টেন্ডুলকার-ওয়ার্নকে মুগ্ধ করা সেই সাদিদের আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন
ফেসবুক-টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যারা একটু ঘোরাঘুরি করেন, ক্রিকেটের এক-আধটুও খবর রাখেন, তাদের অনেকেই দেখেছিলেন ভিডিওটা। খুদে একটা ছেলের লেগস্পিন জাদু বুঝতে পারছে না ব্যাটসম্যানরা, বিভ্রান্ত হচ্ছে গুগলিতে। আউট করে হাততালিতে উদযাপন করে মেতে উঠছে উদযাপনে। পেছনের চারপাশ খেয়াল করলে বোঝা যায়, এটি বাংলাদেশেরই কোনো এক জায়গা। কিন্তু সেই ভিডিও শুধু বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, সেটা পৌঁছে গেছে পুরো ক্রিকেটবিশ্বে। এমন দুজন সেই ভিডিও শেয়ার করেছেন, সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের ছোট্ট তালিকায়ও যারা থাকবেন। শচীন টেন্ডুলকার আর শেন ওয়ার্ন কারও প্রশংসায় পঞ্চমুখ হবেন, এমন তো প্রতিদিন ঘটে না!
ছেলেটার নাম আসাদুজ্জামান সাদিদ। নিবাস বরিশাল শহহরের মহাবাজ নাজির বাড়ি। বয়স মাত্র ছয়, সবে পা রেখেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কিন্তু এই বয়সেই সে ঘোল খাওয়ায় বয়সে বড় সব ব্যাটসম্যানকে। তার বোলিং অ্যাকশন একটু অন্যরকম। টার্নের সঙ্গে এই বয়সেই গুগলিটা শিখে ফেলেছে সে। ব্যাটসম্যানদের খাবি খাওয়ানোর এই ভিডিও দেখেই তেন্ডুলকার মুগ্ধ হয়ে বলেছেন, ক্রিকেটের প্রতি এই অল্প বয়সেই ছেলেটির নিবেদন দেখে তিনি আপ্লুত। টেন্ডুলকার শেওয়ার দেওয়ার পরেই সাদিদ হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ার সেনসেশন। এরপর আরও অনেক ক্রিকেটারই সেখানে মন্তব্য করেছেন। তবে লেগ স্পিনের শেষ কথা শেন ওয়ার্নের কাছেও পৌঁছে গেছে বিস্ময়বালক সাদিদ। টুইটারে ভিডিওটা পোস্ট করে ওয়ার্ন কমেন্ট করেছেন, ‘এই ছেলেটা তো দারুণ। কে এই ছেলেটা?’ এভাবেই বাংলাদেশের ছোট্ট সাদিদ রাতারাতি হয়ে গেছে সুপারস্টার।
বুধবার এই লেখকের সঙ্গে সাদিদের যখন কথা হচ্ছিল, তখন সাদিদ তার মামা সিরাজুল ইসলাম শুভর গা ঘেঁষে বসে। মুখে মুচকি হাসি, সেখানে সারল্যের সঙ্গে মিশে আছে খানিকটা কৌতূহল। সিরাজুল ইসলামই মূলত সাকিবের অভিভাবক বা কোচও। তার সঙ্গে মিলে আইপিএল দেখার সময়েই সাদিদের মাথায় আসে লেগ স্পিন করার কথা। রশিদ খানকে দেখেই সে শুরু করে বল করা, আর মামার পরামর্শ তো ছিলই। এভাবেই সাকিবের তূণে যোগ হয়েছে লেগ স্পিনার বা গুগলি। এর সঙ্গে ব্যাটিংটাও চালিয়ে যাচ্ছে সে। তার ব্যাটিংয়ের কিছু ভিডিওও ভাইরাল হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সাদিদের কাছে জানতে চাইলেমম, কে কে তার ভিডিও দেখেছে? সে গড়গড় করে বলল টেন্ডুলকার ও ওয়ার্নের কথা।
তবে সাদিদের একটা ইচ্ছা আছে। মিরপুরের মাঠে একদিন সে আসতে চায়, সাকিব আল হাসানের সাথে দেখা করতে চায়। বাংলাদেশ দলে সাকিবই তার আইডল। ছয় বছর বয়সী সাদিদ একদিন সাকিবের মতো খেলতে চায় জাতীয় দলে। তবে আপাতত সে বেড়ে উঠুক মনের আনন্দে, খেলাটা উপভোগ করতে করতে। সামনে তো সময় পড়েই আছে!