জেসুসের গোলের পর তা বোঝা গেছে। শেষ পর্যন্ত চেলসির তুখেলের সাথে গার্দিওলা প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছেন ১-০ গোলে। জেসুসের পা থেকে ম্যাচের একমাত্র গোল এসেছে জর্জিনহোর গায়ে ডিফ্লেক্টেড হয়ে।
ম্যাচের শুরু থেকেই ম্যানচেষ্টার সিটি চেপে বসে চেলসির উপর। সিটির আক্রমণ রুখতেই প্রথমার্ধের অধিকাংশ সময়েই ব্যস্ত থাকতে হয়েছে থমাস তুখেলের শিষ্যদের। সে কাজটা ভালোমতোই সারলেও তুখেলের তাতে খুব একটা খুশি থাকার কথা নয়। লুকাকুর সাথে এ ম্যাচে ওয়ার্নারও ছিলেন আক্রমণভাগে। লুকাকুর পেসের সাথে বল ধরে রাখার ক্ষমতা, সঙ্গে ওয়ার্নারের গতি- কাউন্টার অ্যাটাকের জন্য উপযুক্ত দুজন। তবে চেলসি প্রতিআক্রমণে দুয়েকবার উঠলেও কাজে লাগাতে পারেনি, ভালো কোনও সুযোগই তৈরি করতে পারেনি। প্রথমার্ধের পুরো সময়ে তারা শট নিতে পেরেছিল একটি, অন টার্গেটে একটিও না।
সিটির কুইক প্রেসের কাছে বলের দখল হারাচ্ছিলো তারা নিয়মিতই। অবশ্য সিটি প্রথমার্ধের ৬৭% সময়ে বল দখলে রাখলেও পরিস্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারাও। তবে প্রথমার্ধের শেষের দিকে গোলের ভালো একটা সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। বাঁ পাশ থেকে ফোডেনের ক্রস খুঁজে নিয়েছিলো জেসুসকে, এরপর জেসুস বল রিসিভ করে ভলি মেরেছেন বাইরে দিয়ে। আরেকবার ডি ব্রুইনের লং রেঞ্জের শট গিয়েছে বারের উপর দিয়ে। ম্যাচের প্রথম অর্ধে অন টার্গেটে দেখা মেলেনি একটি শটেরও। অবশ্য সেজন্য এডারসনকে পরীক্ষায় পড়তে না হলেও মেন্ডিকে পড়তে হয়েছে কয়েকবার। সে পরীক্ষায় সফল হয়ে মেন্ডিকে নিজের জাল দিয়ে বল জড়ানোর দৃশ্য দেখতে হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য চেলসির এই গোলরক্ষক দর্শকই বনে গিয়েছিলেন। জেসুসের শট ডিফ্লেক্টেড হয়ে জালে জড়িয়ে যাওয়াতে তাঁর কিছু করার ছিল না। জর্জিনহো পুরো সময়েই দুর্দান্তভাবে ডিফেন্স করে গেছেন, কিন্ত তাঁর দুর্ভাগ্য, শেষমেশ ডিবক্সে জেসুসের নেওয়া শট তাঁর গায়েই ডিফ্লেক্টেড হয়ে পৌছে যায় জালে। গোলটি ছিল এবারের প্রিমিয়ার লিগে ওপেন প্লে থেকে চেলসির হজম করা প্রথম গোল। ৫৩ মিনিটে সিটি সে গোলে এগিয়ে গেলে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়, উত্তেজনা বেড়ে যায় বহুগুণে। এর কয়েক মিনিট পরেই অবশ্য ব্যবধান বাড়িয়েই ফেলেছিলো সিটি। বাঁ প্রান্ত থেকে নেওয়া গ্রিলিশের ডান পায়ের শট মেন্ডির হাতের ছোয়ায় একটুর জন্য চলে যায় বাইরে। প্রায় একইভাবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গ্রিলিশ একটা শট নিয়েছিলেন, সেটি অবশ্য তিনি অন টার্গেটে রাখতে পারেননি। তবে প্রথমার্ধে বেশ কয়েকবার কর্নার আদায় করে নিয়েছিলেন এই ইংলিশ ফুটবলার।
দ্বিতীয়ার্ধের শেষের দিকে গোলেরও দেখা পেয়ে যেতে পারতেন। আরেক ইংলিশম্যান ফোডেনের দারুণ এক থ্রু বল পেয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন, তবে মেন্ডিকে পারেননি তিনি পরাস্ত করতে। পুরো ম্যাচেই দুর্দান্ত ছিলেন এদুয়ার্দো মেন্ডি। তবে শেষমেশ তাকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে নিরাশ হয়ে। পিছিয়ে পড়ার পর চেলসি আক্রমণে মনযোগী হয়ে গোলের সম্ভাবনাও জাগিয়ে তুলেছিলো অনেকবার। তবে শেষ পর্যন্ত কোনমতোই তারা পারেনি বল সিটির জালে জড়াতে। ঘরের মাঠ থেকে তাদের তাই ফিরতে হয়েছে খালি হাতেই। স্টামফোর্ড ব্রিজে এসে গার্দিওলার সিটি পুরো তিন পয়েন্ট নিয়েই ফিরছে।
অন্যদিকে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে ম্যান ইউনাইটেডের ম্যাচে ৮৭ মিনিট পর্যন্ত ছিল গোলশূন্য সমতা। এরপর হজের গোলে পিছিয়ে যায় ইউনাইটেড। কিন্তু খানিক পরেই ওল্ড ট্রাফোর্ডে সমতা ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যায় ইউনাইটেড। পেনাল্টি পেয়ে যায় তারা, কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি ব্রুনো ফার্নান্দেজ। নিজেদের মাঠে মৌসুমের প্রথম হারের স্বাদ নিতে হলো রোনালদোদের।