মোস্তাফিজদের হারিয়ে প্লে অফ প্রায় নিশ্চিত করে ফেলল সাকিবের কলকাতা
গ্রুপ পর্ব, শারজাহ (টস- রাজস্থান/ বোলিং)
কলকাতা নাইট রাইডারস ১৭১/৪, ২০ ওভার (গিল ৫৬, আইয়ার ৩৮, ত্রিপাঠি ২১, তেওয়াতিয়া ১/১১, সাকারিয়া ১/২৩, মরিস ১/২৮)
রাজস্থান রয়্যালস ৮৫, ১৬.১ ওভার (তেওয়াতিয়া ৪৪, দুবে ১৮, উনাদকাট ৬, মাভি ৪/২১, ফার্গুসন ৩/১৮, সাকিব ১/১)
ফলাফল: কলকাতা ৮৬ রানে জয়ী
রাজস্থান রয়্যালসকে প্লেঅফের দৌড় থেকে ছিটকে দিয়ে দাপুটে জয়ে প্লেঅফে এক পা দিয়ে রাখল কলকাতা নাইটরাইডারস। শুবমন গিলের ৫৬ ও ভেঙ্কটেশ আইয়ারের ৩৮ রানে শারজাহতে ১৭১ রানের বড় সংগ্রহ। বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেও মোস্তাফিজুর রহমান এদিন উইকেটশূন্য থাকলেও রাজস্থান ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেটের দেখা পান সাকিব আল হাসান। সাকিবের এনে দেওয়া শুরুর পরে শিভাম মাভির ৪ ও লকি ফার্গুসনের ৩ উইকেটে কলকাতা পেয়েছে ৮৬ রানের বিশাল জয়।
-
জয় ছাড়া রাজস্থানের আর বিকল্প ছিল না, রান রেট বাড়াতে লক্ষ্যতাড়া হতে হত দ্রুতগতিতে। তবে সাকিব আল হাসানের করা প্রথম ওভারেই ইয়াশাসভি জাইসওয়াল রানের খাতা খোলার আগেই স্টাম্প খুইয়ে বসেন। মাত্র ১ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে সাকিব যে পথটা দেখালেন কলকাতার সব বোলারই এরপর হাটে সেই পথেই। পরের ওভারের প্রথম বলেই শিভাম মাভির শিকার হয়ে ফেরেন অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। বিপদ আরও বারে চতুর্থ ওভারে লকি ফার্গুসন আক্রমণে এলে। প্রথম বলেই এদিন ওপেন করতে নামা লিয়াম লিভিংস্টোনকে ফেরানোর পরে এদিন প্রথম নামা অনুজ রাওয়াতকেও ফেরান রানের খাতা খোলার আগেই। পাওয়ারপ্লে শেষে রাজস্থানের স্কোরবোর্ড বলছিল- ১৭/৪!
পাওয়ারপ্লের পরের ওভারে শিভাম দুবে ও গ্লেন ফিলিপস নারাইনকে দুই ছয়ে স্বাগত জানান। পরের ওভারে মাভির শিকার হয়ে এরপর ফিরে যান দুজনই। পরের ওভারে বরুন চক্রবর্তীর শিকার হয়ে ক্রিস মরিসও ফিরে গেলে রাজস্থানের ক্ষীণ সম্ভাবনাও সেখানেই কার্যত শেষ হয়ে যায়। জয়দেব উনাদকাটকে এক প্রান্তে রেখে রাহুল তেওয়াতিয়া কিছুটা লড়াইয়ের চেষ্টা করেন। ফার্গুসনের বলে সাকিবের ক্যাচের শিকার হয়ে অবশ্য কিছুক্ষণ পরেই ফিরে যান উনাদকাট। এরপরে সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউট হয়ে ফিরে যান চেতন সাকারিয়াও। পরের ওভারের প্রথম বলেই ৩৬ বলে ৪৪ রান করে তেওয়াতিয়া ৪৪ রান করে আউট হলে শেষ হয় রাজস্থানের দুর্বিষহ এক দিন।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামতে হলেও কলকাতার শুরুটা হয় ভালো। আইপিএলের দ্বিতীয় অধ্যায়ে শারজাহর উইকেটের আচরণ একেবারেই বিপরীতধর্মী হওয়াতেই সেটা মাথায় রেখে দুই ওপেনার রয়েসয়েই শুরু করেছিলেন। উইকেটের মূল্য বুঝে তেড়েফুঁড়ে ব্যাটিং না করে ধৈর্য ধরে এগিয়ে যাওয়ায় শুবমন গিল-ভেঙ্কটেশ আইয়ার জুটি পাওয়ারপ্লে তোলে ৩৪ রান।
পাওয়ারপ্লের পরে দুজন গিয়ার পাল্টানোর কথা ভাবায় দশম ওভারে জয়দেব উনাদকাটকে বড় দুই ছয় মারেন আইয়ার। সেই ধারা ধরে রাখতে গিয়ে রাহুল তেওয়াতিয়ার পরের ওভারে স্টাম্প খুইয়ে ৩৫ বলে ৩৮ রান করে ফেরেন আইয়ার। পরের ওভারে গ্লেন ফিলিপসকে আক্রমণে আনা হলে উইকেটে এসেই তার অপর চড়াও হন নিতিশ রানা। ঐ ওভারেই তাকে মাঠছাড়া করতে গিয়ে ১২ রানে ফেরেন রানা। পরের ওভারেই উইকেটে নবাগত রাহুল ত্রিপাঠিকে ফেরাতে পারতেন মোস্তাফিজুর রহমান। স্যামসন ঝাঁপিয়ে পরে ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় সেই যাত্রায় বেঁচে যান ত্রিপাঠি। তার কিছুক্ষণ পরে ৪০ বলে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন গিল।
ফিফটি পাওয়ার পরের ওভারেই এই দ্বিতীয় অধ্যায়ে ক্রিস মরিসের প্রথম শিকার হয়ে ৪৪ বলে ৫৬ রান করে ফেরেন গিল। একটু পরেই চেতন সাকারিয়ার বলে স্টাম্প খুইয়ে ১৪ বলে ২১ রান করে ফেরেন ত্রিপাঠি। ১৯তম ওভারে অইন মরগানের ব্যাটের কানা খুঁজে পেলেও এদিন নিজের কোটা করে উইকেটশূন্যই থেকে যান মোস্তাফিজ। মরিসের করা শেষ ওভারে মরগান ও দীনেশ কার্তিক মিলে ১৬ রান নিলে কলকাতা গিয়ে তাই থামে ১৭১ রানে। লক্ষ্য তাড়ায় এরপর তুরুপের তাসের মত রাজস্থান লুটিয়ে পড়লে রান রেট আরও বাড়িয়ে নেয় কলকাতা। সেই সাথে প্লেঅফের দরজায়ও কড়া নাড়তে শুরু করেছে তারা।