• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    পান্ডিয়া-পোলার্ডে ভর করে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখল মুম্বাই

    পান্ডিয়া-পোলার্ডে ভর করে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখল মুম্বাই    

    গ্রুপ পর্ব, আবু ধাবি, (টস- মুম্বাই/ বোলিং)

    পাঞ্জাব কিংস ১৩৫/৬, ২০ ওভার (মার্করাম ৪২, হুদা ২৮, বুমরাহ ২৪/২, পোলার্ড ৮/২)

    মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ১৩৭/৪, ১৯ ওভার (সৌরভ তিওয়ারি ৪৫, হার্দিক ৪০, বিশ্নয় ২৫/২)

    মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ৬ উইকেট জয়ী


    দুদলের জন্যই ম্যাচটা পরোক্ষভাবে ছিল বাঁচা-মরার। সে ম্যাচে পাঞ্জাবের সাবধানী শুরুর পর হঠাৎ করেই এক ওভারেই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। এমন একটি ওভার অবশ্য তারা ফিরিয়ে দিতে পারে মুম্বাইকেও। তবে এক ওভারেই দুই উইকেট হারানোর পর মার্করামের ৪২ রানের ইনিংসে পাঞ্জাব খেলায় ফিরলেও শেষের দিকে মুম্বাইয়ের দুর্দান্ত বোলিংয়ে তারা থেমে যায় ১৩৫ রানেই। মুম্বাইও এক ওভারের মধ্যেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়লেও সৌরভ তিওয়ারির ৪৫ রানের ইনিংসের পর শেষের দিকে হার্দিক-পোলার্ডের সৌজন্যে তারা শেষ পর্যন্ত এক ওভার হাতে রেখেই জিতে নিয়েছে ম্যাচ।

    গেল ম্যাচে ১২৫ ডিফেন্ড করার সুখস্মৃতি আছে পাঞ্জাবের। তবে মুম্বাইকে আজ ১৩৫ রানে রুখতে হলে দরকার ছিল শুরুতেই উইকেট। তৃতীয় ওভারেই সেই প্রথম উইকেটের দেখা পেয়ে যায় তারা। বিশ্নয়ের গুগলি মিড অনের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে ধরা খেয়ে যান রোহিত। ৮ রানে অধিনায়ককে হারিয়ে চাপে পড়ার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলা মুম্বাই মহাবিপদেই পড়ে যায় পরের বলেই সুর্যকুমারকে হারিয়ে। চার ম্যাচ ধরে সুর্যকুমারের ব্যাটে দুই অঙ্কের রান আসেনি, আজ বিশ্নয়ের গুগলি মিস করে বোল্ড হয়ে গেছেন রানের খাতা খুলবার আগেই। 

    এর আগে আইপিএলে পাওয়ারপ্লেতে কখনোই উইকেট না পাওয়া বিশ্নয়ের এক ওভারেই দুই উইকেটে মুম্বাই পড়ে যায় ভীষণ চাপে। ডি ককের সাথে সৌরভ তিওয়ারি মিলে তা ভালোভাবেই সামলেছেন এরপর। তবে প্রথম ৯ ওভারে ৮ রানের বেশি মাত্র একটি ওভারেই নিতে পেরেছিলো মুম্বাই। রান না দিয়ে খেলার মাঝ থেকে দূরে না গেলেও পাঞ্জাবের দরকার ছিল উইকেট। তাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিলো তিওয়ারি-ডি ককের পার্টনারশিপ। ১০ম ওভারে এরপর ৪১ রানের সে জুটি ভেঙ্গেই যায় শেষমেশ। 

