• পাকিস্তানের বাংলাদেশ সফর
  • " />

     

    শাদাব-নাওয়াজ ঝড়ে বাংলাদেশের মুঠো থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়ে সিরিজ শুরু করল পাকিস্তান

    শাদাব-নাওয়াজ ঝড়ে বাংলাদেশের মুঠো থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়ে সিরিজ শুরু করল পাকিস্তান    

    ১ম টি-টোয়েন্টি, মিরপুর (টস- পাকিস্তান/ বোলিং)
    বাংলাদেশ ১২৭/৭, ২০ ওভার (আফিফ ৩৬, মাহেদী ৩০*, নুরুল ২৮, হাসান ৩/২২, ওয়াসিম জুনিয়র ২/২৪, শাদাব ১/২০)
    পাকিস্তান ১৩২/৬, ১৯.২ ওভার (ফাখার ৩৪, খুশদিল ৩৪, শাদাব ২১* তাসকিন ২/৩১, মোস্তাফিজ ১/২৬, শরিফুল ১/৩১)

    ফলাফল: পাকিস্তান ৪ উইকেটে জয়ী

     

    নিজেদের শক্তিমত্তার প্রমাণ দিয়ে ৪ উইকেটের জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করল পাকিস্তান। ১৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর আফিফ হোসেন-নুরুল হাসান-মাহেদী হাসানে শেষ ১০ ওভারে ৮৭ রান তুলে ১২৭ রানের সংগ্রহের পর বোলিংয়েও শুরুটা দুর্দান্ত হয় বাংলাদেশের। ২৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ফাখার জামান-খুশদিল শাহ’র ৫৬ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানো পাকিস্তান এরপর বাংলাদেশের মুঠো থেকে জয় ছিনিয়ে নেয় শাদাব খান-মহাম্মদ নাওয়াজের ১৫ বলে ৩৬* রানের ঝড়ো জুটিতে।

    ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে সফল জুটির মিরপুরে পদার্পণের পর মুদ্রার উল্টো পিঠটা দেখতেও বেশি সময় লাগেনি। মোস্তাফিজুর রহমানের করা ৩য় ওভারেই ভেতরে ঢোকা বলে স্টাম্প খুইয়ে ফিরে যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। তাসকিন আহমেদের পরের ওভারে বল স্টাম্পে ডেকে এনে অধিনায়ক বাবর আজমও ধরেন প্যাভিলিয়নের পথ। রানের খাতা খোলার আগেই মাহেদী হাসানের শিকার হয়ে হায়দার আলী ফেরার পর শোয়েব মালিকও রান আউটের শিকার হয়ে ফিরলে পাওয়ারপ্লেতে গভীর সঙ্কটে পড়ে পাকিস্তান, তোলে মোটে ২৪ রান।

    দলকে খাদের কিনারা থেকে উদ্ধার করে এরপর দায়িত্বশীল জুটি গড়ে তোলেন ফাখার জামান-খুশদিল শাহ। জয়ের পথে দুজনেই শক্তভাবে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন; তবে হাত খোলার সময় এলেই তাসকিনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৩৬ বলে ৩৪ রান করে ফিরে যান ফাখার। এক ওভার পরে শরিফুল ইসলামের আঘাতে ৩৫ বলে ৩৪ রান করে খুশদিলও ফিরলে ম্যাচে ফিরে আসে বাংলাদেশ।

    তবে এরপর মোহাম্মদ নাওয়াজ-শাদাব খান জুটি যেই ধ্বংসযজ্ঞ চালালো সেটার বোধহয় কোনও আভাশ পায়নি বাংলাদেশ। শুরু থেকেই মারমুখী এই জুটি মোস্তাফিজের ১৮তম ওভারে দুই চার এক ছয়ে তোলে ১৫ রান। শরিফুল ইসলামের পরের ওভারে দুই ছয়ে সেই ১৫ রান এলে ম্যাচ কার্যত শেষ হয়ে গেলে তখন শেষ ওভারে প্রথম বারের মত আক্রমণে আনা হয় আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে। দুই রানের পুঁজি নিয়ে অনুমিতভাবেই শাদাবের কাছে ছয় খেলে সেখানেই শেষ হয় ম্যাচ। ১০ বলে ২১* রান করে শাদাব ও ৮ বলে ১৮* রান করে নাওয়াজ তাই দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে।

    এর আগে পাকিস্তান পেসারদের তোপে বিধ্বস্ত হয়ে যায় বাংলাদেশের টপ অর্ডার। দ্বিতীয় ওভারেই হাসান আলীর শিকার হয়ে মোহাম্মদ নাইম ফিরলে পরের ওভারেই মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়রের শিকার হয়ে ফিরে যান অভিষিক্ত সাইফ হাসানও। এক ওভার পরে সেই ওয়াসিমের কাছেই উইকেট খুইয়ে নাজমুল হোসেন শান্তও ফিরে গেলে পাওয়ারপ্লেতে মোটে ২৫ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ।

    আফিফ হোসেনকে নিয়ে এরপর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করলেও কিছুক্ষণ পরে নিজেই মোহাম্মদ নাওয়াজের বলে স্টাম্প খুইয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। সেই চাপে শাদাব খানের পরের ওভারটাতেও মেইডেন এলে ঘোর বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। পরের ওভারেই দুই ছয়ে পাল্টা আক্রমণে যান আফিফ, দুই ছয়ে তুলে নেন ১৫ রান। তবে ভালো শুরু করেও আরও একবার বড় ইনিংস গড়তে ব্যর্থ হন তিনি। শাদাব খানের বলে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে আফিফ থামেন ৩৪ বলে ৩৬ রান করে।

    ৬১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দিকভ্রান্ত বাংলাদেশের জন্য এরপর আলো হয়ে আসে নুরুল হাসান-মাহেদী হাসান জুটি। ৩ ওভারে মাত্র ৭ গোনা শাদাবের শেষ ওভারে তার ওপর চড়াও হয়ে চার-ছয়ে ১৩ রান তোলেন এই জুটি। হাসানের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ২২ বলে ২৮ রান করে এরপর নুরুল ফিরলেও শেষদিকে যেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু রান এসেছে মাহেদীর ব্যাট থেকে। মাঝে হাসানের ৩য় শিকার হয়ে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ফিরলেও হারিস রউফের শেষ ওভারে মাহেদী-তাসকিন আহমেদের দুই ছয়ে ১৫ রান তোলে বাংলাদেশ। ২০ বলে ৩০ রান করে অপরাজিত থেকে বাংলাদেশকে মাহেদী নিয়ে যান ১২৭ রান পর্যন্ত।