ধাওয়ান-হেটমেয়ারে চেন্নাইকে হারিয়ে সবার ওপরে দিল্লি
গ্রুপ পর্ব, দুবাই (টস- দিল্লি/ বোলিং)
চেন্নাই সুপার কিংস ১৩৬/৫, ২০ ওভার (রায়ুডু ৫৫*, উথাপ্পা ১৯, ধোনি ১৮, অক্ষর ২/১৮, আশ্বিন ১/২০, আভেশ ১/৩৫)
দিল্লি ক্যাপিটালস ১৩৯/৭, ২০ ওভার (ধাওয়ান ৩৯, হেটমায়ার ২৮*, রিপল ১৮, শার্দুল ২/১৩, জাদেজা ২/২৮, হেজলউড ১/২৭)
ফলাফল: দিল্লি ৪ উইকেটে জয়ী
পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দলের লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসল দিল্লি ক্যাপিটালস। আম্বাতি রায়ুডু ৫৫ রানে অপরাজিত থাকলেও দিল্লি ক্যাপিটালসের বোলারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় চেন্নাই সুপার কিংস তুলতে পারে ১৩৬ রান। শিখর ধাওয়ানের ৩৯ রানের পর মাত্র ১৩ রান দিয়ে দুই উইকেট নিয়ে শার্দুল ঠাকুর চেন্নাইকে ম্যাচে ফেরালেও শিমরন হেটমায়ারের ১৮ বলে ২৮* রানে ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে দিল্লি, ফিরেছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।
১৩৭ রানের লক্ষ্যে তৃতীয় ওভারেই দীপক চাহারের শিকার হয়ে ১৮ রান করে ফিরে যান পৃথ্বী শ। সেই চাহারের ওপরেই চড়াও হয়ে দুই চার আর দুই ছয়ে তার পরের ওভারে আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান নেন ২১ রান। জশ হেজলউডের পরের ওভারে এরপর উইকেটে নবাগত স্রেয়াশ আইয়ার দুই রান করে ফিরলে পাওয়ারপ্লেতে দিল্লি তোলে ৫১ রান।
ধাওয়ানের সাথে যোগ দিয়ে অধিনায়ক ঋশাভ পান্ট তার জন্মদিনে বিশেষ কোনও ইনিংস খেলবেন ভেবেই হয়ত নেমেছিলেন। সেই লক্ষ্যে নিজের স্বভাবজাত খেলা খেলতে গিয়ে রবিন্দ্র জাদেজাকে চার মারার পরে আবারও শট খেলতে গেলে টপ এজ হয়ে মইন আলির হাতে ক্যাচ দিয়ে ১২ বলে ১৫ রান করে ফেরেন তিনি। তা সত্ত্বেও ১২ ওভারে ৮৮ রান তুলে রিপল পাটেলকে নিয়ে জয়ের দিকে শক্তভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন ধাওয়ান।
১৩তম ওভারে জাদেজা তার কোটা পূর্ণ করতে এসে ১৮ রানে থাকা রিপলকে ফেরান। ৩ রান দিয়ে শুরু করা শার্দুল ঠাকুর এরপর আবারও আক্রমণে এসে প্রথম বলেই ফেরান রবিচন্দ্রন আশ্বিনকে। এক বল পরেই ধাওয়ানের বিপক্ষে ক্যাচের সিদ্ধান্ত গেলে সেই যাত্রায় রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। কিন্তু এক বল পরেই শেষ হাসি হাসেন ঐ শার্দুল, কাভারে মইনের তালুবন্দি করে ৩৫ বলে ৩৯ রান করা ধাওয়ানকে ফেরান। ঐ দুই উইকেটের বিনিময়ে মাত্র ১৩ রান দিয়ে ম্যাচে প্রাণ ফিরিয়ে আনেন শার্দুল।
দিল্লির ওপর চেন্নাই বোলাররা চেপে বসলে শেষ তিন ওভারে জয়ের সমীকরণ হয়ে দাঁড়ায় ২৮ রান। ১৮তম ওভারে ডোয়াইন ব্রাভো আক্রমণে এলে তাকে আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে চার মারেন শিমরন হেটমায়ার। এরপর তার লো ফুল টস মাঠছাড়া করতে গেলে লং অনে সহজ ক্যাচ তুলে দেন। কিন্তু বদলি ফিল্ডার কৃষ্ণাপ্পা গৌতম তার ক্যাচ ফেলে দিলে সেখানে চেন্নাইয়ের সুযোগ কার্যত শেষ হয়ে যায়। ম্যাচ শেষ ওভারে গড়ালে অদ্ভুত এক ওয়াইড দেওয়ার পরে ব্রাভো ফেরান অক্ষরকে। তবে ২৮ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন হেটমায়ার।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা চেন্নাইয়ের শুরুটা হয় স্বভাববিরুদ্ধ। আনরিখ নরকিয়ার করা প্রথম ওভারেই দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত দেওয়া হলে সেই যাত্রায় রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। তৃতীয় ওভারে আক্রমণে এসে অপর প্রান্তে থাকা ফাফ ডু প্লেসিকে ১০ রানে ফেরান অক্ষর পাটেল। পঞ্চম ওভারে সেই নরকিয়ার শিকার হয়েই ১৩ রান করে ফেরেন গায়কোয়াড়ও। ঐ দুই উইকেট হারিয়ে চেন্নাই পাওয়ারপ্লেতে তোলে ৪৮ রান।
এরপর অষ্টম ওভারে আক্রমণে ফিরে ৫ রানে থাকা মইন আলিকে ফেরান অক্ষর। এদিন প্রথম নামা রবিন উথাপ্পা উইকেটে সময় নিয়ে হাত খোলার আগেই পরের ওভারে রবিচন্দ্রন আশ্বিনের শিকার হয়ে সমানসংখ্যক বলে ১৯ রান করে ফেরেন। ১০ ওভারে ৬৯ রান তুলতে সক্ষম চেন্নাইকে এরপর এগিয়ে নিয়ে যান আম্বাতি রায়ুডু ও মহেন্দ্র সিং ধোনি।
মাঝের ওভারগুলোতে এই জুটির ওপর কাগিসো রাবাদার সাথে জুটি বেঁধে অক্ষর যেই চাপ তৈরি করেছিলেন সেটা থেকে দুজনের বেরিয়ে আসতে বেশ বেগ পেতে হয়। শেষ দিকে গিয়ে নরকিয়া আর আভেশের ওভার থেকে রায়ুডু বাউন্ডারি বের করতে পারলেও খোলস থেকে বের হতেই পারছিলেন না ধোনি। নরকিয়ার করা ১৯তম ওভারের শেষ বলে চার মেরে ৪০ বলে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন রায়ুডু। তবে আভেশের করা শেষ ওভারের প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ২৭ বলে ১৮ রান করে কোনও বাউন্ডারি ছাড়াই ফেরেন ধোনি। ঐ ওভারে মাত্র ৪ রান এলে চেন্নাই গিয়ে থামে ১৩৬ রানে, রায়ুডু অপরাজিত থাকেন ৫৫ রানে। শেষ বলে গড়ানো ম্যাচে সেই লক্ষ্য টপকে গিয়ে অধিনায়কের জন্মদিনে জয় উপহার দিতে সক্ষম হয়ে দিল্লি। পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধারে পান্টের মুখের হাসিটাও আরও চড়া হওয়ার কথা।