• আইপিএল ২০২১
  • " />

     

    জাইসওয়াল-দুবে ঝড়ে ম্লান হয়ে গেল গায়কোয়াড়ের প্রথম আইপিএল সেঞ্চুরি

    জাইসওয়াল-দুবে ঝড়ে ম্লান হয়ে গেল গায়কোয়াড়ের প্রথম আইপিএল সেঞ্চুরি    

    গ্রুপ পর্ব, আবু ধাবি (টস- রাজস্থান/ বোলিং)
    চেন্নাই সুপার কিংস ১৮৯/৪, ২০ ওভার (গায়কোয়াড় ১০১*, জাদেজা ৩২*, ডু প্লেসি ২৫, তেওয়াতিয়া ৩/৩৯, সাকারিয়া ১/৩১ )
    রাজস্থান রয়্যালস ১৯০/৩, ১৭.৩ ওভার (দুবে ৬৪*, জাইসওয়াল ৫০, স্যামসন ২৮, শার্দুল ২/৩০, আসিফ ১/১৮)
    ফলাফল: রাজস্থান ৭ উইকেটে জয়ী

     
    রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের প্রথম আইপিএল সেঞ্চুরি ম্লান করে দিয়ে ইয়াশাসভি জাইসওয়াল ঝড়ের পরে শিভাম দুবের আইপিএল সর্বোচ্চ ইনিংসে দারুণ জয়ে প্লেঅফের দৌড়ে টিকে থাকল রাজস্থান রয়্যালস। ইনিংসে ব্যাট ক্যারি করে গায়কোয়াড় ৬০ বলে ১০১* রানের ইনিংস খেলে চেন্নাইকে নিয়ে গিয়েছিলেন ১৮৯ রানে। বড় লক্ষ্যতাড়ায় ইয়াশাসভি জাইসওয়াল-এভিন লুইসের ওপেনিং জুটির তান্ডবের পরে পাওয়ারপ্লেতে ৮১ রান এলে সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে ৪২ বলে ৬৪* রানের ইনিংস খেলে রাজস্থানকে ৭ উইকেটের জয় এনে দেন দুবে।

    জয়ের কোনও বিকল্প এদিন ছিলই না রাজস্থানের সামনে। তবে জাইসওয়াল- লুইস জুটির শুরুটা খানিকটা অপ্রত্যাশিতই। যেই বোলারই আক্রমণে এসেছে তাকেই একহাত নিয়েছেন দুই ওপেনার। বিশেষ করে জাইসওয়াল তো রুদ্রমূর্তি ধারণ করে জশ হেজলউডের করা ৫ম ওভারে তিন ছয় এক চারে নেন ২২ রান। ঐ ওভারে ছয় দিয়েই ১৯ বলে পূর্ণ করেন নিজের ফিফটি, যা এবারের আসরের দ্বিতীয় দ্রুততম। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে অবশ্য বাউন্সারের জালে ফেলে ১২ বলে ২৭ রান করা লুইসকে ফেরান শার্দুল ঠাকুর।

    পাওয়ারপ্লে শেষে প্রথম বলেই আক্রমণে এসে জাইসওয়াল ঝড় থামান কেএম আসিফ। উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে এই ওপেনার করেন ২১ বলে ৫০ রান। তবে শিভাম দুবেকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। নিজে প্রান্ত বদলের দায়িত্ব নিয়ে দুবেকে বুঝিয়ে দেন আক্রমণের দায়িত্ব। তারই সুবাদে দ্রুতই দুবে নিজের আইপিএল সর্বোচ্চ রান টপকে যান, পরের ওভারে ৩১ বলে পূর্ণ করেন নিজের প্রথম আইপিএল ফিফটি।

    জয়ের জন্য যখন ২০ রান প্রয়োজন তখনই স্যামসনকে ফেরান শার্দুল ঠাকুর। নিখুঁত পুল করলেও ডিপ স্কোয়ারে গায়কোয়াড়কে খুঁজে নিয়ে ২৪ বলে ২৮ রান করে ফেরেন রাজস্থান অধিনায়ক। পরে প্রথমবারের মত আইপিএলে নামা গ্লেন ফিলিপ্স দুবের সাথে জুটি বেঁধে স্যাম কারানের ওভারে ১৭ রান নিলে অনায়াসে লক্ষ্য পেরিয়ে যায় রাজস্থান, সেটাও ১৫ বল হাতে রেখে।  

    এর আগে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা চেন্নাই ওপেনিং জুটির শুরুটাও হয় বরাবরের মতই ভালো। কোনও উইকেট না হারিয়ে রুতুরাজ গায়কোয়াড়-ফাফ ডু প্লেসি জুটি পাওয়ারপ্লেতে তুলে ফেলেন ৪৪ রান।

    পাওয়ারপ্লের পরের ওভারে আক্রমণে এসেই ২৫ রানে থাকা ডূ প্লেসিকে ফিরিয়ে ওপেনিং জুটি ভাঙেন রাহুল তেওয়াতিয়া। নিজের পরের ওভারেই ফেরান সুরেশ রায়নাকেও। মইন আলিকে নিয়ে এরপর অবশ্য গায়কোয়াড় শক্তভাবেই এগিয়ে নিয়ে যান দলকে, ৪৩ বলে পূর্ণ করেন নিজের ফিফটি। নিজের শেষ ওভার করতে এলে তেওয়াতিয়াকে দুই ছয়ে স্বাগত গায়কোয়াড় তাকে স্বাগত জানালে এক বল পরেই ঘুরে দাঁড়িয়ে তিনি ফেরান মইনকে। বেরিয়ে এসে খেলতে গেলে ১৭ বলে ২১ করে স্টাম্পড হয়ে ফিরে যান মইন।

    কিছুক্ষণ পরেই চেতন সাকারিয়ার শিকার হয়ে ২ রানে আম্বাতি রায়ুডু ফিরে গেলেও অন্য প্রান্তে ততক্ষণে গিয়ার বদলে ফেলেন গায়কোয়াড়। উইকেটে এসে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে রবীন্দ্র জাদেজাও ছেড়ে কথা বলেননি। ৫ রান দিয়ে শুরু করা মোস্তাফিজুর রহমানের ওপর দিয়ে মূলত গিয়েছে দুজনের ঝড়। ১৮তম ওভারে ১৪ রান আর শেষ ওভারে ২২ রান দেন মোস্তাফিজ। ভুলে যাওয়ার মত একটা দিনে মোস্তাফিজ চার ওভারের কোটা পূর্ণ করে গোনেন ৫১ রান। ইনিংসের শেষ বলে দারুণ ছয় মেরে ৬০ বলে গায়কোয়াড় পূর্ণ করেন নিজের প্রথম আইপিএল সেঞ্চুরি। পুরো ইনিংস জুড়ে থাকা গায়কয়াড়ের সাথে ১৫ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থেকে জাদেজা শেষ ৫ ওভারে তোলেন ৭৩ রান, চেন্নাই গিয়ে থামে ১৮৯ রানে।          

    দিনশেষে দুই তরুণ জাইসওয়াল ও দুবের তান্ডবে অনায়াসে সেই লক্ষ্য পেরিয়ে যাওয়ার সুবাদে পয়েন্ট তালিকায় মুম্বাইকে টপকে ছয়ে উঠে এসেছে রাজস্থান। সেই সাথে টিকিয়ে রেখেছে নিজেদের প্লেঅফের আশা।