রয়-উইলিয়ামসনে আটকে গেল মোস্তাফিজদের রাজস্থান
গ্রুপ পর্ব, দুবাই (টস- রাজস্থান/ ব্যাটিং)
রাজস্থান রয়্যালস ১৬৪/৫, ২০ ওভার (স্যামসন ৮২, জাইসওয়াল ৩৬, লোমরোর ২৯*, কৌল ২/৩৬, ভুবনেশ্বর ১/২৮, সন্দ্বীপ ১/৩০)
সানরাইজারস হায়দ্রাবাদ ১৬৭/৩, ১৮.৩ ওভার (রয় ৬০, উইলিয়ামসন ৫১*, অভিষেক ২১*, মোস্তাফিজ ১/২৬ , লোমরোর ১/২২, সাকারিয়া ১/৩২ )
হায়দ্রাবাদ ৭ উইকেটে উইকেটে জয়ী
টুর্নামেন্ট থেকে ইতোমধ্যে ছিটকে যাওয়া সানরাইজারস হায়দ্রাবাদের কাছে হেরে গেছে রাজস্থান রয়্যালস। সাঞ্জু স্যামসনের ৫৭ বলে ৮২ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংসে হায়দ্রাবাদকে ১৬৫ রানের লক্ষ্য বেঁধে দিলেও জেসন রয়ের ৪২ বলে ৬০ রানের ইনিংসে দারুণ সূচনা পায় হায়দ্রাবাদ। মোস্তাফিজুর রহমানের আঁটসাঁট বোলিংয়ে এরপর রাজস্থান ম্যাচে ফিরলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ৪১ বলে ৫১* রানের ইনিংস খেলে ৭ উইকেটের জয় নিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন।
১৬৫ রানের লক্ষ্যে ডেভিড ওয়ার্নারের পরিবর্তে প্রথমবারের মত এবারের আইপিএলে নামা জেসন রয়কে নিয়ে উড়ন্ত সূচনা করেন ঋদ্ধিমান সাহা। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে মাহিপাল লোমরোরকে আক্রমণে আনার ফাটকাটা লেগে যায় প্রথম বলেই, বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে পুরোপুরি মিস করে ১১ বলে ১৮ রান করে স্টাম্পড হয়ে ফেরেন সাহা। তারপরেও পাওয়ারপ্লেতে হায়দ্রাবাদ তুলে ৬৩ রান।
অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে সঙ্গী করে এরপর রয় রীতিমত ছুটছিলেন। রাহুল তেওয়াতিয়ার করা ঘটনাবহুল ১১তম ওভারে চার মেরে ৩৬ বলে তিনি পূর্ণ করেন ফিফটি। ২১ রান তোলা ঐ ওভারেরই পঞ্চম বলে জাইসওয়ালকে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান তিনি। জীবন পেলেও তা বেশিক্ষণ অবশ্য কাজে লাগানোর সুযোগ পাননি, ফিরে যান পরের ওভারেই। চেতন সাকারিয়াকে স্কুপ করতে গেলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার ৪২ বলে ৬০ রানের ইনিংস। গুরুত্বপূর্ণ সেই উইকেট হারানোর চাপকে কাজে লাগিয়ে পরের ওভারে আক্রমণে এসেই আরও একটি উইকেটের পতন ঘটান মোস্তাফিজ। মাত্র ৫ রান দিয়ে ঐ ওভারের শেষ বলে ফেরান উইকেটে নবাগত প্রিয়াম গার্গকে।
সেখান থেকেই জয়ের দিকে ছুটতে থাকা হায়দ্রাবাদের লাগাম টেনে ধরে রাজস্থান। পরের চার ওভারে আসে ২১ রান, যার মধ্যে মোস্তাফিজের করা ১৭তম ওভারে আসে মাত্র ৪ রান। তবে উইকেটে ছিলেন অভিজ্ঞ অধিনায়ক উইলিয়ামসন, উইকেটে নবাগত অভিষেক শর্মাও তাকে দিয়েছন যোগ্য সঙ্গ। মাথা ঠাণ্ডা রেখে মোস্তাফিজের শেষ ওভারে টানা দুই চারে নিজের ফিফটি পূর্ণ করার পাশাপাশি কোনও বিপদ ঘটতে না দিয়ে নিশ্চিত করেন জয়। ৫১ রানে অপরাজিত থেকে ১৬ বলে ২১ রানে অপরাজিত অভিষেককে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন তিনি, ভেস্তে দেন মোস্তাফিজদের প্রচেস্টা।
টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে প্রথম ওভারেই ১১ রান দিয়ে শুরু করলেও পরের ওভারেই উইকেট খুইয়ে বসে রাজস্থান। ভুবনেশ্বর কুমার সেই ওভারে এভিন লুইসকে ফেরান, দেন উইকেট মেইডেন। সেই ওভারের ধাক্কা সামলে আরেক ওপেনার ইয়াশাসভি জাইসওয়ালকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান অধিনায়ক স্যামসন। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ১২ রান তুলে ঐ এক উইকেটের বিনিময়ে পাওয়ারপ্লেতে রাজস্থান তোলে ৪৯ রান।
জুটির সংগ্রহ ৫০ পেরুনোর একটু পরেই অবশ্য তা ভেঙে যায়। সন্দ্বীপ শর্মার বল স্টাম্পে ডেকে এনে ২৩ বলে ৩৬ রান করে ফিরে যান জাইসওয়াল। ভালো শুরুর পরে মাঝের ওভারগুলোতে খেই হারিয়ে ফেললেও উইকেটে ছিলেন স্যামসন। ততক্ষণে থিতু হয়ে যাওয়া স্যামসন গিয়ার পাল্টান জেসন হোল্ডারের করা ১৫তম ওভারে ১০ রান নিয়ে। সিদ্ধার্থ কৌলের করা ১৬তম ওভারে তো এক চার দুই ছয়ে নিয়ে বসেন ২০ রান। ঐ ওভারেই ৪১ বলে তিনি পূর্ণ করেন তার ফিফটি।
স্যামসন ছুটলেও আরেক প্রান্তে থাকা মাহিপাল লোমররকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল বাউন্ডারির খোঁজে। হোল্ডারের বলে তো একবার জীবনও পেয়ে যান তিনি। স্যামসনের ওপর চড়াও হওয়ার চাপ ক্রমাগত বাড়তে থাকলে সেটাই কাজে লাগিয়ে দারুণ শেষ ওভার করেন কৌল। মাত্র চার রান দিয়ে তিনি ফেরান স্যামসন ও রিয়ান পরাগকে। তার ফুল লেংথের বল মাঠছাড়া করতে গিয়ে হোল্ডারের ক্যাচের শিকার হয়ে ফেরেন স্যামসন। প্রথম বলেই এরপর পরাগ ফিরলে তারপর আরও একবার জীবন পান লোমরোর। তবে তিনি ২৮ বলে ২৯ করে অপরাজিত থাকায় রাজস্থান গিয়ে থামে ১৬৪ রানে। এক অধিনায়কের ইনিংস টপকে আরেক অধিনায়কের ফিফটিতেই মোস্তাফিজদের প্রচেষ্টা ম্লান করে দিয়ে সেই সংগ্রহ পরে টপকে যায় হায়দ্রাবাদ।