    ২৯ বলে ২৭ রানে ডি কক ফিরলেও অপর প্রান্তে থাকা তিওয়ারি আস্কিং রেট নাগালের বাইরে যেতে দিচ্ছিলেন না। কিন্ত পাঁচ ওভারে যখন তাদের লাগত ৪৪, তখন এলিস এসে স্লোয়ারের মুন্সিয়ানায় রান দেন মাত্র ৪, সাথে ৩৭ বলে ৪৫ রান করা তিওয়ারিকেও ফিরিয়ে দেন প্যাভিলিয়নে। তবে পরের ওভারেই শামির ছয় বলের মধ্যে দুটিতে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে হার্দিক মোট ১১ রান আনেন। কিন্ত পরের ওভারে আর্শদিপের ওয়াইড ইয়র্কার করা তিন বলে রান নিতে পারেন মাত্র ১। অপর প্রান্তে নীরব থাকা পোলার্ড স্ট্রাইকে গিয়ে এরপর চার-ছয় মেরে খেলা নিয়ে আসেন দুই ওভারে ১৬ রানের সমীকরণে। দুই চার ও এক ছক্কায় শামির এক ওভারেই যা নিয়ে আসেন হার্দিক। ৮ রানে আর্শদিপের অফ কাটারে হার্দিকের ক্যাচ উঠেছিল পয়েন্টে, লাফ দিয়ে তা মুঠোয় বন্দী করতে পারেননি ব্রার। হার্দিক সেই জীবন কাজে লাগালেন পুরোপুরিভাবেই।

    আগারওয়ালের ইনজুরি এ ম্যাচে সুযোগ করে দিয়েছিল মান্দিপকে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিংয়ে রাহুলের সাথে দুজনে শুরুটাও করেছিলেন সাবধানী। পাঁচ ওভার শেষে উইকেটশূন্য থেকে রান তুলেছিলেন ৩৫। কিন্ত পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারেই সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন মান্দিপ। ১৫ রানে মান্দিপের উইকেট হারিয়ে পাঞ্জাব পাওয়ারপ্লে শেষ করে ৩৮ রানে। কিন্ত এর পরের ওভারেই শুরু হয় পাঞ্জাবের শনির দশা। পোলার্ডের স্লোয়ারে লং অন পার করতে পারেননি ক্রিস গেইল, ১ রানে গেইলের ফেরার পর সে ওভারেই আরেকটি ধীরগতির বলে ধোঁকা খেয়ে টাইমিংটা ঠিকঠাক করতে পারেননি রাহুল। বিপদের তখনও বাকি, পরের ওভারেই বুমরাহর লো ফুলটসে এলবিডব্লিউ হয়ে পুরানও আউট হয়ে যান ২ রানে। ৩৮/১ স্কোর থেকে পাঞ্জাবের স্কোর মূহুর্তেই হয়ে যায় ৪৮/৪। 

    বাঁচা-মরার এ ম্যাচে পাঞ্জাবকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব তখন পড়ে হুদা ও মার্কারমের উপর। দুজনে অন্ধকার দেখা পাঞ্জাবকে আলো দেখাতে শুরু করেন। নিয়মিত স্ট্রাইক রোটেশনের পাশাপাশি সুযোগ পেলেই বাউন্ডারিও খুঁজে নিচ্ছিলেন দুজনে। পুরানের উইকেট হারানো অষ্টম ওভারের পরের ৬ ওভারে তারা আনেন ৪০ রান। এরপর ১৫তম ওভারেই বোল্টের ওভারে ১৫ রান এনে যখন পাঞ্জাব ভালো লক্ষ্যের দিকে চোখ রাখছিল, আগের বলেই চার মেরে রাহুলের ফুল লেংথের পরের বল সুইপ করতে গিয়ে মিস করে বোল্ড হয়ে যান মার্করাম। 

    র্করাম আউট হলে ভাঙ্গে তাদের ৬১ রানের জুটি।  তখনও সেট হয়ে ক্রিজে ছিলেন হুদা, তবে এরপর পাঞ্জাবের যে চাওয়া তার কাছে, তা তিনি পুরণ করতে পারেননি। ২৬ বলে ২৮ রানে হুদা আউট হয়ে গেছেন ওয়াইড লং অনে ক্যাচ দিয়ে। মার্করামের মারা সে বাউন্ডারির পর ইনিংসের শেষ ২৯ বলে কোনও বাউন্ডারিই পায়নি পাঞ্জাব। শেষ পাঁচ ওভারে পাঞ্জাব তুলতে পারে মাত্র ৩০ রান। তাদের পুঁজি তাই ১৩৫ রানের বেশি হতে পারেনি। হার্দিক-তিওয়ারিরা এরপর প্রমাণ করলেন, তাদের আটকানোর জন্য যা আসলে যথেষ্ট হয়নি।